কৃষ্ণ কল্যাণী ফাইল চিত্র
কালিয়াগঞ্জের ছায়া এ বারে এসে পড়ল পড়শি বিধানসভা কেন্দ্রের উপরে। শনিবার তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন কালিয়াগঞ্জের বিজেপি বিধায়ক সৌমেন রায়। ২৪ ঘণ্টাও কাটল না, এ বারে বেসুরো রায়গঞ্জের বিজেপি বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী। রবিবার তিনি জানিয়ে দেন, জেলায় দলের সমস্ত ধরনের কর্মসূচি থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘দলে সম্মান পাচ্ছি না। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে।’’ তিনি কি তবে তাঁর পুরনো দল তৃণমূলে ফিরছেন? সেই প্রশ্নের জবাবে কৃষ্ণ বলেন, ‘‘ভবিষ্যতে সে রকম কোনও সিদ্ধান্ত নিলে, তা সঠিক সময়ে সবাইকে জানাব।’’
বিধানসভা ভোটের ফলে দেখা যায়, বিজেপি উত্তরবঙ্গে তুলনায় ভাল ফল করেছে। ৫৪টি আসনের মধ্যে ৩০টি জিতেছে তারা। কিন্তু এর পরপরই সাংসদ থাকবেন বলে নিশীথ প্রামাণিক দিনহাটার বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন। ফলে এই অঞ্চলে দলের বিধায়ক সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ২৯-এ। সম্প্রতি দক্ষিণবঙ্গে দলে ভাঙন শুরু হওয়ার পরে উত্তরবঙ্গের বিধায়কদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন দলীয় নেতৃত্ব। সেখানে পাঁচ বিধায়ক গরহাজির ছিলেন। তখনই ভাগীরথীর উত্তর পাড়ে ভাঙনের আশঙ্কা তৈরি হয়। কিন্তু সেই পাঁচ জন নন, প্রথম দল ছাড়লেন সৌমেন। বিজেপি কমে দাঁড়াল ২৮-এ। তৃণমূল ২৪ থেকে বেড়ে ২৫। এর পরে যদি কৃষ্ণও দল ছাড়েন, তা হলে দু’দলে ব্যবধান আরও কমবে। বিজেপি সূত্রেই খবর, এর মধ্যে আরও কয়েক জন বিধায়ক দলের মধ্যে এবং ঘনিষ্ঠমহলে নিজেদের ক্ষোভ জানাতে শুরু করেছেন। বিজেপির ওই সূত্রের দাবি, এঁদের বেশিরভাগই অন্য দল থেকে এসে বিজেপির টিকিটে বিধায়ক হয়েছেন। যে পাঁচ বিধায়ক সাম্প্রতিক বৈঠকে হাজির হননি, তাঁদের কাউকে কাউকে নিয়েও সংশয় রয়েছে, বলছে দলীয় সূত্রই।
এই পরিস্থিতিতে কি কৃষ্ণকে আটকানোর চেষ্টা হবে? বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘যাঁরা সুখের পায়রা তাঁরা চলে যাচ্ছেন। ওঁরা বিজেপির কোনও দিন ছিলেন না। বিজেপিতে এসে টিকিট নিয়ে জিতে চলে যাচ্ছেন।’’ তবে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘প্রকাশ্যে সংবাদমাধ্যমে দলের নেতা, সাংসদ বা সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে বলা বিজেপি সমর্থন করছে না। দুর্ভাগ্যজনক হলেও এটা ঘটছে। কত দ্রুত এবং কী ভাবে এর সমাধান করা যায়, আমরা তা নিয়ে সাংগঠনিক স্তরে ভাবনাচিন্তা করছি।’’
বিজেপির উত্তর দিনাজপুরের জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকার বলেন, “বিধায়ক হিসেবে কৃষ্ণবাবুকে দলে যোগ্য সম্মান দেওয়া হয়। বাকি যেটুকু বোঝাপড়ার অভাব আছে, তা আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে ফেলা হবে।’’
জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, “কৃষ্ণবাবু আমাকে স্পষ্টভাবে তৃণমূলে ফেরার ইঙ্গিত দিলে আমি তা দলের রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়ে দেব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy