E-Paper

ভর্তিতে দেরির নালিশ, বালকের মৃত্যুতে ক্ষোভ

মৃত মহম্মদ হামিদ রাজার (৭) বাড়ি মাটিগাড়ার খলাইবক্তরিতে। রোগীর পরিবারের বিক্ষোভে উত্তপ্ত পরিস্থিতি পুলিশ গিয়ে সামলায়। পরে পরিবার শিলিগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করে জেলা হাসপাতালের এক ডাক্তারের বিরুদ্ধে।

সৌমিত্র কুণ্ডু , নীতেশ বর্মণ

শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:০৯
বালকের মৃতদেহ নিয়ে পরিবারের এক সদস্য। ছবি: স্বরূপ সরকার

বালকের মৃতদেহ নিয়ে পরিবারের এক সদস্য। ছবি: স্বরূপ সরকার Sourced by the ABP

চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল সাত বছরের এক বালককে। কিন্তু অভিযোগ ওঠে, তাকে সময় মতো ভর্তি নেওয়া হয়নি। তার ফলে বালকের মৃত্যু হয়— এমনই অভিযোগে রবিবার তেতে ওঠে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল।

জানা গিয়েছে, মৃত মহম্মদ হামিদ রাজার (৭) বাড়ি মাটিগাড়ার খলাইবক্তরিতে। রোগীর পরিবারের বিক্ষোভে উত্তপ্ত পরিস্থিতি পুলিশ গিয়ে সামলায়। পরে পরিবার শিলিগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করে জেলা হাসপাতালের এক ডাক্তারের বিরুদ্ধে। পুলিশ অভিযোগ খতিয়ে দেখছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তুলসী প্রামাণিক ফোন ধরেননি। মেসেজের জবাব মেলেনি। অভিযোগ মানেননি সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক।

‘সার্ভাইক্যাল লিম্ফ অ্যাডিনোপ্যাথি’ অর্থাৎ, ‘লিম্ফ নোড’-এ সংক্রমণের জন্য জ্বর নিয়ে ২২ অক্টোবর থেকে জেলা হাসপাতালে ভর্তি ছিল ওই বালক। শনিবার হাসপাতাল থেকে তাকে ছুটি দেওয়া হয়। এ দিন ফের জ্বর এবং গলা ব্যথা হওয়ায় শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান বাড়ির লোক। রবিবার বহির্বিভাগ বন্ধ। সকাল ১০টা নাগাদ তাকে নিয়ে যাওয়া হয় জরুরি বিভাগে। অভিযোগ, সেই সময় দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক অমিত দত্ত বালকটিকে দেখতে চাননি। বালকের মা দলেনা খাতুনের দাবি, “ছেলে অবসন্ন হয়ে পড়েছিল। ডাক্তারবাবুকে দেখতে বলি। তিনি কথাই শোনেননি। বলতে থাকেন, পরে বহির্বিভাগে দেখাতে। আমরা ভর্তি নিতে বলায় গালিগালাজও করেন।” হাসপাতাল সূত্রের খবর, ছেলে বেহুঁশ হয়ে পড়ছে দেখে বালকের বাবা-মা প্রতিবাদ করেন। ভর্তি নিতে পীড়াপীড়ি করেন। হইচই করলে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা পরে ভর্তি নেওয়া হয়। ওয়ার্ডে ভর্তির পরে সেখানে ডাক্তার দেখে জানান, বালক মারা গিয়েছে।

চিকিৎসক অমিত দত্ত বলেন, “রোগীকে দেখা হয়নি, গালিগালাজ করা হয়েছে, এমন অভিযোগ ঠিক নয়। প্রথমেই রোগী দেখে জানিয়েছিলাম, দুর্বল আছে। যে ওষুধ খাচ্ছে, চলুক। পরে বহির্বিভাগে দেখিয়ে নেবেন। তখন শরীরে খিঁচুনি ছিল না। মিনিট দশেক পরে অভিভাবকেরা জানান, বাচ্চাটার শরীর শক্ত হয়ে যাচ্ছে। তখনই ভর্তি করে ওয়ার্ডে পাঠানোর ব্যবস্থা করি। মৃত্যুর ঘটনা দুর্ভাগ্যনজক।” শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের সুপার চন্দন ঘোষ বলেন, “মৃতদেহের ময়না তদন্ত করাতে রাজি হননি পরিবারের লোকজন। হাসপাতালের কোনও চিকিৎসকের ব্যবহার নিয়ে ওঁদের আপত্তি রয়েছে বলে শুনেছি। অভিযোগ জানাতে বলা হয়েছে। সেই মতো তদন্ত হবে।” বালকের বাবা মহম্মদ রুবেলের ক্ষোভ, “প্রথমে ভর্তি করে নিলেই হয়তো ছেলের প্রাণ বাঁচত। কিন্তু ডাক্তারের উদাসীনতায় সর্বনাশ হল আমাদের।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Child death Siliguri Siliguri District Hospital

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy