Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

সারদা যোগে এ বার ধৃত অসমের গায়ক সদানন্দ

এ রাজ্যে নিয়ে এসে জেরা করা হচ্ছিল তাঁকে। শুক্রবার অসমের গায়ক সদানন্দ গগৈকে গ্রেফতারই করল সিবিআই। সদানন্দ অসমের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার বিশেষ ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। কংগ্রেস নেতা হিমন্ত, অসমের প্রাক্তন প্রাক্তন ডিজি শঙ্কর বরুয়া-সহ সে রাজ্যের বহু প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে টাকার বিনিময়ে সুদীপ্তর যোগাযোগ ঘটিয়ে দিয়েছিলেন তিনি এমনই জেনেছে সিবিআই।

সিবিআই দফতর থেকে বেরোচ্ছেন সদানন্দ। শুক্রবার। ছবি: শৌভিক দে।

সিবিআই দফতর থেকে বেরোচ্ছেন সদানন্দ। শুক্রবার। ছবি: শৌভিক দে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:৩৪
Share: Save:

এ রাজ্যে নিয়ে এসে জেরা করা হচ্ছিল তাঁকে। শুক্রবার অসমের গায়ক সদানন্দ গগৈকে গ্রেফতারই করল সিবিআই।

সদানন্দ অসমের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার বিশেষ ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। কংগ্রেস নেতা হিমন্ত, অসমের প্রাক্তন প্রাক্তন ডিজি শঙ্কর বরুয়া-সহ সে রাজ্যের বহু প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে টাকার বিনিময়ে সুদীপ্তর যোগাযোগ ঘটিয়ে দিয়েছিলেন তিনি এমনই জেনেছে সিবিআই। ইতিমধ্যেই হিমন্ত, শঙ্কর-সহ অসমের প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রী অঞ্জন দত্ত, কংগ্রেস সাংসদ মাতঙ্গ সিংহ, তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী মনোরঞ্জনা সিংহের অফিস ও বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে সিবিআই। কলকাতায় ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় মনোরঞ্জনাকে। তদন্তকারীদের মতে, এদের সবার সঙ্গে সারদার যোগসূত্র ছিলেন সদানন্দই।

শুধু তাই নয়। অভিযোগ উঠেছে, অসমে সারদার বিস্কুট কারখানা তৈরির জন্য হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে দু’কোটি টাকা দেওয়ার কথা ছিল সুদীপ্তর। সেই টাকা তিনি সদানন্দের হাতে দিয়েই পাঠিয়েছিলেন। যদিও হিমন্তের দাবি, তিনি এক টাকাও পাননি। পুরো টাকাটাই সদানন্দ আত্মসাৎ করেছিলেন। সারদার বিস্কুট নিয়ে ‘অ্যাড ফিল্ম’ তৈরির জন্যও সদানন্দ সুদীপ্তর কাছ থেকে চার কোটি টাকা নিয়েছিলেন বলে সিবিআই জেনেছে। কিন্তু সেই অ্যাড ফিল্ম তৈরিই হয়নি।

সদানন্দকে ধরে সারদা মামলায় সিবিআই এই নিয়ে কলকাতায় মোট চার জনকে গ্রেফতার করল। এর মধ্যে ইস্টবেঙ্গল-কর্তা দেবব্রত সরকার এবং ব্যবসায়ী সন্ধির অগ্রবালকে গ্রেফতার করা হয়েছে সেবির সঙ্গে তাঁরা কী ধরনের ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন তা জানার জন্য। রাজ্যের প্রাক্তন ডিজি, রজত মজুমদার গ্রেফতার হয়েছেন সারদার সঙ্গে তৃণমূলের যোগাযোগের বিষয়ে বিশদ জানার জন্য। এদিন গগৈ-কে ধরা হল অসমে ষড়যন্ত্রের জাল কতটা বিস্তৃত সেটা বোঝার জন্য।

গত ২৯ অগস্ট সদানন্দকে কলকাতায় নিয়ে এসে একটানা বেশ কয়েক দিন জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। কলকাতার একটি হোটেলেই থাকছিলেন তিনি। মাঝে অসুস্থতার জন্য অসমে ফিরে যান। সদানন্দের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, একদা ভূপেন হজারিকার ঘনিষ্ঠ, ৫২ বছরের সদানন্দের ইতিমধ্যেই দু’-দু’বার হার্ট অ্যাটাক হয়ে গিয়েছে। অসমে ফিরে নার্সিংহোমেও ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। দিন তিনেক আগে আবার তাঁকে ডেকে পাঠায় সিবিআই। শুক্রবার সকালে তিনি হাজিরা দেন সিবিআই দফতরে। বিকেলে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।

সদানন্দ ছাড়া এ দিন সিবিআই দফতরে নিয়ে আসা হয়েছিল রজত মজুমদারকেও। সকাল ন’টা থেকে প্রায় ১২ ঘণ্টা সিবিআই দফতরে নিয়ে রাখা হয় তাঁকে। বৃহস্পতিবার রজতবাবু বলেছিলেন, “মমতা-মুকুলকে টাকা দিয়েছি, তা বলাতে পারবেন না।” এ দিন রাতে সিবিআই দফতর থেকে বের হওয়ার সময় তিনি বলেন, “আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার মতো সময় ছিল না সিবিআইয়ের। সারা দিন ধরে বসিয়েই রেখেছে।” সিবিআই সূত্রে অবশ্য খবর, সারা দিন বিভিন্ন প্রশ্ন করা হয়েছে তাঁকে। কিন্তু মুখে কুলুপ এঁটে বসেছিলেন প্রাক্তন ডিজি। তৃণমূলের দুই শীর্ষ নেতা-নেত্রীর সঙ্গে তাঁর কী ভাবে যোগাযোগ হল সে সবও প্রশ্ন করা হয়। তিনি এখনও রা কাড়েননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE