মানসিক ভারসাম্যহীন যুবতীকে ধর্ষণের দায়ে এক প্রৌঢ়কে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল আদালত। একই সঙ্গে আরও ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাবাসের নির্দেশ দিলেন বিচারক। পাশাপাশি নির্যাতিতাকে ১ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছে বর্ধমান আদালত।
আদালত সূত্রের খবর, পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম থানা এলাকায় নির্যাতিতার বাড়ি। ২০২০ সালের ৮ জুন সকালে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাঁকে স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হলে তিনি বেশ কিছু পরীক্ষা করানোর কথা বলেন। পরীক্ষার পরে জানা যায়, মানসিক ভারসাম্যহীন ওই যুবতী দু’মাসের অন্তঃসত্ত্বা। কিন্তু এ কী ভাবে সম্ভব?
খোঁজখবর করে পরিবারের লোকজন জানতে পারেন, প্রতিবেশী এক প্রৌঢ় মানসিক ভারসাম্যহীন মেয়েটির সঙ্গে সহবাস করেছেন। ২০২০ সালের ১৩ জুন ওই ঘটনার কথা জানিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করে যুবতীর পরিবার। ‘নির্যাতিতা’র শারীরিক পরীক্ষার জন্য বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিভাগে ভর্তি করানো হয়। পরে পরিবারের সম্মতিতে যুবতীর গর্ভপাত করানো হয়। ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ভ্রূণ পাঠানো হয় ল্যাবরেটরিতে। মামলার তদন্তে নেমে সেই বছরের ১৭ জুন সামসুদ্দিন আলি ওরফে কেংলু নামে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতেরও শারীরিক পরীক্ষাও করানো হয়। তদন্ত শেষ করে মামলার দ্বিতীয় তদন্তকারী অফিসার রতন দাস ২৭ আগস্ট আদালতে চার্জশিট পেশ করেন। ২০২০ সারে ২৭ নভেম্বর অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। মামলায় ১৩ জনকে সাক্ষী করা হয়েছিল। অবশেষে ওই মামলার শাস্তি ঘোষণা করল আদালত।
আরও পড়ুন:
শুক্রবার বর্ধমানের দ্বিতীয় ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের বিচারক অরবিন্দ মিশ্রের পর্যবেক্ষণ, ওই ঘটনার পরে যুবতীকে চরম অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয়েছে। ক্ষতিপূরণ দিয়ে তাঁর মানসিক বা শারীরিক নির্যাতন লাঘব করা সম্ভব নয়। তা-ও তাঁর পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে এক লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে নির্যাতিতার কাছে ক্ষতিপূরণের টাকা পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। অন্য দিকে, সাজাপ্রাপ্ত আসামির আইনজীবী জানিয়েছেন, এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে তাঁরা হাই কোর্টে মামলা করবেন।