E-Paper

দু’বার বিক্রি, দু’বছর পর উদ্ধার নাবালিকা

একটি খালের ধারে কয়েক হাত জায়গায় টিন ও অ্যাসবেস্টসের ছাউনি দেওয়া ইটের ঘর। রায়নার এক গ্রামে পাকা রাস্তা থেকে কয়েক ফুট কাদামাখা পথ পেরিয়ে ওই ঘরই নাবালিকার পরিবারের বাসস্থান।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২৫ ০৮:০৬

—প্রতীকী চিত্র।

দু’বছর আগে হঠাৎই নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল বছর চোদ্দোর মেয়েটি। যখন খোঁজ মিলল, তার মধ্যে দু’বার বিক্রি করা হয়েছে তাকে। শেষে ঠাঁই হয়েছে রাজস্থানের পালিতে। বিয়ে দেওয়ার জন্য বয়স ভাঁড়িয়ে সেখানকার আদালতে হলফনামা দিয়ে ‘সাবালিকাও’ করে দেওয়া হয়েছে পূর্ব বর্ধমানের সেই মেয়েকে। শনিবার রাজস্থানের পালি জেলা থেকে তাকে উদ্ধার এবং এক মহিলা-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই।

একটি খালের ধারে কয়েক হাত জায়গায় টিন ও অ্যাসবেস্টসের ছাউনি দেওয়া ইটের ঘর। রায়নার এক গ্রামে পাকা রাস্তা থেকে কয়েক ফুট কাদামাখা পথ পেরিয়ে ওই ঘরই নাবালিকার পরিবারের বাসস্থান। বৃষ্টিতে ঘরে জল ঢুকে যাওয়ার দাগ সেখানে। তিন বোনের মধ্যে ওই নাবালিকা মেজো। দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বোন স্কুলে পড়ে। মা বলেন, “দু’বছর পরে ভিডিয়ো কলে মেয়েকে দেখে অঝোরে কেঁদেছি। কথা বলার তেমন সুযোগ পাইনি। মেয়ে অবশ্য শান্ত ছিল। ওকে খুঁজে পাওয়ায় চিন্তা একটু কেটেছে।”

২০২৩ সালের ৯ অগস্ট গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে যাওয়ার কথা বলে নবম শ্রেণির ছাত্রী ওই নাবালিকা বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। আর ফেরেনি। প্রথমে রায়না থানার পুলিশ তদন্ত নেমে অপহরণের অভিযোগে খণ্ডঘোষের দুই যুবককে গ্রেফতার করে। দু’দফায় তাদের হেফাজতে নিয়েও, মেয়েটির খোঁজ পায়নি পুলিশ। এর পরে সিআইডি-র ‘অ্যান্টি হিউম্যান ট্র্যাফিকিং’ ইউনিট তদন্তে নামলেও, হদিস মেলেনি। শেষে নাবালিকার মায়ের আর্জি মেনে, হাই কোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের নির্দেশে, ২০২৪ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি সিবিআই তদন্তভার নেয়। সিবিআইয়ের বিশেষ অপরাধ দমন শাখার ডিএসপি রাজেন্দ্র হেমন্ত কুজুর তদন্ত শুরু করেন।

সিবিআই জানিয়েছে, নানা সূত্রে বেশ কিছু তথ্য মেলার পরে, কয়েকটি ফোন নম্বরে নজর রাখা শুরু হয়। তার সূত্র ধরে এগিয়েই সন্ধান মেলে। রাজস্থানে ধৃতদের এক জনের বাড়ি থেকেই উদ্ধার করা হয়েছে মেয়েটিকে। সিবিআই সেখানকার আদালতে জানিয়েছে, এই ঘটনার পিছনে নারী পাচার, মানব পাচার চক্রের ভূমিকা থাকতে পারে।

আজ, সোমবার ধৃত পাঁচ জন ও মেয়েটিকে বর্ধমান আদালতে তোলার কথা। সিবিআইয়ের দাবি, ওই ধৃতেরা ছাড়াও, মেয়েটিকে পাচারে জড়িত পূর্ব বর্ধমানের কয়েক জন। তাদেরও খোঁজ চলছে। রবিবার নাবালিকার মা বলেন, “দেরিতে হলেও, সিবিআই আমার মেয়েকে ফিরিয়ে আনছে। এখন বাড়ি এসে পৌঁছলেই শান্তি।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Minor Abuse Missing Bardhaman CBI Investigation arrest

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy