কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়। ফাইল ছবি।
কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাধন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি-সহ নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে টানা আন্দোলন-বিক্ষোভ চালাচ্ছেন শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী ও আধিকারিকদের বড় অংশ। গত ১৩ মার্চ থেকে চলছে এই পরিস্থিতি। এই অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের স্বাভাবিক অবস্থা ফেরাতে গত ১, ২, ৩ এপ্রিল, তিন দফায় কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন উপাচার্য। যদিও, আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তাঁদের দাবি পূরণ না হলেআন্দোলন চলবে।
আন্দোলনকারীদের দাবি, উপাচার্যকে পদত্যাগ করতে হবে, তাঁকে যে ফের উপাচার্য হিসাবে পুনর্নিয়োগ করা হয়েছিল, সে চিঠি দেখাতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার চন্দন কোনারকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। ইতিমধ্যে কলকাতা হাই কোর্ট রেজিস্ট্রারকে বরখাস্তের সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ দেয়। তবে তাতেও আন্দোলনের ঝাঁঝ কমেনি।
এ দিকে, প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কাজ, পড়াশোনায় সমস্যা হচ্ছে অভিযোগ করে মঙ্গলবার ফের বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থা ফেরানোর আহ্বান জানিয়েছেন উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী। তাঁর দাবি, “সম্পূর্ণ বেআইনি-বিক্ষোভ চলছে। পড়ুয়ারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। উচ্চ মাধ্যমিক ফলপ্রকাশের পরে কলেজের ভর্তি প্রক্রীয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে, তা বিঘ্নিত হতে পারে। তাই স্বাভাবিক অবস্থা ফেরানোর আর্জি জানিয়েছি।”
আসানসোলের দু’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিবি কলেজ এবং বিসি কলেজের দুই অধ্যক্ষ যথাক্রমে অমিতাভ বসু এবং ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়েরা জানাচ্ছেন, যে পরিস্থিতি চলছে, তা কাম্য নয়। পড়ুয়া-স্বার্থ দেখা দরকার। এ বার রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় ভাবে অনলাইনে কলেজের ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পাদন করবে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি এই প্রক্রিয়ায় নোডাল এজেন্ট নিযুক্ত হবে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি ঠিক না থাকলে, প্রশাসনিক কাজ ব্যাহত হবে। প্রভাব পড়বে ভর্তি প্রক্রিয়ায়। রানিগঞ্জ টিডিবি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ শীতল গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “কাজ করতে গিয়ে মতান্তর হতে পারে। কিন্তু তা বলে দু’পক্ষের এই মনান্তরে অচলাবস্থা তৈরি হওয়া ঠিক নয়। দ্রুত এই অবস্থা কাটিয়ে তোলা দরকার।”
যদিও, বিক্ষোভকারীদের অন্যতম নেতা তথা ওয়েবকুপার বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক সজল ভট্টচার্যের দাবি, “আমরা নিজেদের দাবিতে অনড়। দাবিগুলি মানা না হলে অবস্থান-বিক্ষোভ চলবে।” সজল-সহ বিক্ষোভকারী শিক্ষকদের একাংশ দাবি করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠনপাঠন, গবেষণা স্বাভাবিক ভাবেই চলছে। প্রশাসনিক কাজ কিছুটা ব্যাহত হলেও উদ্বেগের কিছু নেই। পাশাপাশি, বিশ্ববিদ্যালয়ে এই পরিস্থিতি তৈরির জন্য সজলকে দায়ী করে সম্প্রতি তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছিলেন উপাচার্য। সজল জানান, সে চিঠির উত্তর দেওয়া হয়েছে। যদিও উপাচার্যের দাবি, উত্তরে সন্তুষ্ট হননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy