Advertisement
E-Paper

নজরে ভোট! ৪৪ হাজার কোটি টাকার গ্রামোন্নয়ন বাজেট ছাড়পত্র পেল রাজ্য বিধানসভায়

কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে সরব হয়েছেন পাথরপ্রতিমার বিধায়ক সমীর জানাও। তিনি জানান, কেন্দ্রীয় বঞ্চনা থাকা সত্ত্বেও যে ভাবে রাজ্য অর্থ জোগাড় করে কাজ করছে, তা ‘অকল্পনীয়’।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২৫ ১৭:৪২
Share
Save

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চলতি সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেটে গ্রামের উন্নয়নের জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে বরাদ্দ করা হয়েছিল ৪৪ হাজার ১৩৯ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা টাকা। বৃহস্পতিবার সেই অনুমোদনের পুরোটাই বিধানসভায় মঞ্জুর করল রাজ্যের অর্থ দফতর। তার মধ্যে পঞ্চায়েত এবং গ্রামোন্নয়ন বিভাগে বড় প্রকল্পের জন্য ম়ঞ্জুর করা হয়েছে ২৮২২.০৭৮০ কোটি (দু’হাজার আটশো বাইশ কোটি সাত লক্ষ আশি হাজার) টাকা। বিধানসভায় বিজেপি বিধায়কদের অনুপস্থিতিতে এই বরাদ্দ মঞ্জুর করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিধানসভায় সরকারের হয়ে আলোচনায় যোগ দেন শাসকদলের বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী, শেখ শাহনওয়াজ, শ্যামল মণ্ডল, সুকান্ত পাল, সমীর জানা, বীণা পাল, শওকত মোল্লারা। বিরোধী বিধায়কদের মধ্যে ছিলেন আরএসএমপি (রাষ্ট্রীয় সেক্যুলার মজলিশ পার্টি) বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। তিনি বলেন, ‘‘গ্রামীণ অর্থনীতিতে আমরা পিছিয়ে রয়েছি। পরিসংখ্যান বলে দেশের মধ্যে আমরা ১৩ নম্বরে। আমাদের গ্রামে জনপ্রতি খরচের ক্ষমতা ১২ টাকা।’’ অধিবেশনে বিজেপি বিধায়কদের অনুপস্থিতি নিয়েও শাসকদলের দিকে আঙুল তুলেছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যের শাসক ‘বিমাতৃসুলভ’ আচরণ করছে। তাঁর বক্তব্যের জবাব দিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। তিনি কেন্দ্রীয় বঞ্চনার কথা তুলে ধরেছেন। তাঁর দাবি, ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে বিজেপির ‘স্বপ্নভঙ্গ’ হওয়ার ফলে পরবর্তী কালে গ্রামোন্নয়ন এবং অন্যান্য দফতরকে কেন্দ্র সহায়তা বন্ধ করেছে।

কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে সরব হন পাথরপ্রতিমার বিধায়ক সমীরও। তিনি জানান, কেন্দ্রীয় বঞ্চনা থাকা সত্ত্বেও যে ভাবে রাজ্য অর্থ জোগাড় করে কাজ করছে, তা অকল্পনীয়। ১০০ দিনের কাজের টাকা কেন্দ্র দিচ্ছে না। নাম না করে সমালোচনা করেন বিজেপির। তিনি আরও দাবি করেছেন, মুখ্যমন্ত্রী নিজের টাকায় ১২ লক্ষ আবাস করে দিচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী দলের জন্য কাজ করেন না, সকলের জন্য কাজ করেন। প্রদীপ জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী দু’বার দেখা করেছেন, চিঠি দিয়েছেন। তার পরেও কাজ হয়নি।

প্রসঙ্গত, ২০২৬ সালের ভোটের আগে শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেটে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ করা হয়েছে পঞ্চায়েত এবং গ্রামোন্নয়নের জন্যই। এর কারণ নিয়ে বাজেট পেশের পরে রাজনৈতিক মহলে ব্যাখ্যা উঠে এসেছিল। আনুষ্ঠানিক ভাবে সরকারের তরফে কিছু বলা হয়নি। প্রশাসন এবং শাসকদদলের একটা অংশ বলছে, বাজেটের নেপথ্যে পাখির চোখ হল গ্রামের মানুষের সমর্থন। ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপি রাজ্যে ১২টি আসনে জয়ী হয়েছিল। যেখানে ২০১৯ সালে এ রাজ্যে ১৮টি আসনে জয়ী হয়েছিল তারা।

পর্যালোচনায় দেখা গিয়েছে, তৃণমূল সাফল্য পেয়েছে গ্রামীণ বাংলায়। শহরে আশানুরূপ ফল হয়নি। রাজ্যের একাধিক পুরসভা এলাকায় তৃণমূল পিছিয়ে রয়েছে। কলকাতা শহরে ৪০টির বেশি ওয়ার্ডে তৃণমূলের থেকে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। বিধাননগর, শিলিগুড়ি, আসানসোলের মতো শহরেও এক ছবি। সূত্রের খবর, ২০২৪ সালের ভোট দেখে তৃণমূল বুঝতে পেরেছে, গ্রামে যদি সরকারের কাজ তুলে ধরা যায় এবং সংগঠনে মনোনিবেশ করা যায়, তা হলে ২০২৬ সালের ভোটে গ্রামের ভোট তাদের ঝুলিতে পড়তে পারে। ২৯৪টি আসনের মধ্যে ১৭০-১৮০টি বিধানসভা আসনে গ্রামাঞ্চলের ভোট নির্ণায়ক। এর মধ্যে বহু কেন্দ্র রয়েছে, যা পুরোটা গ্রামাঞ্চল। কিছু কেন্দ্র আধা শহর এবং আধা গ্রাম। সেই কথা মাথায় রেখেই চলতি বছরের বাজেট করেছে রাজ্য সরকার বলে মনে করছে প্রশাসন এবং শাসকদলের একটা অংশ। সে কারণে গ্রামোন্নয়নে বরাদ্দ করা হয়েছিল প্রায় ৪৪ হাজার কোটি টাকা। এ বার সেই বরাদ্দ মঞ্জুর করল অর্থ দফতর।

West bengal Assembly Budget 2025 Panchayat

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}