E-Paper

জলে লড়াই, কুমিরের মৃত্যু রমনাবাগানে

রমনাবাগানের একটি জলাশয়ে দু’টি পুরুষ ও দু’টি মহিলা কুমির ছিল। পুরুষ কুমির দু’টি নিজেদের মধ্যে ক্রমাগত মারপিট করত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২৫ ১০:৩০
মৃত কুমির।

মৃত কুমির। নিজস্ব চিত্র।

‘জলে কুমির, ডাঙায় বাঘ’...

দু’মুখো ভয় পাওয়ার পরিস্থিতিতে এই আপ্তবাক্যটি প্রায়ই ব্যবহার করা হয়। কিন্তু তা মানুষের ক্ষেত্রে। কুমিরের ক্ষেত্রেও যে কখনও ‘জলে কুমির’ ব্যাপারটা উদ্বেগের হতে পারে, তা দেখাল বর্ধমানের রমনাবাগান জুলজিক্যাল পার্ক। জলেও জায়গা দখল, নাকি সঙ্গিনীর মন পাওয়ার লড়াইয়ে প্রাণ গেল একটি পুরুষ কুমিরের, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

রমনাবাগানের একটি জলাশয়ে দু’টি পুরুষ ও দু’টি মহিলা কুমির ছিল। পুরুষ কুমির দু’টি নিজেদের মধ্যে ক্রমাগত মারপিট করত। মঙ্গলবার দুপুরে চিড়িয়াখানার জলাশয়ে মৃত অবস্থায় একটি পুরুষ কুমিরটিকে ভাসতে দেখা যায়। সেটিকে তুলে ময়না তদন্তে পাঠানো হয়। বুধবার রিপোর্টে জানা গিয়েছে, মৃত কুমিরের সারা শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন, কামড়ের দাগ রয়েছে। পূর্ব বর্ধমানের বনাধিকারিক (ডিএফও) সঞ্চিতা শর্মা জানিয়েছেন, কুমিরের দল নিজেদের মধ্যেই মারপিট করেছে। ময়না তদন্তের রিপোর্টে মৃত কুমিরের শরীরে প্রচুর আঘাতের চিহ্ন মিলেছে।

কুমির বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ‘সঙ্গিনী’র মন পাওয়ার জন্য পুরুষ কুমিরেরা অনেক সময় নিজেদের মধ্যে মারপিট করে। সম্ভবত সোমবার দিনভর লড়াই চলেছে। সেই চোট সহ্য করতে না পেরেই মারা গিয়েছে একটি। মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে কুমিরের দেহাংশের নমুনা কলকাতায় পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে।

ওই দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা বলেন, “জানতে পেরেছি, নিজেদের মধ্যেই মারপিট করে ওই কুমিরটি মারা গিয়েছে। পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।”

রমনাবাগান সূত্রে জানা যায়, দু’টি কুমির ছিল। তিন বছর আগে আরও তিনটি কুমির আলিপুর চিড়িয়াখানা থেকে আনা হয়। তিনটে পুরুষ কুমির ও দু’টি মহিলা কুমির একটি জলাশয়েই ছিল। মাস ছ’য়েক আগে বড় পুরুষ কুমিরদের সঙ্গে মারপিট করে আড়াই-তিন বছরের কুমিরটি গুরুতর জখম হয়। তাকে অন্য জলাশয়ে রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে চিড়িয়াখানার কর্মীরা খাবার দিতে গিয়ে দেখেন, একটি কুমির জলে ভেসেই রয়েছে। সন্দেহ হওয়ায় তুলে দেখা যায়, গোটা শরীরে দাঁত আর নখের আঘাত। একাধিক জায়গা থেকে রক্ত বার হচ্ছে। রমনাবাগানের চিকিৎসক তপন ঘোষ বলেন, “সঙ্গিনীদের মন পেতে পুরুষ কুমিরেরা নিজেদের মধ্যে লড়াই করে। প্রাথমিক ভাবে আমাদের অনুমান, ওই লড়াই থেকেই কুমিরের মৃত্যু হয়েছে। শরীরের ভিতরের অংশে কোনও আঘাতের পাওয়া যায়নি।’’

সরীসৃপবিদ অনির্বাণ চৌধুরীর মতে, ‘‘যে বয়সে কুমিরগুলি রয়েছে, তাতে আমার ধারণা জায়গা দখল করা নিয়ে মারপিট হয়েছে। অনেক সময় পুরুষ ও মহিলা কুমিরেরা অন্য পুরুষ কুমিরকে সহ্য করতে পারে না। তখনই মারপিট হয়। এটা বিরল কিছু নয়।’’

রমনাবাগানে থাকা তিনটে চিতাও চর্মরোগে আক্রান্ত হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। বয়সজনিত কারণে একটি চিতা এখনও অসুস্থ, বাকি দু’টি সুস্থ হয়ে গিয়েছে বলে ডিএফও জানিয়েছেন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Crocodile Ramnabagan Zoological Park

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy