Advertisement
E-Paper

নজরদারির অভাব, পথেই যায় গাঁটের কড়ি

জেলাগুলির বাসিন্দাদের অনেকেরই মতামত, একে তো রাস্তা মেরামতির ক্ষেত্রে বহু সময়ে তাপ্পি মেরে ছেড়ে দেওয়া হয়।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২০ ০৩:৩১
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

শুধু রাজ্য সড়ক নয়, খানাখন্দের কোপ পড়েছে জাতীয় সড়কেও! বর্ধমান থেকে অন্ডাল, এই পর্বে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের হাল ভাল নয়। বিশেষত কলকাতামুখী লেনের পরিস্থিতি বেশি খারাপ বলে অভিযোগ। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ জানান, খন্দ মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে। তবে সমস্যা বেশি গ্রামীণ সড়ক নিয়ে। প্রশাসনিক বৈঠকেও বার বার সে কথা উঠেছে। এমনকি

বীরভূমে শাসক দলের বৈঠকেও রাস্তার বেহাল দশা নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। ফলে রাস্তার হাল যে খারাপ হয়ে রয়েছে তা মেনে নিচ্ছেন শাসক দলের তৃণমূল স্তরের একাংশও। সম্প্রতি প্রশাসনিক বৈঠকে পূর্ব বর্ধমানে গ্রামীণ রাস্তা তৈরির হাল নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সপ্তাহখানেকের মধ্যে রিপোর্ট তৈরির নির্দেশও দেন। পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় ৫০০ মিটার থেকে দেড় কিলোমিটার পর্যন্ত ৪,২০০টি রাস্তার অবস্থা খারাপ বলে জেলাশাসককে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন জানায়, সেগুলি সংস্কারের পরিকল্পনা হচ্ছে। সেই সঙ্গে সেতু, কালভার্টগুলির স্বাস্থ্য-পরীক্ষা করানো হবে। বিশেষজ্ঞ সংস্থাকে দিয়ে ‘বাংলা গ্রাম সড়ক যোজনা’র রাস্তাগুলির সমীক্ষা করানোর কথাও ভাবা হয়েছে।

পূর্ব মেদিনীপুরে প্রায় ৭০০ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়কের বেশির ভাগই প্রথমে আমপান এবং পরে বর্ষার জেরে বেহাল হয়েছে বলে রিপোর্ট দিয়েছে জেলা পরিষদ। জেলায় হলদিয়া-মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কের রানিচকে প্রায় ৪ কিলোমিটার অংশ খারাপ অবস্থায় থাকলেও নন্দকুমার থেকে দিঘা ১১৬ বি জাতীয় সড়ক ও ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের কোলাঘাট থেকে পাঁশকুড়া পর্যন্ত অংশ ভালই রয়েছে। সম্প্রতি জেলার ২৮টি রাস্তার প্রায় ১৫০ কিলোমিটার অংশ মেরামতের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। যে সব গ্রামীণ সড়ক তৈরির পরে পাঁচ বছরের গ্যারান্টি পিরিয়ডের আগে খারাপ হয়েছে, সেগুলি মেরামতের জন্যও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সংস্থাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলার পূর্ত দফতরের এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অনুপ মাইতি বলেন, ‘‘পুজোর আগেই সব রাস্তায় গর্ত মেরামতির জন্য এখন কাজ চলছে।’’ পশ্চিম মেদিনীপুরেও ৬১টি গ্রামীণ রাস্তা সংস্কারের প্রয়োজন বলে জেলা থেকে রাজ্যকে জানানো হয়েছে। ঝাড়গ্রামেও বহু রাস্তার দফারফা পরিস্থিতি।

পুরুলিয়া জেলা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘ভার্চুয়াল’ বৈঠকে জানিয়েছিলেন, জেলা পরিষদ তার অধীনস্থ যে রাস্তাগুলি সংস্কার করতে পারছে না, তার তালিকা যেন জেলাশাসককে দেয়।

পুরুলিয়া জেলা পরিষদের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রাথমিক একটা তালিকা তৈরি করা হয়েছে। চূড়ান্ত তালিকা তৈরির কাজ চলছে।’’ ইতিপূর্বে পুরুলিয়া জেলা পরিষদ কয়েকটি রাস্তা পূর্ত দফতরকে হস্তান্তর করেছে। পুরুলিয়া-জামশেদপুর ৩২ নম্বর জাতীয় সড়কের অবস্থা পুরুলিয়া শহর থেকে বলরামপুর এলাকা পর্যন্ত বেশ খারাপ। বাঁকুড়া জেলা পরিষদ থেকে ইতিপূর্বে প্রায় ২০টি রাস্তা পূর্ত দফতরকে সংস্কারের জন্য দেওয়া হয়েছিল। সেগুলির কাজ চলছে। নতুন করে আর কী কী রাস্তা দেওয়া হবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন বাঁকুড়া জেলা পরিষদে এক আধিকারিক।

জেলাগুলির বাসিন্দাদের অনেকেরই মতামত, একে তো রাস্তা মেরামতির ক্ষেত্রে বহু সময়ে তাপ্পি মেরে ছেড়ে দেওয়া হয়। তার পরে পণ্যবাহী ভারী গাড়ি চলাচল করে। সেগুলি অতিরিক্ত ওজন বইছে কি না, তা দেখা হয় না। রাস্তায় কত ওজন নিয়ে গাড়ি চলতে পারবে তার খাতায়-কলমে নির্দেশিকা থাকলেও বাস্তবে তার প্রয়োগ দেখা যায় না। তার ফলেই সরকারকে বার বার গাঁটের কড়ি খসিয়ে রাস্তা মেরামত করতে হয়।

বাংলা গ্রাম সড়ক যোজনা Birbhum Road
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy