ভুয়ো ড্রাইভিং লাইসেন্স বানিয়ে ভারতে অবৈধ ভাবে বসবাস করা এক বাংলাদেশিকে সম্প্রতি গ্রেফতার করেছে কালীঘাট থানার পুলিশ। ওই ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে উঠে এসেছে, ধৃত আজাদ শেখ পরিবহণ দফতরের কসবার কার্যালয় থেকে ড্রাইভিং লাইসেন্স বার করেছিল। প্রাথমিক ভাবে অনলাইনে শিক্ষানবিশ (লার্নার) লাইসেন্স পাওয়ার পরে কসবায় গিয়ে সশরীরে গাড়ি চালানোর পরীক্ষায় পাশ করে পুরোদস্তুর লাইসেন্স পেয়ে যায় সে। গোটা ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে উঠে আসা তথ্য লাইসেন্স দেওয়ার চালু প্রক্রিয়াকেই প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে।
তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ধৃত আজাদ উত্তর ২৪ পরগনার এক ব্যক্তির আত্মীয় পরিচয় দিয়ে আধার কার্ড বার করে। এর পরে ওই কার্ড ব্যবহার করে অনলাইনে শিক্ষানবিশ লাইসেন্সের জন্য আবেদন জানায়। পুলিশের ধারণা, কোনও সাইবার ক্যাফে অথবা মোটর ট্রেনিং স্কুলের লোকজনের সাহায্য নিয়ে অনলাইনে আবেদনপত্র সম্পূর্ণ করে আজাদ। পরে ঘরে বসে অনলাইনে পরীক্ষা দেওয়ার প্রাথমিক ধাপগুলি সেরে ফেলে এবং ওই পরীক্ষা দিয়ে শিক্ষানবিশ লাইসেন্স পেয়ে যায়। পরিবহণ দফতরের আধিকারিকদের একাংশের মতে, লাইসেন্স প্রদান প্রক্রিয়াকে সহজ করতে গিয়ে আসল-নকল বিচারের ছাঁকনি আলগা হয়ে যাওয়াতেই এমন ঘটনা ঘটেছে।
আজাদের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, সে উত্তর ২৪ পরগনার ওই ব্যক্তির বাড়িতে বসে ই-কেওয়াইসি ব্যবস্থার মাধ্যমে পরিচয়পত্র দাখিল করে। এর পরে সশরীরে গাড়ি চালানোর পরীক্ষায় ওই যুবককে সমস্যায় পড়তে হয়নি। কারণ, এই পরীক্ষায় আলাদা করে নথি যাচাইয়ের সুযোগ থাকে না। মূলত সেখানে গাড়ি চালানোর দক্ষতা যাচাই করা হয়।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সমস্যা মেটাতে পরিবহণ দফতরের আধিকারিকদের একাংশ লাইসেন্স পাওয়ার প্রাথমিক আবেদন করা থেকে পরীক্ষা দেওয়া পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়াকে নজরদারির আওতায় আনার পক্ষপাতী। তাঁদের মতে, এমন ব্যবস্থা করা হোক, যাতে সশরীরে হাজিরা না দিলে কেউ শিক্ষানবিশ লাইসেন্সও না পান। পুরো প্রক্রিয়ার ফাঁকফোকর উদ্বেগ বাড়িয়েছে পরিবহণ দফতরের।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)