কলকাতার ক্যামাক স্ট্রিটের দফতরে এসে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দিলেন সুস্মিতা দেব। নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলে যোগ দিলেন অসমের কংগ্রেসনেত্রী সুস্মিতা দেব। সোমবার তৃণমূলের টুইটার হ্যান্ডল থেকে তাঁর যোগদানের কথা জানানো হয়েছে। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে তাঁর যোগদানের ছবিও নেটমাধ্যমে পোস্ট করা হয়। দলে যোগ দিয়েই নবান্নে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও দেখাও করেছেন সুস্মিতা। মঙ্গলবার তিনি দিল্লিতে তৃণমূলের হয়ে সাংবাদিক বৈঠকও করবেন।
সুস্মিতার মতো এক জন রাজনীতিককে হারানো কংগ্রেস নেতৃত্বের কাছে বড় ধাক্কা বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজনীতিতে তাঁর প্রভাব ও গ্রহণযোগ্যতা যথেষ্ট। তাই সুস্মিতাকে দলে পেয়ে মনে করা হচ্ছে, অসমেও শক্তি বাড়ানোর দিকে এক ধাপ এগলো তৃণমূল। সোমবার তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনর সঙ্গে অভিষেকের ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে আসেন সুষ্মিতা। সেখানেই তাঁকে উত্তরীয় পরিয়ে দলে স্বাগত জানান অভিষেক। পরে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখাও করতে যান।
কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীকে চিঠি লিখে দলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে ১৫ অগস্ট ইস্তফা দিয়েছিলেন সুস্মিতা। একটা সময় মহিলা কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতিও ছিলেন তিনি। অসমের শিলচর থেকে কংগ্রেসের সাংসদও হয়েছিলেন। তবে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে ওই কেন্দ্র থেকে পরাজিত হন। রাহুল গাঁধীর ঘনিষ্ঠ বৃত্তের মধ্যেই ছিলেন সুস্মিতা। তাঁর বাবা প্রয়াত সন্তোষমোহন দেব ছিলেন এআইসিসি-র প্রভাবশালী নেতাদের মধ্যে অন্যতম। বাবার হাত ধরেই রাজনীতিতে এসেছিলেন তিনি।
সনিয়াকে লেখা চিঠিতে সুস্মিতা লিখেছেন, ‘জাতীয় কংগ্রেসের সঙ্গে তিন দশকের সম্পর্ক শেষ করছি। আমার পাশে থাকার জন্য সতীর্থ ও দলের নেতা-মন্ত্রীদের ধন্যবাদ। তিন দশকের স্মৃতি আমি সারা জীবন মনে রাখব।’ এ ছাড়া পথ প্রদর্শন ও সহযোগিতার জন্য সনিয়াকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন সুস্মিতা। ২০১৪ সালে শিলচরের সাংসদ হয়েছিলেন সুস্মিতা। তবে সাম্প্রতিক সময়ে প্রার্থী নির্বাচন ও দলে তাঁর মতামতকে গুরুত্ব না দেওয়ায় দলের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বেড়েছিল বলে রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত। আরও একটি জল্পনা উঠে আসছে। তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন সুস্মিতা। ত্রিপুরার পরে অসমে নিজেদের পায়ের তলার মাটি শক্ত করার চেষ্টা করছে তৃণমূল।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, অসমের একাধিক নেতার সঙ্গে তাদের যোগদানের বিষয়ে আলোচনা চলছে। রাইজর দলের নেতা অখিল গগৈকে অসম প্রদেশতৃণমূলের সভাপতিত্বের প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি তা নিতে চাননি। আবার কোকড়াঝাড়ের নির্দল সাংসদ নবকুমার সারানিয়াকেও তৃণমূলে যোগদানের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ কিরিপ চালিহাও তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছেন। তার মধ্যেই সুস্মিতার তৃণমূলে যোগদান, অসমের রাজনীতিতে তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা বলেই মনে করছেন অনেকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy