Advertisement
১৭ মে ২০২৪

পড়ুয়া সংখ্যায় বৈষম্য নয়, চিঠি

জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) শ্রীধর প্রামাণিক বলেন, “স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিতে হবে।’’

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৯ ০০:৩৪
Share: Save:

প্রত্যেক বছরই পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি সময় দেখা যায়, শহরের নামী স্কুলগুলিতে পড়ুয়াদের ভিড়। আবার শহরের বেশ কিছু স্কুল পড়ুয়াদের অভাবে ধুঁকছে। এই বৈষম্য দূর করতে আগামী শিক্ষাবর্ষ শুরুর মাসখানেক আগেই জেলা শিক্ষা দফতরকে সতর্ক হওয়ার আর্জি জানালেন বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষক, শিক্ষিকারা। শহরের ১৪টি স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা জেলা স্কুল পরিদর্শককে (মাধ্যমিক) চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, এই বৈষম্য দূর হলে কয়েকটি স্কুল থেকে পড়ুয়ার চাপ কমবে, ধুঁকতে থাকা স্কুলগুলিও প্রাণ ফিরে পাবে।

শিক্ষকদের একাংশ জানান, শহরের বিভিন্ন নামী স্কুল লটারি বা পরীক্ষার মাধ্যমে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি করে। এর বাইরে, বেশ কয়েকটি স্কুলের সঙ্গে প্রাথমিক বিভাগ রয়েছে। তারা সেখানকার পড়ুয়াদের সরাসরি ভর্তি করে। এর পরেও বিভিন্ন এলাকার অভিভাবকেরা তাঁদের ছেলেমেয়েদের তথাকথিত নামী স্কুলে পড়ানোর জন্যে ‘চাপ’ তৈরি করেন। সুযোগ না পেলে ওই সব অভিভাবকেরা জেলা শিক্ষা দফতরে তাঁদের ছেলেমেয়েরা পড়ার সুযোগ পাচ্ছে না দাবি করে চিঠিও করেন। শিক্ষকেরা জানান, ‘সর্বশিক্ষা মিশন’ বা ‘রাষ্ট্রীয় সমগ্র শিক্ষা মিশন’-এর নিয়ম অনুযায়ী, বাড়ির এক কিলোমিটারের মধ্যে স্কুল থাকলে সেখানে ছাত্র ভর্তি করতে স্কুল কর্তৃপক্ষ বাধ্য। শিক্ষা দফতরেরও উচিত, সে নিয়ম মেনে আবেদনকারী অভিভাবকদের ছেলেমেয়েদের বাড়ির কাছে স্কুলে ভর্তি করানোর জন্য সুপারিশ করা। কিন্তু দেখা যায়, আবেদনকারীর ছেলেমেয়েদের তথাকথিত নামী স্কুলে ভর্তি করানোর সুপারিশ করে জেলা শিক্ষা দফতর।

ওই চিঠিতে প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষিকারা দাবি করেছেন, শিক্ষা দফতরের এই সিদ্ধান্তের জন্য প্রতি বছরই বেশ কয়েকটি স্কুলে পড়ুয়া উপচে পড়ে। ফলে, সম মানের শিক্ষা দেওয়া সম্ভব হয় না। আবার বেশ কিছু স্কুলে ভাল শিক্ষক-শিক্ষিকা, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও ছাত্রছাত্রীর অভাবে তারা ধুঁকছে। শিক্ষকদের দেওয়া হিসেব অনুযায়ী, বিদ্যার্থী বালিকা বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে ১৯০ জন ছাত্রীকে ভর্তি করার নির্দেশ রয়েছে সরকারের। অথচ, শিক্ষা দফতরের সুপারিশ মানতে গিয়ে ছাত্রীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮০-তে। বিসি রোডের সিএমএস স্কুলে ৭০ জন অতিরিক্ত পড়ুয়াকে গত বছর পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি করাতে হয়েছে। মিউনিসিপ্যাল গার্লস স্কুলে ১৮০ জন ছাত্রীকে ভর্তি করার পরিকাঠামো রয়েছে, অথচ, ফি বছর পঞ্চম শ্রেণিতে ২৪০ জনকে ভর্তি করাতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। একই পরিস্থিতি টাউন স্কুল, বোরহাট রামকৃষ্ণ হাইস্কুল। অথচ পড়ুয়া পাচ্ছেন না বলে আক্ষেপ করছেন ইছালাবাদ বিবেকানন্দ বালিকা বিদ্যালয়, নিবেদিতা গার্লস হাইস্কুল, বড়নীলপুর এডিপি হাইস্কুল, রাজ কলেজিয়েট স্কুলের কর্তৃপক্ষ।

বিসি রোডের সিএমএস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মিন্টু রায়, বিদ্যার্থী গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পামেলা চট্টোপাধ্যায়, বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শ্রাবণী মল্লিকদের দাবি, “পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি নিয়ে শিক্ষা দফতর বৈষম্য করলে এক দিকে কিছু স্কুল পড়ুয়ার চাপ বইতে পারবে না। পড়াশোনার মান ভাল হবে না। আর এক দিকে পড়ুয়ার অভাবে কয়েক বছরের মধ্যে বেশ কিছু স্কুল বন্ধ হয়ে যাবে। সে জন্যই আমরা সামঞ্জস্য আনার কথা বলেছি।’’

জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) শ্রীধর প্রামাণিক বলেন, “স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Student School Teacher New session
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE