E-Paper

কিডনি পাচার চক্রে জড়িত সন্দেহে ধৃত আইনজীবী

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছু দিন আগে অশোকনগরের বাসিন্দা এক মহিলাকে চাপ দিয়ে কিডনি বিক্রি করানোর অভিযোগ উঠেছিল বিকাশ ঘোষ ওরফে শীতল নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২৫ ০৯:০৩
ধৃতের নাম প্রদীপকুমার বর।

ধৃতের নাম প্রদীপকুমার বর। —প্রতীকী চিত্র।

কিডনি পাচার চক্রে জড়িত সন্দেহে বৃহস্পতিবার রাতে আলিপুর আদালতের এক আইনজীবীকে গ্রেফতার করল অশোকনগর থানার পুলিশ। ধৃতের নাম প্রদীপকুমার বর। তাঁর বাড়ি বাঁশদ্রোণীতে। শুক্রবার বারাসত জেলা আদালতে প্রদীপকে তোলা হলে বিচারক চার দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠান।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছু দিন আগে অশোকনগরের বাসিন্দা এক মহিলাকে চাপ দিয়ে কিডনি বিক্রি করানোর অভিযোগ উঠেছিল বিকাশ ঘোষ ওরফে শীতল নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ওই মহিলা শীতলের কাছ থেকে ৬০ হাজারটাকা ধার নিয়েছিলেন। সুদে-আসলে টাকার পরিমাণ ২ লক্ষ পেরিয়েছিল। ওই টাকা শোধ করতে হবে বলে শীতল চাপ দিচ্ছিল। মহিলা কিছু টাকা মেটাতে পারেন। অভিযোগ, বাকি টাকার জন্য তাঁকে কিডনি বিক্রির প্রলোভন দেখায় শীতল। মহিলাকে ৬ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে বলেওকথা দেয়।

কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মহিলা কিডনি দেন। পুলিশ জানিয়েছে, মহিলাকে ৬ লক্ষ টাকা দেওয়াও হয়েছিল। পুলিশ ওই ঘটনায় শীতলকে গ্রেফতার করে। তাকে জেরা করে কিডনি পাচার চক্রে জড়িত আরও চার জনকে ধরা হয়। সকলেই এখন জেলে। এইপাঁচ জনকে জেরা করে পুলিশ আইনজীবী প্রদীপের সন্ধান পায়। পুলিশ নোটিস পাঠিয়ে তাঁকে অশোকনগর থানায় ডাকে।

পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ওই আইনজীবী থানায় আসেন। তাঁকে দীর্ঘ সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু প্রদীপ সে সবের সদুত্তর দিতে পারেননি। এর পরেই রাতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশের দাবি, প্রদীপ সরাসরি কিডনি পাচার চক্রে জড়িত।চক্রের হয়ে আইনি দিক সামলাতেন তিনি। এর জন্য কমিশন পেতেন। এ ছাড়া, ২০০-৩০০ টাকার হলফনামা করে দিয়ে ৮-১০ হাজার টাকা নিতেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হলফনামা করার নির্দিষ্ট এলাকা থাকে।যেমন, হাবড়া-অশোকনগরের বাসিন্দারা আলিপুরে গিয়ে হলফনামা করতে পারেন না। কিন্তু প্রদীপ বেআইনি ভাবে রাজ্যের যেকোনও প্রান্তের মানুষের হলফনামা আলিপুর থেকেই করে দিতেনবলে অভিযোগ।

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে, কিডনিচক্রের সদস্যেরা একটি কিডনির দাম নিত ১৬ লক্ষ টাকা। দাতাকে দেওয়া হত মাত্র ৫-৬ লক্ষ টাকা। এখনওপর্যন্ত চক্রের সদস্যেরা ৩০টিকিডনি বিক্রি করেছে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, পাচার চক্রের বাকি সদস্যদের খোঁজ চলছে। ধৃতদের জেরা করে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, উত্তর এবং দক্ষিণ ভারতের মানুষের কাছে কোনও ভাবে কলকাতা সম্পর্কে এই বার্তা পৌঁছে গিয়েছিল যে, এখানে সহজেই কিডনি পাওয়া সম্ভব। সেই কারণে কিডনির প্রয়োজন পড়লে মানুষ এখানে ভিড় করতেন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Racket police investigation

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy