নতুন ইলেকট্রিক ওয়্যারিং। বাতানুকূল যন্ত্রগুলিও একেবারে আনকোরা। যেখানে-সেখানে ফাইল পড়ে থাকে না। নবান্ন এখানেই মহাকরণ ও নব মহাকরণের তুলনায় কিছুটা আলাদা। তার অভ্যন্তরীণ পরিকাঠামো অনেকটাই ভাল। তাই গঙ্গার পশ্চিম পাড়ে রাজ্য প্রশাসনের নতুন সদর নবান্নে আগুন লাগার আশঙ্কা তুলনামূলক ভাবে কম বলে মনে করছেন প্রশাসনের কর্তারা।
আগুন নিয়ে সচেতনতা মহাকরণে বরাবরই ঢিলেঢালা। দীর্ঘদিনের পুরনো ওয়্যারিং, দীর্ঘ ব্যবহারে দুর্বল হয়ে যাওয়া বাতানুকূল যন্ত্র, মাকড়সার জালের মতো ঝুলে থাকা বিদ্যুতের তার আর টেবিলে টেবিলে ফাইলের পাহাড়— এটাই মহাকরণের চিরকালীন ছবি ছিল। ক্যান্টিনগুলিতে উনুন জ্বালিয়ে দিনের পর দিন রান্নাও হয়ে এসেছে। রাজ্য প্রশাসনের দীর্ঘদিনের ওই সদর দফতরে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা সে-ভাবে ছিলই না। এত শৈথিল্যের মধ্যে দু’চার বার আগুন লাগলেও বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ড কখনও ঘটেনি মহাকরণে।
নব মহাকরণের বয়স মহাকরণের তুলনায় অনেকটাই কম। সেখানে আগুন নেভানোর পরিকাঠামো মোটামুটি রয়েছে। তবে প্রয়োজনের সময় সেগুলোকে কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে তৎপরতার অভাব দেখা গিয়েছে শুক্রবারের অগ্নিকাণ্ডে। আসলে অভাব নজরদারির। নবান্নে সেই নজরদারি অনেকটাই পেশাদারি মনোভাব থেকে করা হয়। নবান্নে বসেন এমন কয়েক জন মন্ত্রী অন্তত এ দিন তেমনটাই দাবি করছেন।
ধূমপানের ক্ষেত্রে রীতিমতো কড়াকড়ি রয়েছে নবান্নে। বারান্দায় বা সিঁড়ির কাছে গিয়ে ধূমপান করতে হয়। ক্যান্টিনের রান্নাও হয় নবান্ন ভবনের বাইরে, আলাদা জায়গায়। সম্প্রতি রাজ্য প্রশাসনের সদর দফতরের প্রতিটি তলায় অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থাও ঢেলে সাজা হয়েছে।
পূর্ত দফতরের কর্তাদের একাংশ জানান, মহাকরণের মাস্টার প্ল্যান, নকশা সম্পর্কে সবিস্তার ধারণা করা কঠিন। কারণ, নির্মাণের পরে অনেক বার বাড়িটির সংস্কার হয়েছে। নবান্নের নকশা রয়েছে দমকল ও পূর্ত বিভাগের কাছে। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে অগ্নি নির্বাপণের পর্যাপ্ত বন্দোবস্ত করাই আছে। ফলে নবান্নে দুর্ঘটনা ঘটলে মোকাবিলা করা অনেক সহজ বলে জানাচ্ছেন সরকারি কর্তারা। তবে নবান্নের সিঁড়ি অপ্রশস্ত। বিপদের সময় লিফট বন্ধ থাকলে অনেকের পক্ষে একসঙ্গে দ্রুত ওই অপরিসর সিঁড়ি দিয়ে নেমে আসা সহজ নয়। ওই ভবনের এটা একটা দুর্বলতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy