Advertisement
১৯ মে ২০২৪
Jyotipriya Mallick

জ্যোতিপ্রিয়ের আপ্তসহায়ক আমি নই: অমিত, বিশ্বাস করেন না মন্ত্রী কোনও অপরাধ করতে পারেন

গত ২৬ অক্টোবর প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সল্টলেকের বাড়িতে তল্লাশি চালায় ইডি। সে দিন অমিত দে-র তিনটি ফ্ল্যাটেও হানা দেন ইডি আধিকারিকেরা।

Amit Dey

বাঁ দিক থেকে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এবং অমিত দে। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২৩ ২৩:১৭
Share: Save:

রেশন দুর্নীতি মামলায় ধৃত মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের আপ্তসহায়ক নন তিনি। কখনও ছিলেনও না। সিজিও কমপ্লেক্স থেকে বেরিয়ে এমনই দাবি করলেন সেই অমিত দে। সোমবার প্রায় ১০ ঘণ্টা তাঁকে ইডি আধিকারিকরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। অমিতের জবাব, তিনি যে হেতু মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ এবং অফিসে কাজ করতেন, তাই ডাকা হয়েছিল।

বস্তুত, গত ২৬ অক্টোবর প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়ের সল্টলেকের বাড়িতে তল্লাশি চালায় ইডি। সে দিনই ওই অমিতের নাগেরবাজারের তিনটি ফ্ল্যাটেও হানা দেন ইডির আধিকারিকেরা। যদিও তিনটি ফ্ল্যাটের দরজায় তালা ঝুলছিল। স্ত্রী, বৃদ্ধা মা, সন্তানকে নিয়ে ছুটি কাটাতে পুরী গিয়েছিলেন অমিত। ফলে তিনটি ফ্ল্যাটের কোনওটিতেই ঢুকতে পারেননি কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তকারীরা। গেটের বাইরে পাহারায় ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। শেষ পর্যন্ত ভুবনেশ্বর থেকে বিমান ধরে কলকাতায় ফিরে আসেন অমিত। বিমানবন্দর থেকে সপরিবার অমিতকে গাড়িতে চাপিয়ে বাড়ি নিয়ে আসে ইডি। খোলে ফ্ল্যাটের দরজা। সোমবার সেই অমিতকে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে ডাকে ইডি। সকালে প্যাকেট হাতে ইডি দফতরে ঢুকে যান অমিত। চলে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ। রাতে ইডি দফতর থেকে বেরিয়ে অমিতের দাবি, ‘‘আমি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের পিএ নই। আমরা ছোট থেকে বড় হয়েছি এক পাড়াতে। সেখান থেকে আমার সঙ্গে পরিচয়। তৃণমূল সরকারের আমলে উনি যখন ক্ষমতা পান, তখন ওঁর অফিস স্টাফ হিসাবে আমি জয়েন করেছিলাম। সিএ হিসাবে জয়েন করেন অভিজিৎ দাস। আমি সিএ নই।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘অফিস স্টাফ কখনও সিএ হতে পারে না।’’ অমিত জানান, ২০১৬ সাল পর্যন্ত জ্যোতিপ্রিয়ের আপ্তসহায়ক ছিলেন অভিজিৎ। তার পর মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়র কোনও আপ্তসহায়ক নিযুক্ত করেননি। তবে অমিত এ-ও দাবি করেন, বাকিবুর ইসলামকে তিনি চেনেন। মাঝে মধ্যেই তাঁকে অফিসে দেখেছেন। অমিতের কথায়, ‘‘চিনতাম। বাড়িতে আসতেন না। অফিসে আসতেন। শুধু মন্ত্রীর ঘরে নয়, সব অফিসারের ঘরে যেতেন বাকিবুর। কিন্তু আমাদের মতো স্টাফরা এর বেশি বাকিবুরকে নিয়ে কিছুই জানি না।’’

অমিত আরও বলেন, ‘‘আমি দুর্নীতি নিয়ে কিছু জানি না। আমাকে সে বিষয়ে কিছু জিজ্ঞাসাও করা হয়নি। আমি যে হেতু ওঁর সঙ্গে থাকি, তাই কিছু জানি কি না, জিজ্ঞেস করা হয়েছে। আমি যতটা জানি, আধিকারিকদের বলেছি।’’ তবে সরকারি বিষয়ে তাঁর কাছে কোনও তথ্য নেই বলে দাবি করেন অমিত।

উল্লেখ্য, নাগেরবাজারের দু’টি অ্যাপার্টমেন্টে অমিতের মোট তিনটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এর মধ্যে একটি অ্যাপার্টমেন্টের নাম ‘ভালবাসা’। অন্যটির নাম ‘পারুল’। দু’টি অ্যাপার্টমেন্টের মধ্যে ৫০০-৬০০ মিটারের দূরত্ব। তবে ‘পারুল’-এর ফ্ল্যাটে এখন আর থাকেন না অমিত। ‘ভালবাসা’ অ্যাপার্টমেন্টের দু’টি ফ্ল্যাটে থাকেন তিনি। সেখানে প্রায় ১৮ ঘণ্টা তল্লাশি চালায় ইডি। এর পর শুক্রবারও ইডির দফতরে হাজিরা দিয়েছিলেন অমিত। রাতে সেখান থেকে বার হন। তার পর শনিবার ফের তাঁকে তলব করে ইডি। সকালে ইডির দফতরে পৌঁছে যান তিনি। সে দিনের পর সোমবার আবার নথি নিয়ে ইডি দফতরে যান জ্যোতিপ্রিয়-ঘনিষ্ঠ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jyotipriya Mallick ED
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE