বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়।
স্থায়ী আমানত ভেঙে একটি সংস্থার অ্যাকাউন্টে ২১ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা জমা দেওয়ার জন্য বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘লেটার হেড’-এ লেখা চিঠি জমা পড়েছিল একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বর্ধমানের বড়বাজার শাখায়। সেই চিঠির সূত্র করে ওই ব্যাঙ্কের কর্তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সুজিত চৌধুরী ও ফিনান্স অফিসার (এফও) সৌগত চক্রবর্তীর সই জাল করে ব্যাঙ্কে ওই চিঠি দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ দফতর থেকে এ রকম কোনও চিঠি দেওয়া হয়নি বলে ব্যাঙ্ককে জানানো হয়। এফআইআর করারও পরামর্শ দেওয়া হয়। এর পরেই ওই শাখার সিনিয়র ম্যানেজার বর্ধমান থানায় অর্থ দফতরের দুই কর্মীর নামে এফআইআর করেছেন। চিঠির প্রতিলিপি পাওয়ার পরে অভিযুক্তদের শো-কজ় করা হয়েছে। রেজিস্ট্রার সুজিত চৌধুরীর নেতৃত্বে পাঁচ জনের একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বতীকালীন উপাচার্য গৌতম চন্দ্র বলেন, “এফআইআরের চিঠি পাওয়ার পরেই কমিটি গঠন করে তদন্ত শুরু হয়েছে।”
বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা যায়, অর্থ দফতরের সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে থাকা অভিযুক্ত ভক্ত মণ্ডলই আমানত ভাঙানোর জন্য ব্যাঙ্কের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ রেখেছিলেন। আর এক অভিযুক্ত, ছ’মাসের জন্য চুক্তিবদ্ধ শেখ এমানুল হক ওই চিঠিটি ব্যাঙ্কে পৌঁছে দেন। ব্যাঙ্কের তরফে বর্ধমান থানায় ওই দু’জনের নামে করা এফআইআরের চিঠিতে বলা হয়েছে, ভক্ত নিয়মিত ভাবে ফোন করে দ্রুত স্থায়ী আমানত ভাঙানোর জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিক বলেন, “আরবিআইয়ের নির্দেশিকা অনুযায়ী স্থায়ী আমানত নির্দিষ্ট সময়ের আগে ভাঙাতে গেলে ভাল করে খতিয়ে দেখতেই হয়। তা ছাড়া কোনও জরুরি প্রয়োজনে ভাঙাতে হলে অন্য কোনও অ্যাকাউন্টে নয়, গ্রাহকের অ্যাকাউন্টেই সেই টাকা দিতে হয়। এ ক্ষেত্রে অভিযুক্তরা অন্য অ্যাকাউন্টে টাকা স্থানান্তরিত করার জন্য বলেছিলেন। স্বাভাবিক ভাবেই টাকা স্থানান্তরিত করতে গেলে তা আটকে যেত।”
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বড় বাজার শাখায় ২০২০ সালের জুন মাসে ১৭ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা স্থায়ী আমানত হিসেবে রাখা হয়। সেই টাকা ২০২৭ সালের ডিসেম্বরে ২৭ লাখ টাকা হওয়ার কথা। সেখান থেকেই ২১ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা নির্দিষ্ট একটি সংস্থাকে দেওয়ার জন্য ‘জাল চিঠি’ দেওয়া হয়েছিল বলে পুলিশকে জানিয়েছে ব্যাঙ্ক।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, শেখ এমানুলকে শো-কজ় করা হয়েছে। তিনি তদন্ত কমিটির কাছে এসে জবাবও দিয়ে গিয়েছেন। তবে মূল অভিযুক্ত ভক্ত মণ্ডলকে শো-কজ় করা হলেও তিনি তদন্ত কমিটির সামনে হাজির হননি। এমানুল এ দিন বলেন, “যা বলার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলবেন। আমি নির্দোষ।” আর ভক্তের জবাব, “আমার কাকা অসুস্থ। আমি গত ১১-১২ দিন ধরে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে পড়ে রয়েছি। যে সময়ের ঘটনা বলা হচ্ছে, আমি তখন দুর্গাপুরেই ছিলাম। ফলে ওই সব ঘটনায় আমি যুক্ত নই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy