তৃণমূলের পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন ঠেকাতে কোনও রাজনৈতিক ছুৎমার্গ নেই বিজেপির। সিপিএম, কংগ্রেস, নির্দল বা বিক্ষুব্ধ তৃণমূল— কারও হাত ধরতেই তাদের আপত্তি নেই বলে জানিয়েছে বিজেপি। তাদের এই আহ্বানকে হাতিয়ার করেই তৃণমূল বলছে, শাসক দলের বিরুদ্ধে বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেসের আঁতাঁত এখন পরিষ্কার! সিপিএম অবশ্য বলেছে, দলীয় নির্দেশ অমান্য করে বিজেপি বা তৃণমূলের সঙ্গে হাত মেলালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে অথবা সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা হবে।
দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ রবিবার বলেন, ‘‘নীচের তলায় যে দুর্নীতি আর হিংসা চলছে, তা রুখতে তৃণমূলকে ক্ষমতা থেকে দূরে রাখতে হবে। সেই জন্য বিজেপি এই নির্দেশ দিয়েছে, যে তৃণমূল বাদ দিয়ে সকলকে নিয়ে বোর্ড গঠন করে সাধারণ মানুষের স্বপ্নকে সফল করুন। সিপিএম, কংগ্রেস, বিক্ষুব্ধ তৃণমূল, নির্দল— যে যেখানে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়ছে, তার সঙ্গেই আমরা হাত মেলাতে রাজি আছি।’’
তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় দিলীপবাবুর এই অবস্থানকে কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘‘যেটা এত দিন কম্বলের নীচে ছিল, সেটা এখন বেরিয়ে এসেছে। আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি, বিজেপির নেতৃত্বে কংগ্রেস, সিপিএম এই রাজ্যে একই অবস্থান নিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এ কথা বহু বার বলেছেন। দিলীপবাবুরা যেটা ভোটের আগে লুকিয়ে-চুরিয়ে করেছেন, সেটা এখন প্রকাশ্যে বলছেন!’’
পঞ্চায়েতে অবশ্য বরাবরই স্থানীয় স্তরে নানা সমীকরণের ভিত্তিতে রকমারি বোর্ড গঠন হয়। এ বারও বাম-বিজেপি বোর্ড যেমন হচ্ছে, তেমনই বিজেপিকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূলের বোর্ডও দেখা যাচ্ছে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র জানিয়েছেন, বিজেপি বা তৃণমূল কারও সঙ্গেই হাত মিলিয়ে বোর্ড গড়া যাবে না বলে দলে নির্দেশ জারি করা হয়েছে। দলীয় সদস্যেরা নির্দেশ অমান্য করে বোর্ড গড়লে দল ব্যবস্থা নেবে এবং দল সমর্থিত প্রার্থীরা তেমন কাজ করলে তাঁদের সঙ্গে সংস্রব ছিন্ন করা হবে বলে সিপিএম জানিয়েছে। কিন্তু একই সঙ্গে তারা মানছে, গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ উপর তলার হাতে থাকে না। দিলীপবাবুরও বক্তব্য, ‘‘প়ঞ্চায়েত স্তরের রাজনীতি সব সময় উপর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। গ্রামের মানুষ স্থানীয় প্রয়োজনে অনেক কিছুই করেন।’’