Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
TMC

TMC: মারামারিতে জখম, ‘হেনস্থা’ পুলিশকেও

তৃণমূল কর্মীরা মির্জাপুরের দিকে যাওয়ার সময়ে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলেও অভিযোগ।

জখম আবু আওয়ান।

জখম আবু আওয়ান। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
মেমারি শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২১ ০৫:৩১
Share: Save:

বিজয় মিছিলকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে’ উত্তপ্ত হয়ে উঠল মেমারির পলাশন গ্রাম। দু’পক্ষের মারপিটে অন্তত দশ জন জখম হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজনকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। অভিযোগ, পরিস্থিতি সামলাতে গিয়ে পুলিশকে হেনস্থা, গাড়ি ভাঙচুরের মুখেও পড়তে হয়েছে। এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ) আমিনুর ইসলাম খান বলেন, ‘‘ওই এলাকা থেকে ন’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার মেমারির বড়পলাশন ২ পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান রুবি খাতুন, তাঁর স্বামী আবু আওয়ানের নেতৃত্বে তৃণমূল একটি ‘বিজয় মিছিল’ করে। তারই পাল্টা মেমারি ২ পঞ্চায়েত সমিতির বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ আবুল কাশেদের নেতৃত্বে রবিবার দুপুরে একটি মিছিল করা হয়। দলেরই একাংশ কর্মীদের দাবি, ওই পঞ্চায়েতের মির্জাপুর থেকে পাঁচশো কর্মী-সমর্থককে নিয়ে মিছিলটি বার হয়। পলাশন গ্রাম ঘুরে মির্জাপুরের দিকে যাওয়ার সময়ে ওই দুই গোষ্ঠীর মারপিট বাধে বলে অভিযোগ। পুলিশের একটি টহলদারি গাড়ি কাছেই ছিল। খবর পেয়ে তারা মারপিট আটকাতে গেলে পুলিশকে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পরে তৃণমূল কর্মীরা মির্জাপুরের দিকে যাওয়ার সময়ে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলেও অভিযোগ। মেমারি থানার পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা রুজু করে।

মির্জাপুর গ্রামে তৃণমূলের বুথ সভাপতি, বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষের অনুগামী বলে পরিচিত গোলাম আকবর চৌধুরীর দাবি, ইদের জন্য অনেকেই গ্রামে ফিরেছেন। তাঁদের দাবি মেনে ও অন্য গ্রামের দেখাদেখি রবিবার দুপুরে বিজয় মিছিল করা হয়। প্রথমে ঠিক ছিল মিছিলটি শুধুমাত্র মির্জাপুর গ্রামে ঘুরবে। পরে কর্মী-সমর্থকদের চাপে পাশের পলাশন গ্রামেও ঘোরা হবে বলে ঠিক হয়। তাঁর অভিযোগ, ‘‘পলাশন গ্রাম ঘুরে মির্জাপুরের দিকে এগনোর সময়ে দলীয় কার্যালয়ের আশেপাশে লুকিয়ে থাকা প্রধানের স্বামী-সহ ১২-১৩ জন পিছন দিক দিয়ে পরিকল্পিত ভাবে আক্রমণ করেন। বেশ কয়েকটি টোটো ভাঙচুর করা হয়। আমাদের লাঠি-বাঁশ দিয়ে মারধর করা হয়। বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ-সহ ছ’সাত জন জখম হয়েছেন। এলাকা দখল করতেই এই হামলা, দাবি তাঁর।

অন্য আহতেরা।

অন্য আহতেরা। নিজস্ব চিত্র।

যদিও প্রধানের অনুগামীদের দাবি, বিজয় মিছিলের নাম করে পলাশন গ্রামে ঢুকে দলীয় কার্যালয় থেকে প্রধানের স্বামী আবু আওয়ানকে বার করে মারধর করা হয়। তাঁকে আটকাতে গিয়ে আরও কয়েকজন আহত হন। আবু আওয়ান বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। হাসপাতালে দাঁড়িয়ে প্রধান রুবি খাতুন বলেন, ‘‘পরিকল্পনা না থাকলে বিজয় মিছিলে কেউ লাঠি-টাঙি নিয়ে বার হয়!’’ নিজেকে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দাবি করে পলাশন গ্রামের বাসিন্দা কচি চৌধুরী অভিযোগ করেন, ‘‘তিন বছর ধরে বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষের সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই। তিনি মুম্বইয়ে থাকেন। এলাকায় যখন আসেন, তখনই পরিকল্পনা করে অশান্তি ঘটান। বৃহস্পতিবার দলের বিজয় মিছিল হয়ে যাওয়ার পরে অশান্তি বাধানোর জন্যই বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষের নেতৃত্বে মিছিল থেকে হামলা করা হয়।

বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি জখম থাকায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। পুলিশের ধরপাকড়ের পরে দু’টি গ্রামই সুনসান, দাবি এলাকাবাসীর।

মেমারি ২-এর তৃণমূল ব্লক সভাপতি মহম্মদ ইসমাইল বলেন, ‘‘দু’পক্ষই আমাদের লোক। পুলিশ বিষয়টি দেখছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE