Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
ফের কাঠগড়ায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল

শিশুর মৃত্যু, দুর্ব্যবহারের অভিযোগ

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার জ্বর নিয়ে হাসপাতালের শিশু বিভাগে ভর্তি করানো হয় গলসির গোহগ্রামের রনিত বাগদিকে। তার পরিবারের অভিযোগ, শুরু থেকেই কর্তব্যরত নার্স খারাপ ব্যবহার করছিলেন। রনিতের বাবা বিদ্যুৎ বাগদির অভিযোগ, এক সপ্তাহ ভর্তি থাকলেও ছেলের শারীরিক অবস্থা নিয়ে তাঁদের ঠিক ভাবে কিছু জানানো হয়নি।

ছেলেকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মা। ছবি: উদিত সিংহ

ছেলেকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মা। ছবি: উদিত সিংহ

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৯ ০৪:০০
Share: Save:

ফের শিশুমৃত্যুতে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। এ বার দু’বছরের এক শিশুর মৃত্যুতে দুর্ব্যবহার ও চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে হাসপাতালের নার্স ও কর্মীদের বিরুদ্ধে। হাসপাতাল সুপার ও বর্ধমান থানায় অভিযোগ করেছেন ওই পরিবার।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার জ্বর নিয়ে হাসপাতালের শিশু বিভাগে ভর্তি করানো হয় গলসির গোহগ্রামের রনিত বাগদিকে। তার পরিবারের অভিযোগ, শুরু থেকেই কর্তব্যরত নার্স খারাপ ব্যবহার করছিলেন। রনিতের বাবা বিদ্যুৎ বাগদির অভিযোগ, এক সপ্তাহ ভর্তি থাকলেও ছেলের শারীরিক অবস্থা নিয়ে তাঁদের ঠিক ভাবে কিছু জানানো হয়নি। জানতে গেলেই বলা হয়েছে, ছেলে ভাল আছে। কিন্তু জ্বর সারেইনি বলে তাঁর দাবি। পরিবারের দাবি, রবিবার দুপুরের শিশুটির মামা শেখর আঙ্কুরে ভাগ্নের শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে সিস্টারদের কাছে খোঁজখবর করতে যান। তাঁর সঙ্গেও খারাপ ব্যাবহার করা হয় বলে অভিযোগ। সোমবার ভোরে মারা যায় শিশুটি। রণিতের পরিবারের দাবি, ডাক্তার থেকে নার্স সকলেই ছেলে ভাল আছে জানানোর পরে হঠাৎ কী এমন হল, যে ছেলে মারা গেল। মৃত শিশুর ঠাকুমা শেফালি বাগদিও জানান, জ্বর না কমা নিয়ে বারবার ডাক্তারদের কাছে যাওয়া হলে তাঁরা একটি করে ইঞ্জেকশন দিতেন আর বেডে গিয়ে নাতির হাতে-পায়ে জল দেওয়ার জন্য বলতেন। কিন্তু কোনও সময়েই কেন জ্বর ছাড়ছে না সে দিকে নজর দেওয়া হয়নি। উপরন্তু কিছু জানতে গেলেই নার্স, ওয়ার্ডের কর্মীরা দুর্ব্যবহার করেছেন বলে তাঁর দাবি। শেখরবাবু বলেন, ‘‘রবিবার গভীর রাতে কিছু টেস্ট করানোর জন্য লিখে দেওয়া হয়। কিন্তু অত রাতে টেস্ট করানো সম্ভব ছিল না। তার কিছক্ষণের মধ্যেই মৃত্যুর খবর জানানো হয় আমাদের।’’ সকালে দেহ বার করতে অস্বীকার করেন তাঁরা। পরে সুপারের কাছে অভিযোগ করা হয়।

গত মাসের প্রথম সপ্তাহেও কাটোয়া রেল কলোনির এক শিশুর মৃত্যুতে এই হাসপাতালের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছিল। রোহন হাঁড়ি নামে ওই শিশুর পরিবারের দাবি ছিল, প্রচণ্ড কাশি হওয়ার সময় কর্তব্যরত নার্স পরিবারের কথা না শুনেই ইঞ্জেকশন দেন। কিসের ইঞ্জেকশন জানতে চাওয়া হলে দুর্ব্যবহার করেন। তার কিছুক্ষণ পরেই রোহন মারা যায়।

এ দিনের ঘটনায় অভিযুক্ত নার্সকে শো-কজ করা হবে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধানের কাছে রিপোর্টও চাওয়া হয়েছে। হাসপাতালের ডেপুটি সুপার অমিতাভ সাহাও জানান, অভিযোগের যথাযথ তদন্ত করা হবে। কর্মীদের বিরুদ্ধে বারবার দুর্ব্যবহারের অভিযোগ ওঠা নিয়ে তাঁর দাবি, ৮ ঘণ্টা ডিউটির সময়ে কী ভাবে মাথা ঠাণ্ডা রেখে কাজ করা যায় ও রোগী পরিবারের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করা যায়, তা নিয়ে হাসপাতালের তরফে একটি ‘সফট স্কিল ট্রেনিং’ করানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Misbehaviour Burdwan Medical College Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE