Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

এক্স-রে করতেও ‘রেফার’ শালবনিতে

প্রায় এক মাস ধরে এক্স-রে মেশিন অচল শালবনি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। সামান্য এক্স-রে করাতে রোগীদের প্রায় ২৫ কিলোমিটার উজিয়ে যেতে হচ্ছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

বরুণ দে
শালবনি শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:৫২
Share: Save:

সপ্তাহ খানেক আগেই শালবনির বনমালীপুরে লরি-ট্রেকারের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছিল চার জনের, জখম অন্তত ২১। জখম ট্রেকার যাত্রীদের অনেককে শালবনি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। তার মধ্যে ১১ জনের এক্স-রে করা জরুরি ছিল। কিন্তু এক্স-রে মেশিন অচল। শেষমেশ ২৪ ঘণ্টা পরে তাঁদের মেদিনীপুর মেডিক্যালে পাঠানো হয়।

প্রায় এক মাস ধরে এক্স-রে মেশিন অচল শালবনি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। সামান্য এক্স-রে করাতে রোগীদের প্রায় ২৫ কিলোমিটার উজিয়ে যেতে হচ্ছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। দুর্ভোগের অন্ত থাকছে না। সমস্যা মানছে স্বাস্থ্য দফতরও। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “শালবনি হাসপাতালের ওই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।” শালবনির ব্লক মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (বিএমওএইচ) অভিষেক মিদ্যার বক্তব্য, “ওই এক্স-রে মেশিনটি অনেক পুরনো। চার-পাঁচবার মেরামতের চেষ্টা হয়েছে। তবে মেরামত করা সম্ভব হয়নি।” বিএমওএইচ জানান, হাসপাতালে নতুন একটি এক্স-রে মেশিন আনা হয়েছে। সেটি চালু হয়ে গেলে আর কোনও সমস্যা থাকবে না।

আশ্বাসে অবশ্য ভুক্তভোগীদের ক্ষোভে মলম পড়ছে না। ট্রেকার দুর্ঘটনায় জখম হয়েছিলেন জ্যোৎস্না মাহাতো, দিপালী মাহাতো, সাবিত্রী মাহাতো, কল্পনা মাহাতোরা। সাবিত্রীদেবীদের ক্ষোভ, “সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে এক্স-রের মতো সামান্য পরিষেবাটুকুও কেন মিলবে না? শুধু এক্স-রে করাতে মেদিনীপুরে পাঠানোর মানেই হয় না।” রোগীর পরিজনেরা জানালেন, মেদিনীপুরে এসেও তাঁদের সমস্যায় পড়তে হয়। প্রথমে শুধু রোগীদের কোনও কাগজপত্র ছাড়াই মেদিনীপুরে পাঠানো হয়। তখন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ জানান, এ ভাবে এক্স-রে করা যাবে না। ‘রেফারে’র কাগজ আনতে হবে। পরে ফের সেই কাগজ আনা হয়। তারপর এক্স-রে হয়। শালবনি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অজয় মাহাতো মানছেন, “এক্স-রে করাতে মেদিনীপুরে গিয়ে রোগীদের সমস্যায় পড়তে হয়েছে।”

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় এই মুহূর্তে তিনটি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল। ঘাটাল, ডেবরা, শালবনি— তিন ক্ষেত্রেই অভিযোগ, হাসপাতালের ঝাঁ চকচকে ভবনটুকুই রয়েছে, পরিকাঠামো ও পরিষেবা সেই তিমিরেই! শালবনির সুপার স্পেশ্যালিটিতে যেমন ব্লাড ব্যাঙ্ক, বার্ন ইউনিট, ভেন্টিলেশন নেই। শয্যা ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরও অভাব রয়েছে। এক চিকিৎসক মানছেন, “পরিকাঠামোর অভাবে বেশ কিছু অত্যাধুনিক সরঞ্জাম অব্যবহৃত হয়ে পড়ে রয়েছে।”

শালবনির এই হাসপাতালের দায়িত্ব নেওয়ার কথা জিন্দলদের। গত মাসেই হাসপাতাল দেখে গিয়েছেন সজ্জন জিন্দলের ছেলে পার্থ জিন্দল। জিন্দলরা দায়িত্ব নিলে হাসপাতালের ভোলবদল হবে, আশায় শালবনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE