E-Paper

আজ ফল স্কুল সার্ভিস কমিশনের

বিচারপতি সিংহের নির্দেশ, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে যে পদ্ধতিতে এই তালিকা তৈরি করেছে কমিশন, তার বিস্তারিত তথ্য জমা দিতে হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২৫ ০৬:২৩
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক নিয়োগের ফল আজ, শুক্রবার প্রকাশিত হবে। এসএসসি-র ওয়েবসাইটে এই ফল দেখা যাবে। কমিশন সূত্রের খবর, ফল বেরোনোর পরে সফল চাকরিপ্রার্থীদের নথি যাচাই হয়ে ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া শুরু হবে। এই প্রক্রিয়া চলাকালীন মাধ্যমিক স্তরের (নবম-দশম) শিক্ষক নিয়োগের ফল প্রকাশিত হবে। এসএসসি জানিয়েছে, শিক্ষক নিয়োগে মোট শূন্যপদ ৩৫ হাজার ৭২৬। তার মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শূন্যপদ ১২ হাজার ৫১৪। এ দিকে, বৃহস্পতিবারই এই নিয়োগ সংক্রান্ত একটি মামলা দায়ের হয়েছে হাই কোর্টে। এই নিয়োগে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার জন্য ১০ নম্বর দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে ওই মামলা হয়েছে। তাতে বিচারপতি অমৃতা সিংহের নির্দেশ, কোন নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে শিক্ষকদের ‘দাগি’ এবং ‘দাগি নয়’—এই দুই গোত্রে ভাগ করা হয়েছে তা জানাতে হবে এসএসসিকে।

বিচারপতি সিংহের নির্দেশ, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে যে পদ্ধতিতে এই তালিকা তৈরি করেছে কমিশন, তার বিস্তারিত তথ্য জমা দিতে হবে। তিনি বলেন, ‘‘দাগি তালিকায় থাকা শিক্ষকদের নাম নিয়ে চিন্তিত নয় আদালত। দাগিদের তালিকা কী পদ্ধতিতে তৈরি করা করেছে তা জানতে চায় আদালত।’’ মামলার সঙ্গে যুক্ত সব পক্ষকে নিজেদের বক্তব্যের সমর্থনে তথ্য জমা দেওয়ার নির্দেশও দেন তিনি। পরবর্তী শুনানি ১২ নভেম্বর।

ফল প্রকাশের আগের দিন নতুন প্রশ্নও তুলেছেন ২০১৬ সালের চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশ। তাঁদের দাবি, সবাই পরীক্ষায় না-ও পাশ করতে পারেন। তাঁদের জন্য সরকার কী ভেবেছে, তা জানানো হোক। ‘দাগি’ তালিকায় নাম না-থাকা এক চাকরিহারা শিক্ষক বলেন, ‘‘২০১৬ সালে পাশ করে চাকরি পেয়েছিলাম বলে ২০২৫ সালেও পরীক্ষায় পাশ করে চাকরি পাব, তার নিশ্চয়তা নেই। আমরা প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির ফলে চাকরি হারিয়েছি। এসএসসি-র তালিকায় আমরা যোগ্য চাকরিহারা। তাই এ বার পাশ করতে না-পারলে সরকার কী ভেবেছে তা জানতে চাই।’’ আর এক চাকরিহারা শিক্ষক বলেন, ‘‘নেতাজি ইনডোরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আশ্বাস দিয়ে বলেছিলেন, তাঁর কাছে প্ল্যান-এ বাদেও প্ল্যান-বি, প্ল্যান-সি আছে। তাঁর সেই প্ল্যানগুলিও এ বার জানতে চাই।’’

হাই কোর্টে অভিজ্ঞতার জন্য ১০ নম্বরের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন নতুন চাকরিপ্রার্থীরা। অর্থাৎ যাঁরা আগে চাকরি পাননি। তাঁদের এক জন বলেন, ‘‘যাঁরা কর্মরত শিক্ষক তাঁদের জন্য ১০ নম্বরের ব্যবস্থা করেছে এসএসসি। এটা কেন হবে? এর ফলে আমাদের মৌলিক অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। ইন্টারভিউয়ের আগেই আমরা অভিজ্ঞ চাকরিপ্রার্থীদের থেকে পিছিয়ে পড়ব।’’ তাঁদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং ফিরদৌস শামিমও এ দিন এই অভিজ্ঞতার জন্য বরাদ্দ নম্বরের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে হাই কোর্টে প্রশ্ন তুলেছেন। বিচারপতি অমৃতা সিংহেরও পর্যবেক্ষণ, ‘‘নতুন চাকরিপ্রার্থীরা শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার জন্য বরাদ্দ ১০ নম্বর থেকে বঞ্চিত হবেন। কেন তাঁদের সমান সুযোগ দেওয়া হবে না?’’ রাজ্য এবং কমিশনের আইনজীবীরা দাবি করেন, রাজ্যের নতুন নিয়ম তৈরি করার ক্ষমতা আছে। তাঁদের দাবি, অভিজ্ঞ শিক্ষকেরা বাড়তি দক্ষতায় পড়াতে পারবেন।

যদিও ২০১৬ সালের চাকরিহারা শিক্ষক মেহেবুব মণ্ডল বলেন, ‘‘আমাদের প্রশ্ন, আমরা কেন অভিজ্ঞতার জন্য বরাদ্দ নম্বর পাব না? এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আগেই মামলা হয়েছিল। সেই মামলা খারিজ হয়েছে। ২০০৭ এবং ২০১১ সালের এসএসসি-তেও কর্মরত শিক্ষকদের অভিজ্ঞতার জন্য অতিরিক্ত নম্বর দেওয়া হয়েছিল।’’

এই আবহে অনেকেই মনে করছেন, ফল প্রকাশের পরে ফের মামলা হতে পারে। তাতে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে আরও জটিলতা তৈরি হতে পারে। এ দিকে, আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। শেষ পর্যন্ত ওই সময়সীমার মধ্যে সব শেষ হবে কি না, তা নিয়েও সংশয়ী অনেকে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

SSC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy