Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

কাটমানি না ফেরালে চাষ বন্ধের নিদান

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সভায় গ্রামবাসীরা ছাড়াও হাজির ছিলেন তৃণমূলের দুই বুথ সভাপতি বিনয় মণ্ডল এবং গ্রামের জনা দশেক তৃণমূল কর্মী। সেখানে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগের কথা জানান গ্রামবাসীরা।

দেয়াশা গ্রামে সভা। নিজস্ব চিত্র

দেয়াশা গ্রামে সভা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদতাতা
আউশগ্রাম শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৯ ০০:১১
Share: Save:

প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরেও ‘কাটমানি’র টাকা ফেরত না পাওয়ায় তৃণমূল নেতাদের চাষ বন্ধের ফতোয়া জারি করার অভিযোগ উঠেছে গ্রামের একাংশ বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে। আউশগ্রাম ১ ব্লকের গুসকরা ২ পঞ্চায়েত এলাকার দেয়াশা গ্রামের ঘটনা। তৃণমূলের অভিযোগ, মঙ্গলবার গ্রামের ধর্মরাজতলায় গ্রামবাসীদের একাংশ কাটমানি নিয়ে একটি সভা ডাকে। সেখানেই এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। ওই নেতাদের চাষের কাজে সমস্ত রকম সাহায্য করতে নিষেধ করা হয় গ্রামবাসীদের। তৃণমূলের গুসকরা ২ অঞ্চল সভাপতি তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “কারও কোনও অভিযোগ থাকলে প্রশাসনের কাছে জানাক। চাষের সময় এ ভাবে গ্রামের তৃণমূল কর্মীদের চাষ বন্ধ করে দেওয়াটা অমানবিক।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সভায় গ্রামবাসীরা ছাড়াও হাজির ছিলেন তৃণমূলের দুই বুথ সভাপতি বিনয় মণ্ডল এবং গ্রামের জনা দশেক তৃণমূল কর্মী। সেখানে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগের কথা জানান গ্রামবাসীরা। কোন নেতা, কত টাকা নিয়েছেন সে হিসেবও দেওয়া হয়। তাঁদের দাবি, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি দেওয়ার নামে গ্রামের মানুষের কাছ থেকে দশ হাজার টাকা করে তোলা হয়েছে। তৃণমূল নেতারা প্রকাশ্যে টাকা দেওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন বলেও তাঁদের দাবি। তবে সেই টাকা ফেরত দিতে পারবেন না বলেও সভাতেই নেতারা জানিয়ে দেন বলে গ্রামবাসীদের দাবি। অভিযোগ, এর পরেই টাকা ফেরত না পাওয়া পর্যন্ত চাষ বন্ধ রাখার নিদান দেওয়া হয়।

স্থানীয় সমর ঘোষ, বিমল মুখোপাধ্যায়, বৃন্দাবন বাগদিদের দাবি, সুষ্ঠু ভাবে বিষয়টা মেটাতে চেয়ে সভা ডাকা হয়েছিল। কিন্তু তৃণমূলের নেতারা সহযোগিতা করেননি। গ্রামবাসীদের দাবি, ঠিক হয়েছে, ওই নেতাদের জমিতে চাষের কাজে কেউ সাহায্য করবে না, বাইরে থেকে শ্রমিক আনলেও মাঠে নামতে দেওয়া হবে না।

অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা বিনয় মণ্ডলের দাবি, “যাঁরা বাংলার আবাস যোজনায় বাড়ি পেয়েছিলেন, তাঁদের কাছ থেকে আমরা চাঁদা নিয়েছিলাম। তখন মানুষ স্বেচ্ছায় টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু ফেরত চাইছেন।’’ তাঁর আরও দাবি, ওই টাকা দলের চাঁদা হিসাবে নেওয়া হয়েছিল। দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে তা খরচও হয়ে গিয়েছে। এখন টাকা ফেরত দেওয়া সম্ভব না। বিজেপির মদতেই গ্রামের লোকজন এ সব করছেন বলেও তাঁর দাবি। বিজেপির পাল্টা, গ্রামের মানুষই নিজের টাকা বুঝে নিতে সভা করেছেন। কাটমানি ফেরতের দাবিতে দলের নৈতিক সমর্থন রয়েছে বলেও দাবি স্থানীয় বিজেপি নেতাদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Corruptiion Bribe TMC Farming
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE