Advertisement
E-Paper

বিশ্ব জুড়ে মাতৃ আরাধনার আঁধারে লুকিয়ে বর্ধমানের এক দীনদুঃখী মায়ের কাহিনি

কিন্তু এই পথ তাঁর কাছে নতুন তাই নিয়ম জানা নেই তাঁর। তবুও বসে থাকেন মন্দিরের কোণে যদি কেউ এই তাঁকে সাহায্য করে যান।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০২:২৫
ভিক্ষে করতে মন্দিরে বসে ভগবতী গড়াই।

ভিক্ষে করতে মন্দিরে বসে ভগবতী গড়াই। ফাইল চিত্র।

সমগ্র বাংলা যখন মাতৃ আরাধনায় ব্যস্ত, তখন বর্ধমানের রাঢজননী সর্বমঙ্গলা মন্দিরের এক কোণে বসে ডুকরে কাঁদছেন রক্তমাংসে গড়া আরও এক মা। মন্দিরের বাইরে বসে আছেন হাত পেতে, যদি স্বহৃদয় কোনও ব্যক্তি সাহায্য করে যায়, সেই আশায়। তাহলে তাঁর অকেজো একমাত্র ছেলের মুখে দুটো ভাত জুটবে।

নাম ভগবতী গড়াই, বাড়ি যজ্ঞেশ্বরডিহি গ্রামে। বেশ কিছু বছর আগেও লোকের বাড়িতে বাড়িতে কাজ করে দিব্বি চলে যাচ্ছিল তাঁর। কিন্তু অশীতিপর এই বৃদ্ধার শরীরে এখন জাঁকিয়ে বসেছে বার্ধক্য। আর লোকের বাড়িতে কাজ করতে পারেন না। তাই আর কোনও উপায় নেই দেখে ভিক্ষে করার পথ বেছে নিয়েছেন।

কিন্তু এই পথ তাঁর কাছে নতুন তাই নিয়ম জানা নেই তাঁর। তবুও বসে থাকেন মন্দিরের কোণে যদি কেউ এই তাঁকে সাহায্য করে যান।

ভগবতী গড়াইয়ের স্বামী মৃত্যুঞ্জয় গড়াই ছিলেন ছোটখাট চাষী। দুই ছেলে এবং এক মেয়ে কি নিয়ে ভালই চলছিল তাঁদের সংসার। বেশ কিছু জমি ছিল তাঁদের। এমন খারাপ অবস্থা তাঁদের হওয়ার কথা ছিল না। স্বামীর জন্য একসময় সেই সব জমি বিক্রি হয়ে যায়। এখন মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুও নেই। বড় ছেলে মারা যান। তাঁর ছেলে ও বিধবা স্ত্রী থাকেন কাঞ্চননগরে। মেয়ের বিয়ে হয়েছে গ্রাম থেকে বেশ কিছুটা দূরে ভাতছালা পাড়ায়। মেয়েরও অবস্থা অতটাও সচ্ছল নয় যে মা আর ভাইকে তাঁদের কাছে নিয়ে গিয়ে রাখবে। তাই ছোট ছেলেকে নিয়ে এক ব্যক্তির দয়ায় ভগবতীর এখন ঠাই বাড়ির উপান্তে।

ছোট ছেলে জন্ডিসে আক্রান্ত হয়ে এখন পুরোপুরি অচল। কাজকর্ম করে খাওয়ার ক্ষমতা নেই তাঁর। বেশ কিছুদিন হাসপাতালে ভর্তিও ছিলেন তিনি। অভাবের সংসারে চিকিৎসা করানোর সামর্থ নেই, তাই ছেলেকে নিয়ে বাড়িতেই রেখে দিয়েছেন।

এক দিনদুঃখী মায়ের জীবনের কথা শুনেছেন কেউ কেউ, তাঁদের মধ্যে একজন হলেন জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি দেবু টুডু। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন আপ্রাণ চেষ্টা করবেন ভগবতীকে সাহায্য করার।

এছাড়াও এই অভাগী মায়ের কথা জানতে পারেন পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার। সঙ্গে সঙ্গে তিনি এক মাসের খাদ্যসামগ্রী, ছোট রান্নার গ্যাস ও আভেন, শাড়ি-সহ বেশ কিছু উপহার তার হাতে তুলে দেন।

Bardhaman Durga Puja 2025
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy