Advertisement
E-Paper

রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলা: তদন্তকারীদের নজরে বালু, বাকিবুর ছাড়াও দু’ডজন ফোন, এক ডজন সংস্থা

মোবাইলগুলি বাজেয়াপ্ত করার পর সেগুলির মাধ্যমে কী নিয়ে কথোপকথন হয়েছে, টাকা লেনদেনের বিষয়ে কথা হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে চাইছে ইডি। ইডির নজরে রয়েছে ১২টি সংস্থার কাজকর্মও।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২৩ ১২:০৮
At least two dozen mobile phones and one dozen company on ED radar in Ration distribution case

জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (বাঁ দিকে) এবং বাকিবুর রহমান। —ফাইল চিত্র।

রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলার তদন্তে ইডির তদন্তকারীদের নজরে অন্তত দু’ডজন মোবাইল ফোন এবং প্রায় এক ডজন সংস্থা! কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটির সূত্রে এমনই জানা গিয়েছে। মোবাইলগুলি বাজেয়াপ্ত করার পর সেগুলির মাধ্যমে কী বিষয়ে কথোপকথন হয়েছে, টাকা লেনদেনের বিষয়ে কথা হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে চাইছে ইডি। এর পাশাপাশি ইডির আতশকাচের তলায় রয়েছে ১২টি সংস্থার কাজকর্মও।

রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলার তদন্তে এখনও পর্যন্ত দু’দফায় তল্লাশি চালিয়েছে ইডি। প্রথমে মন্ত্রী-ঘনিষ্ঠ বাকিবুর রহমান, তাঁর শ্যালক অভিষেক বিশ্বাসের ফ্ল্যাটে। পরে তল্লাশি চালানো হয় বনমন্ত্রী তথা প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সল্টলেকের ফ্ল্যাটে। তল্লাশি চালানো হয় মন্ত্রীর আপ্তসহায়ক অমিত দে এবং প্রাক্তন আপ্তসহায়ক অভিজিৎ দাসের বাড়িতেও। বাকিবুর এবং জ্যোতিপ্রিয় (যিনি বালু নামে সমধিক পরিচিত) এবং তাঁর ঘনিষ্ঠদের জেরা করেই এই দু’ডজন মোবাইল এবং এক ডজন সংস্থার সন্ধান পান তদন্তকারীরা।

এর আগে ইডির তরফে দাবি করা হয়েছিল যে, বাকিবুরের সঙ্গে তাঁর কর্মীদের যে হোয়াট্‌সঅ্যাপ চ্যাট চালাচালি হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখে তদন্তকারীরা জানতে পারেন যে, দু’দফায় জ্যোতিপ্রিয়কে মোট ৮০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল। বাকিবুরের তরফে জনৈক ‘এমআইসি’কে টাকা দেওয়ার তথ্য আসে তদন্তকারীদের হাতে। ইডির দাবি, এই ‘এমআইসি’-র অর্থ ‘মিনিস্টার ইন চার্জ’ অর্থাৎ ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী। তিনি আর কেউ নন, খোদ জ্যোতিপ্রিয়। এই সূত্র ধরেই ওই দু’ডজন ফোনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

অন্য দিকে, ইডি প্রাথমিক ভাবে মনে করছে বিভিন্ন সংস্থা খুলে রেশন বণ্টন ‘দুর্নীতি’র টাকা অন্য নানা ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করা হয়েছে। মূলত শেয়ার কেনাবেচার জন্যই সংস্থাগুলি খোলা হয়েছিল বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। ওই সংস্থাগুলির মধ্যে বেশ কিছু সংস্থায় প্রাক্তন ডিরেক্টর ছিলেন মন্ত্রীর স্ত্রী এবং কন্যা। বেশ কিছু সংস্থার কাজকর্ম আবার বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই বিষয়ে সবিস্তারে তথ্য পেতে খোঁজখবর চালাচ্ছেন ইডি আধিকারিকেরা। রেশনের গম এবং আটা খোলা বাজারে বিক্রির ক্ষেত্রে ফোন মারফত কোনও কথা হয়েছে কি না, হলে কাদের সঙ্গে হয়েছে, তা-ও খতিয়ে দেখার চেষ্টা চলছে।

ইডি সূত্রে আগেই জানা গিয়েছিল, পার্ক স্ট্রিট, নিউ টাউন-রাজারহাট এলাকায় ফ্ল্যাট রয়েছে বাকিবুরের। এ ছাড়াও আরও একাধিক জায়গায় মোট আট থেকে ন’টি ফ্ল্যাটের হদিস মেলে। বিভিন্ন সংস্থায় বাকিবুরের শেয়ার রয়েছে। এমন মোট ছ’টি সংস্থার কথা জানতে পারেন ইডি আধিকারিকেরা। কেন্দ্রীয় সংস্থা সূত্রে জানা যায়, ওই ছ’টি সংস্থায় বাকিবুরের শেয়ারের পরিমাণ সাড়ে ৫০ কোটি টাকারও বেশি।

রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় ধৃত বাকিবুরের সঙ্গে মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়ের ‘পারিবারিক সম্পর্ক’-এরও হদিস পেয়েছে ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, দুই পরিবারের সদস্যেরা একযোগে একাধিক সংস্থা চালাতেন। ওই সব সংস্থা আবার বিভিন্ন ভুয়ো সংস্থায় কোটি কোটি টাকার বিনিয়োগও করত বলেও অভিযোগ রয়েছে! কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছে, আপাতত এ রকম তিন সংস্থার খোঁজ পেয়েছেন তদন্তকারীরা।

ওই তিন সংস্থা হল— ‘শ্রী হনুমান রিয়েলকন প্রাইভেট লিমিটেড’, ‘গ্রেসিয়াস ইনোভেটিভ প্রাইভেট লিমিটেড’ এবং ‘গ্রেসিয়াস ক্রিয়েশন প্রাইভেট লিমিটেড’। ইডির সূত্রের দাবি, তিন সংস্থার মারফত ভুয়ো কোম্পানির মাধ্যমে বিনিয়োগ করা হয়েছে অন্তত ১২ কোটি টাকা। ঘটনাচক্রে, প্রত্যেকটি সংস্থাতেই কোনও না কোনও ভাবে মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় এবং বাকিবুরের পরিবারের যোগ রয়েছে। ইডি এ-ও দাবি করেছে, জ্যোতিপ্রিয়ের পরিবারের সদস্যদের সংস্থার সঙ্গে তাঁর আর্থিক লেনদেন হয়েছিল বলে জেরায় কবুল করেছেন বাকিবুর।

Jyotipriya Mallick Bakibur Rahaman ED
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy