Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Aliah University

Aliah University: সত্যিই ভয় পেয়েছিলাম, মনে হচ্ছিল কিছু করে দেবে, আনন্দবাজার অনলাইনকে জানালেন আলিয়ার উপাচার্য

বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনি আর আলিয়ায় থাকতে চান না বলে জানিয়েছেন মহম্মদ। নিজের পুরনো কর্মস্থল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েই ফিরে যেতে চান তিনি। থাকতে চান পড়াশুনো নিয়েই। আনন্দবাজার অনলাইনকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন নিগৃহীত উপাচার্য।

উপাচার্য মহম্মদ আলি।

উপাচার্য মহম্মদ আলি। নিজস্ব চিত্র।

সারমিন বেগম
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২২ ০০:৩৮
Share: Save:

আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় ইতিমধ্যেই তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। উপাচার্যকে হেনস্থার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া মূল অভিযুক্ত গিয়াসউদ্দিন মণ্ডলকে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তবে সেই দিন ঠিক কী ভাবে হেনস্থা হতে হয়েছিল উপাচার্য মহম্মদ আলিকে? আনন্দবাজার অনলাইনকে জানালেন তিনি।

মহম্মদ বললেন, ‘‘ওই দিন বেরনোর সময় খবর পাই যে, ঘেরাও করা হতে পারে। আগে থেকে কিছু জানতাম না। বেরোতে গিয়ে দেখি গেট আটকে রাখা হয়েছে। এর পর নিরাপত্তারক্ষীদের বলি, আমার সঙ্গে থাকতে। এক জন অধ্যাপিকাকেও থাকতে বলি। উনি যাওয়ার পর গেট খুলে দিলে ওই ছাত্রেরা অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে করতে হুড়মুড়িয়ে করে ঢুকে পড়ে।’’

মহম্মদের অভিযোগ, টেকনো সিটি থানার আইসি-কে পুরো পরিস্থিতির কথা জানানো হলে তিনি বিষয়টি দেখার আশ্বাস দেন। কিন্তু পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি বলেও অভিযোগ।

আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে একটি ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলে সেখান থেকেও তাঁকে ধমক দিয়ে বার করে আনা হয় বলেও উপাচার্য জানান। তাঁর অভিযোগ, এর আগেও পড়ুয়াদের দাবি না মেনে নেওয়ার ফলে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। কিন্তু এর আগে কোনও দিন এই ভাবে হেনস্থা হতে হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘এই বারে সত্যিই খুব ভয় পেয়েছিলাম। মনে হচ্ছিল কিছু করে দেবে।’’

ঘটনার জেরে উপাচার্য অসুস্থ হয়ে পড়েন বলেও তিনি জানিয়েছেন। এর পর চিকিৎসক তাঁকে তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দিলে তিনি একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন।

উপাচার্য বলেন, ‘‘পড়ুয়ারা বিক্ষোভ দেখাবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এটা একেবারে জঙ্গিসুলভ আচরণ ছিল।’’

তবে তাঁর আমলে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভের ঘটনা অনেক কমে গিয়েছে বলেও মহম্মদ আলি এই দিন দাবি করেছেন।

আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা গিয়াসউদ্দিন-বাহিনীর হাতে হেনস্থার কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন উপাচার্য। গত সপ্তাহের ওই ঘটনার পরে সোমবার প্রথম প্রতিক্রিয়া জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘‘ছাত্রেরা যে এই ভাষা প্রয়োগ করতে পারে, চড় মারার কথা, কান ধরে ওঠবস করতে বলতে পারে, তা আমার এখনও বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে। মনে হচ্ছে শিক্ষক হিসেবে আমি ব্যর্থ।’’

তবে ধৃত ছাত্রনেতা গিয়াসউদ্দিনের গ্রেফতারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমার কোনও ছাত্র গ্রেফতার হলে আমি কখনই আনন্দ পাব না। শুধু চাই যে, ঈশ্বর ওদের শুভবুদ্ধি দিক। সবার ভাল হোক।’’

তবে তাঁর বেশির ভাগ ছাত্রই এ রকম নয় বলে দাবি উপাচার্যের। শুধু গুটিকয়েক ছাত্রই সব সময় ঝামেলা করে। এর আগেও এই ছাত্ররা হস্টেলের বিষয়ে ঝামেলা করেছে বলেও অভিযোগ উপাচার্যের।

বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনি আর আলিয়ায় থাকতে চান না বলে জানিয়েছেন মহম্মদ। নিজের পুরনো কর্মস্থল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েই ফিরে যেতে চান তিনি। থাকতে চান পড়াশুনো নিয়েই। আনন্দবাজার অনলাইনকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন নিগৃহীত উপাচার্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Aliah University vice chancellor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE