E-Paper

দুই বন্ধুর পরে রাহুলের ‘হাত’ ধরছেন প্রসেনজিৎ

জেএনইউ-এ সিপিআইয়ের ছাত্র সংগঠন এআইএসএফ করা যে তুখোড় বক্তাকে কাছে টেনে নিয়েছিলেন প্রসেনজিৎ, সেই পুরনো সতীর্থ কানহাইয়াই আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর কলকাতায় আসছেন তাঁকে কংগ্রেসের পতাকা ধরাতে।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৫:৩৭
নাগরিক অধিকার রক্ষা আন্দোলনের মঞ্চে প্রসেনজিৎ বসু।

নাগরিক অধিকার রক্ষা আন্দোলনের মঞ্চে প্রসেনজিৎ বসু। —নিজস্ব চিত্র।

সিপিআই ছেড়ে কানহাইয়া কুমার আগে গিয়েছেন। ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়ে গিয়েছেন আলি ইমরান রাম্জ (ভিক্টর)। এ বার যাচ্ছেন এক দশক আগে সিপিএম ছেড়ে আসা প্রসেনজিৎ বসু। কংগ্রেসের ঝুলিতে জমা হতে চলেছে আরও এক বামপন্থী মন! অন্য ভাবে বলতে গেলে, কংগ্রেসের পতাকার নীচে মিলে যাচ্ছেন তিন বন্ধু (বয়সের ফারাক থাকলেও)!

এই ত্রয়ীর মধ্যে প্রসেনজিতের যাত্রা একটু ভিন্ন, আরও একটু অন্য মাত্রার। সাম্প্রতিক কালের মধ্যে তিনিই একমাত্র, যিনি সিপিএম থেকে পদত্যাগের চিঠি পাঠিয়েছিলেন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী প্রণব মুখোপাধ্যায়কে সিপিএমের সমর্থন করার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে। দিল্লিতে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ( জেএনইউ) ছাত্র-রাজনীতি, এসএফআই হয়ে সিপিএমের কেন্দ্রীয় গবেষণা শাখার আহ্বায়ক ছিলেন। তার পরে প্রথাগত কোনও দলের ছাতা ছাড়া মাঝের সময়টায় জাতীয় নাগরিকপঞ্জি-বিরোধী যুক্ত মঞ্চ গড়ে গণ-আন্দোলনে সাধ্যমতো মানুষকে সংগঠিত করেছেন, রাস্তার ধুলো খেয়েছেন। প্রণব-পর্বে বিরোধিতা করে এখন রাহুল গান্ধীর অনুপ্রেরণায় সেই কংগ্রেসে যোগ দেওয়া প্রসেনজিতের ক্ষেত্রে এক রাজনৈতিক বৃত্ত সম্পূর্ণ হওয়াই বটে!

জেএনইউ-এ সিপিআইয়ের ছাত্র সংগঠন এআইএসএফ করা যে তুখোড় বক্তাকে কাছে টেনে নিয়েছিলেন প্রসেনজিৎ, সেই পুরনো সতীর্থ কানহাইয়াই আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর কলকাতায় আসছেন তাঁকে কংগ্রেসের পতাকা ধরাতে। সঙ্গে রাজ্যসভার সাংসদ সৈয়দ নাসের হুসেন, যিনি সেই আমলেই দিল্লিতে বাম ছাত্র সংগঠন করে এসেছেন। এই আনুষ্ঠানিকতার সলতে পাকানো অবশ্য শুরু হয়েছে আগেই। ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চ তৈরির পরে পরে এক বার ১০, জনপথে গিয়ে এবং গত লোকসভা ভোটের কাছাকাছি সময়ে আরও এক বার রাহুলের কাছে গিয়ে কথা বলে এসেছিলেন প্রসেনজিৎ। অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির (ওবিসি) জন্য সংরক্ষণে রাজীব গান্ধীর আপত্তির জায়গা থেকে বেরিয়ে রাহুল যে ভাবে জাত-গণনার জন্য সরব হয়েছেন, বিজেপির বিরুদ্ধে যে ভাবে সর্বস্ব পণ করে লড়ছেন, সে সব তাঁকে আকৃষ্ট করেছে। মাঝে সেতু হিসেবে থেকেছেন কানহাইয়া।

কংগ্রেস-প্রশ্নে এক কালে ‘বিদ্রোহী’ হয়ে আবার কংগ্রেসকেই বেছে নেওয়া? প্রসেনজিতের কথায়, ‘‘প্রথমত, দু’টো সময়ের পরিস্থিতি এক নয়। সেই বিরোধিতার নির্দিষ্ট কিছু কারণ ছিল। আর সব চেয়ে বড় কথা, দেশে ক্ষমতায় এসে বিজেপি সংবিধানটাকেই ধ্বংস করছে। এখন সংবিধান এবং ধর্মনিরপেক্ষতাকে রক্ষা করার লড়াইয়ে কংগ্রেসকেই সামনে রাখতে হবে। রাহুল গান্ধীর হাত শক্ত করতে হবে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘বামপন্থীরা যা বলেন, যে কাজ তাঁদের করার কথা, রাহুল পথে নেমে সেটাই করছেন।’’ কংগ্রেসে গিয়ে ভোটার তালিকার বিশেষ আমূল সংশোধনের (এসআইআর) প্রক্রিয়ায় সক্রিয় রাজনৈতিক ভূমিকা নিতে চান প্রসেনজিৎ, চান কলকাতার কোনও আসন থেকে বিধানসভা ভোটে লড়তে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকারের আশ্বাস, প্রসেনজিৎ সসম্মানে কাজের পরিসর পাবেন।

এই রাজনৈতিক যাত্রা-পথে কোনও আক্ষেপ? প্রসেনজিতের মতে, ‘‘সীতারাম ইয়েচুরির সঙ্গে আর কথা না-হওয়ার আক্ষেপ কোনও কালে মিটবে না!’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Congress Rahul Gandhi Subhankar Sarkar

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy