সন্তানের পদবি মা-বাবার পদবির থেকে পুরোপুরি ভিন্ন! কোনও মহিলার বাবা-আত্মীয়ের যা নাম-পরিচয়, একই তথ্য এলাকার ষাটোর্ধ্ব অন্য এক ভোটারের! এখনকার ভোটার তালিকায় থাকা অভিভাবকের নামের সঙ্গে ২০০২-এর এসআইআর-তথ্যের কোনও মিল নেই ।
এমন বিচিত্র তথ্য বিস্মিত করছে নির্বাচনী আধিকারিকদের। ঘটনাচক্রে, এই কাজের উপরে ভর করেই প্রকাশ পাবে খসড়া ভোটার তালিকা। প্রশ্ন উঠছে, অনলাইনে তথ্য নথিবদ্ধ করার সময়ে হওয়া এই সব ‘ভুল’কি পুরোটাই অনিচ্ছাকৃত? যাচাই হচ্ছে তো ঠিকঠাক!
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, ডেটা এন্ট্রি অপারেটর নিয়োগ নিয়ে রাজ্য-নির্বাচন কমিশনের মধ্যে চাপানউতোর অব্যাহত। এর মধ্যেই বেসরকারি পেশাদার সংস্থা জেলায় জেলায় বিএলও-দের সহযোগিতা করছে অনলাইনে তথ্য নথিবদ্ধ করতে। তার মধ্যেই এমন ‘ভুল’ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এ নিয়ে কমিশনজেলা-কর্তাদের সম্প্রতি সতর্কও করেছে। কিন্তু সেই সতর্কবার্তায় কাজ না হলে সমাধান কোন পথে হবে, তার উত্তর নেই কমিশনের কাছেই!
কমিশনের নির্দেশ ছিল, চুক্তিভিত্তিক ডেটা এন্ট্রি অপারেটর নিয়োগ করা যাবে না। কারণ, এমন অপারেটরদের একাংশের বিরুদ্ধে ভোটার তালিকায় অসাধু হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছিল আগেই। তাই স্থায়ী ডেটা এন্ট্রি অপারেটর দেওয়ার সুপারিশ রাজ্যকে করেছিল তারা। এমনকি, টেন্ডার ডেকে এই নিয়োগের চেষ্টা হয়েছিল। কমিশনের অভিযোগ, কোনওটিতেই মেলেনি রাজ্যের সায়। অথচ তার বিকল্প কী ব্যবস্থা হবে, তা নিয়ে কমিশন উচ্চবাচ্য করছে না বলে দাবি জেলা-কর্তাদের। ফলে স্থানীয় ভাবেই ডেটা এন্ট্রি অপারেটরদের ডাকা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এসআইআর তালিকার সঙ্গে এখনকার ভোটার তালিকায় নাম-পরিচয়ের মিল থাকলেই কমিশনের সফটওয়্যার তা গ্রহণ করে নেবে। অনিচ্ছাকৃত কোনও ত্রুটি ধরা পড়লে তা সংশোধন করা সম্ভব। কমিশনের একাংশ দাবি করছেন, যে ত্রুটি ধরা পড়েছে, তা নজরদারি এবং তথ্য যাচাই প্রযুক্তির মাধ্যমেইসামনে এসেছে।
তথ্য বলছে, অসাধু উপায়ে এ দেশের ভোটার কার্ড পাওয়া নতুন নয়। বৈদেশিক আঞ্চলিক পঞ্জিকরণ শাখা (এফআরআরও) বিগত কয়েক মাস ধরে কয়েক হাজার এমন নাম পাঠিয়েছে কমিশনকে, যাঁরা বাংলাদেশি নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও পেয়েছেন এ দেশের ভোটার কার্ড। ফলে সর্ষের মধ্যে ভূত থেকে গিয়েছে বলে মনে করছে কমিশন। অথচ, তালিকা ত্রুটিমুক্ত রাখতে নজরদারি কতটা রয়েছে কমিশনের, আধিকারিকদের প্রশ্ন তা নিয়েও।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)