Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Galsi

100 days work: বোর্ডে অসম্পূর্ণ লেখা,  চটে গেলেন পর্যবেক্ষক

দুপুরে আদড়াহাটি পঞ্চায়েতের আদিবাসী শ্মশানতলায় বনসৃজনের কাজ দেখতে যান আশিস।

গলসির আদড়াহাটিতে পরিদর্শন। উল্টে রয়েছে ফলক। নিজস্ব চিত্র

গলসির আদড়াহাটিতে পরিদর্শন। উল্টে রয়েছে ফলক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
গলসি শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২২ ০৫:৫৪
Share: Save:

একশো দিনের প্রকল্প দেখতে গিয়ে বোর্ডের লেখা অসম্পূর্ণ দেখে গলসি ২ ব্লকের আদড়াহাটি পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ককে ধমক দিলেন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক। কাজের মান নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দলের সদস্য আশিস শ্রীবাস্তব।

বুধবার সকালে দুই কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক গলসি ২ ব্লকের আদড়াহাটি পঞ্চায়েতে যান। এক পর্যবেক্ষক শৌভিক বর্মা পঞ্চায়েত অফিসে নথিপত্র পরীক্ষা করছিলেন। অন্য পর্যবেক্ষক আশিস শ্রীবাস্তব কিছুক্ষণ সেখানে কাটিয়ে, একশো দিনের প্রকল্প ও কেন্দ্রীয় সরকারের আবাস যোজনার কাজ দেখতে বেরিয়ে পড়েন।

দুপুরে আদড়াহাটি পঞ্চায়েতের আদিবাসী শ্মশানতলায় বনসৃজনের কাজ দেখতে যান আশিস। সেখানে মেহগিনি, শিশু, শিরিষ প্রভৃতি গাছপালা দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন। কিন্তু কাছে, পিঠে প্রকল্পের তথ্য লেখা বোর্ড দেখতে না পেয়ে তিনি খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। বনসৃজনের ‘ডিসপ্লে বোর্ড’ প্রকল্পের স্থান থেকে প্রায় ৫০ মিটার দূরে ক্যানালের নীচের দিকে মাটিতে পড়েছিল দেখে তিনি অসন্তুষ্ট হন। ক্যানালের জলে বোর্ডের লেখা ঝাপসা হয়ে যাওয়ায় আরও বিরক্ত হন।

এর পরে তিনি যান কুলুপুকুরের একটি পাড়ে আর একটি বনসৃজন প্রকল্পের কাজ দেখতে। সেখানে মাটিতে পড়ে থাকা ডিসপ্লে বোর্ডে কাজ শুরুর তারিখ, কাজ শেষের দিন, প্রকল্পের ব্যয়, দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিকের সংখ্যা কিছুই লেখা নেই দেখে ফের অসন্তুষ্ট হন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক।

আদড়াহাটি রোডে ক্যানাল সংস্কারের কাজ দেখতে গিয়ে সেখানেও ডিসপ্লে বোর্ডে অসমাপ্ত তথ্য দেখে নির্মাণ সহায়ক মনোজ ঘরামির উপরে বেশ চটে যান কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক। বিরক্ত হয়ে তাঁর কাছে জানতে চান— ‘‘কত টাকার কাজ হয়েছে, ফাইল দেখান।’’ মনোজ জানান, এক কিলোমিটার কাজ করতে তিন লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। ফাইল রয়েছে অফিসে। এর পরেই কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক তাঁকে ধমক দিয়ে বলেন, ‘‘আপনি কাজ দেখতে বেরোন? ডিসপ্লে অসমাপ্ত রয়েছে। আপনারা ক্যানাল তৈরি করেননি। শুধু এক কিলোমিটার পাড়ে মাটি ফেলতেই তিন লক্ষ টাকা খরচ করেছেন আপনারা? কাজ দেখতে বেরোন।’’ মনোজ তাঁর কাছে ক্ষমা চান।

পরিদর্শনের সময় সেখানে ছিলেন জয়েন্ট বিডিও (গলসি ২) বাপ্পাদিত্য রায়। পরে, তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকেরা সমস্ত কিছু দেখছেন। তাঁরা যেমন গাইডলাইন দিয়েছেন, সেই অনুযায়ী যাতে কাজ হয়, তা আগামী দিনে দেখা হবে।”

পর্যবেক্ষক দল পরে গলসি পঞ্চায়েতের সারুল গ্রামে গিয়ে দিঘিরপাড়ে বনসৃজনের কাজ দেখেন। সেখানে তখন কাজ করছিলেন রাখি প্রামাণিক, চিন্তা রুইদাসেরা। পর্যবেক্ষকেরা তাঁদের কাছে জানতে চান, এক দিনে কত মজুরি পান, তাদের নিজস্ব ব্যাঙ্ক আকাউন্ট রয়েছে কি না? জব-কার্ড কার কাছে থাকে ইত্যাদি। গাছ যাতে শুকিয়ে নষ্ট না হয়, পশুতে যাতে খেয়ে না ফেলে, তা নজর রাখতে নির্দেশ দেন।

ওই এলাকায় আবাস যোজনা প্রকল্পে বাড়ি পাওয়া কয়েকজন উপভোক্তার বাড়ি ঘুরে দেখেন। জয়ন্তী আঁকুড়ে, বৈশাখি আঁকুড়ের মতো উপভোক্তারা বাড়ি তৈরির জন্য কত টাকা পেয়েছেন, পর্যবেক্ষকেরা তা জানতে চান। ‘উজ্জ্বলা’ যোজনায় গ্যাসের সংযোগ পেয়েছে কি না, শৌচাগার রয়েছে কি না, খোঁজ করেন। জয়ন্তী, বৈশাখি সব সুবিধাই পাচ্ছেন বলে তাঁদের জানান। দরবারপুরে গিয়ে হাঁসের খামারে গিয়ে তাঁরা খোঁজ-খবর নেন। মহিলা দলের দলনেত্রী চম্পা বেগম বলেন, “তিন মাস আগে হাঁস পালন শুরু করে, ডিম বেচে পাঁচ হাজার টাকা পেয়েছি।” পরে, প্রতিনিধি দল সাটিনন্দী পঞ্চায়েতে যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Galsi 100 days work
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE