২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে পূর্ব বর্ধমানের গলসি এলাকায় এক নাবালিকাকে অপহরণ করা হয়। পরে তাঁকে পাচার করে দেওয়া হয় ভিন্ রাজ্যে। ঘটনার প্রায় দেড় বছর পরে পাচার ওই ঘটনার কিনারা করল বর্ধমান পুলিশ। নাবালিকাকে আগেই উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতার করা হয়েছিল এক জনকে। এ বার আরও দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পূর্ব বর্ধমানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই চক্রের মাথারা জালে ধরা পড়েছে। এদের মধ্যে দু’জন রাজস্থানের এবং এক জন পূর্ব বর্ধমানেরই বাসিন্দা। বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করে এএসপি জানান, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে গলসি থানায় একটি নাবালিকা অপহরণের অভিযোগ নথিভুক্ত হয়। এক মহিলা অভিযোগ করেছিলেন যে, তাঁর নাবালিকা মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে। তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এই নিয়ে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। এর পর ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে এই ঘটনাকেন্দ্রিক কিছু তথ্য পায় পুলিশ। তার ভিত্তিতে একটি বিশেষ দল তৈরি করে অভিযান শুরু হয়। পুলিশ রাজস্থানেও যায়। সেখানকার পোশালিয়া থেকে ওই নাবালিকাকে উদ্ধার করা হয়। সেখান থেকে রমেশ কুমার নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জানা গিয়েছে, ওই নাবালিকাকে দীর্ঘ দিন নিজের কাছে আটকে রাখেন অভিযুক্ত ব্যক্তি। এর পর নাবালিকা ও অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করানো হয়। মেয়েটি পুলিশের কাছে জবানবন্দিও দেয়।
অন্য দিকে, অভিযুক্ত রমেশ পুলিশকে জানান তিনি দু’লক্ষ ১০ হাজার টাকা দিয়ে মেয়েটিকে কিনেছিলেন। তাঁর স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে, রাজেশ মীনা ও জগদীশ নামের দুই ব্যক্তি এই কেনাবেচার সঙ্গে যুক্ত। কয়েক দিন আগে রাজস্থানে আবার অভিযান চালিয়ে রাজেশকে গ্রেফতার করা হয়।
রাজেশকে ট্রানসিট রিম্যান্ডে এ রাজ্যে নিয়ে আসার সময় পুলিশ খবর পায়, খোকন ওরফে রহিম শেখ নামে এক ব্যক্তিও এই অপহরণকাণ্ডে জড়িত। তিনি প্রথম মেয়েটিকে অভিযুক্তদের কাছে বিক্রি করেন। অবশেষে পুলিশের জালে বর্ধমান স্টেশনের কাছ থেকে গ্রেফতার হয় খোকন। মঙ্গলবার রাতে খোকন ধরা পড়ে। বুধবার দু’জনকেই বর্ধমান আদালতে হাজির করানো হয়। পুলিশ জানিয়েছে, রমেশ ইতিমধ্যেই পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন। এএসপি বলেন, ‘‘এখন একমাত্র জগদীশের হদিস পাওয়া বাকি। বাকিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তাকেও পাওয়া যাবে।’’