তিনি নেই। এবং তাঁর জায়গায় আছেন তাঁরই এক সময়ের প্রতিদ্বন্দ্বী। সেটাও তাঁর দেখানো পথেই।
‘দুয়ারে সরকার’ শিবির বসেছে বীরভূমের দুবরাজপুর ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত লোবা গ্রামে। লোবা পঞ্চায়েতের তরফে যে তোরণটি বসানো হয়েছে, তার উপরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, নীচে দু’পাশে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখের ছবি। এমন তোরণ থেকে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের ছবি আগেই সরেছিল। এ বারে সেই ‘শূন্যস্থান’ পূরণ করলেন কাজল। যদিও কাজলের কথায়, ‘‘তিনি আমার অভিভাবক। আমার রাজনৈতিক গুরু। উনি জেলা সভাপতি আছেন, থাকবেন।’’
অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ কিছু নেতা অবশ্য মনে করাচ্ছেন, সরকারি হোক বা দলীয় কোনও কর্মসূচি, অনুব্রতের ছবি থাকা এক প্রকার দস্তুর ছিল জেলায়। গত বছর অগস্টে গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পরে যত দিন গিয়েছে, ততই ‘ফিকে’ হয়েছে কেষ্টদার প্রভাব। দল সূত্রেই খবর, ‘প্রভাবশালী’ তকমা ঘোচাতে উঁচুতলা থেকেই দলীয় কর্মসূচিতে অনুব্রতের নামে স্লোগান দেওয়া বা তাঁর ছবি ব্যবহারে একসময়ে ‘নিষেধাজ্ঞা’ জারি হয়েছিল। আর এখন দলীয় বা সরকারি কর্মসূচিতে ‘ব্রাত্য’ অনুব্রত। একটা সময়ে মমতা, অভিষেকের সঙ্গে তোরণ, ফ্লেক্স বা ব্যানারে দেখা যাচ্ছিল জেলার অন্য নেতা বা মন্ত্রীর ছবি। তৃণমূল সূত্রেই জানা যাচ্ছে, পঞ্চায়েত ভোটের মুখে অনুব্রতের ছবি ফেরানোর ‘নির্দেশ’ এসেছিল ঠিকই। কিন্তু সাময়িক। ঠিক সেই সময় থেকেই ‘উত্থান’ কাজল শেখের। দলের নানুর ব্লক কমিটির কার্যকরী সভাপতি কাজলকে প্রথমবার ভোটের টিকিট দেয় দল। প্রথম বারেই বিপুল ব্যবধানে জিতে সভাধিপতি হওয়ার পরে তাঁর ‘প্রভাব’ ও ‘দাপট’ আরও বেড়েছে জেলায়। তা হলে কি অনুব্রত-পরবর্তী অধ্যায় শুরু হয়ে গিয়েছে জেলায়, যার প্রতিফলন দেখা গেল লোবা পঞ্চায়েতের তরুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে আয়োজিত দুয়ারে সরকার শিবিরের তোরণে? এলাকার এক তৃণমূল নেতা বললেন, ‘‘সময়ের দাবি মেনে চলতে হবে।’’
কোর কমিটির এক সদস্যের কথায়, ‘‘বিকাশদা এখন পদে নেই। কেষ্টদা জেলাতেই নেই! এটা মনে রাখতে হবে। এটাই বাস্তব।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)