Advertisement
E-Paper

মাথা গরমে দাওয়াই ধৈর্য ধরার

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, এ ছাড়া উপায় নেই তাঁদের। চিকিৎসকেরাও জানান, একে বেশি রোগী, তার উপর এক জন রোগীর সঙ্গে অন্তত তিন-চার জন আত্মীয় থাকেন। অনেক সময় তাঁদের ভিড়, কাজে মাথা গলানোতে মুশকিল হয় চিকিৎসায়।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৮ ০৯:০০
হাসপাতালের শয্যায়, মেঝেতে ভিড় রোগীদের । নিজস্ব চিত্র

হাসপাতালের শয্যায়, মেঝেতে ভিড় রোগীদের । নিজস্ব চিত্র

সব সময়েই নির্দিষ্ট আসন সংখ্যার চেয়ে ৪০০-৫০০ রোগী বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বেশি ভর্তি থাকেন, এমনটাই জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। ফলে, ওই সব রোগীদের ঠাঁই হয় ওয়ার্ডের মাটিতে। রোগীর পরিজনেদের কথায়, “দিনের পর দিন রোগী মাটিতে পড়ে থাকার ফলে চিকিৎসা ঠিকমতো শুরু হয় না। তখন অনেকেরই ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায়।’’ আর সেই ধৈর্যচ্যুতি থেকেই বোধহয় বেশি করে ঘটে ঝামেলা, অশান্তি।

হাসপাতালের যে কোনও ওয়ার্ড, জরুরি বিভাগে ঢুকলেই দেখা যায় রোগী গিজগিজ করছে। রাধারানি ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন গলসির মল্লিকা পোদ্দার, খণ্ডঘোষের স্বপন চৌধুরীরা। তাঁদের কথায়, “চিকিৎসা পরিষেবা ঠিকমতো পাওয়া যাচ্ছে না। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষাও হচ্ছে না। কাকে বললে কাজ হবে সেটাও তো বুঝতে পারছি না।’’ রামপুরহাটের হামিদ শেখেরও দাবি, “টানা দু’সপ্তাহ ধরে মাটিতে পড়ে ছিলাম।’’ শল্য-অস্থি বিভাগে ওয়ার্ডের ভিতর থেকে বারান্দাতেও ভর্তি রোগী। ওই সব রোগীদের একাংশের দাবি, একে তো মেঝেতে পড়ে থাকতে হচ্ছে তার উপর রাতের অন্ধকারে চুরিও বাড়ছে। রোগীদের কাছে থাকা ব্যাগ মাঝেমধ্যেই উধাও হয়ে যাচ্ছে। বুদবুদের সন্ন্যাসী ঘোষ বলছিলেন, “আমি জরুরি বিভাগের সিঁড়ির তলায় ভর্তি ছিলাম। আমার কাছে থাকা টাকার ব্যাগ নিয়ে কেউ পালিয়ে যায়।’’ এ রকম পরিস্থিতিতে মাঝেমধ্যেই রোগী বা তাঁর পরিজনেরা ক্ষোভ বিক্ষোভ দেখান হাসপাতালে। সেই পরিস্থিতি এড়াতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নির্দেশে রোগীর পরিজনকে ভর্তির নথির উপরেই লিখে দিতে হচ্ছে, ‘হাসপাতালে শয্যা নেই, তবু রোগীকে ভর্তি করছি’।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, এ ছাড়া উপায় নেই তাঁদের। চিকিৎসকেরাও জানান, একে বেশি রোগী, তার উপর এক জন রোগীর সঙ্গে অন্তত তিন-চার জন আত্মীয় থাকেন। অনেক সময় তাঁদের ভিড়, কাজে মাথা গলানোতে মুশকিল হয় চিকিৎসায়। আর অসুবিধে প্রকাশ পেলেই অল্পেই রোগী বা রোগীর পরিজনদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে শুরু হয়ে যায় বিক্ষোভ। চিকিৎসকদের উপর হামলা চালানোর ঘটনাও ঘটে আকছার। আর তার ঝক্কি সামলাতে হয় কর্তৃপক্ষকে।

বর্ধমান, বীরভূম ও বাঁকুড়ার একাংশের সরকারি চিকিৎসা পরিষেবাও নির্ভর করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপর। অথচ এগারোশরও বেশি শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতালে আইসিসিইউ মাত্র ১২টা। হাসপাতাল শয্যার এক শতাংশ। এক কর্তার কথায়, “এই হাসপাতালে অন্তত ৩০ শয্যার আইসিসিইউ থাকার প্রয়োজন। না হলে দিন দিন চাপ বাড়বে।’’

মেডিক্যাল কলেজ অধ্যক্ষ সুকুমার বসাক বলেন, “ধৈর্য নিয়ে হাসপাতালে আসতে হবে। চিকিৎসকদের পরামর্শ মতো চলতে হবে। ধৈর্যচ্যুতি ঘটালে চলবে না। বুঝতে হবে, চিকিৎসকরাও মানুষ। তাঁদেরও কিছু বিধিনিষেধ মেনে চলতে হয়।’’ (‌শেষ)

Hospital Doctor
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy