Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সুনাম রক্ষাই পাখির চোখ

কারও লড়াই সেরার খেতাব ধরে রাখার। কারও চোখে দর্শকের ভিড়টাই খেতাব। দু’সপ্তাহ বাকি থাকতেই নাওয়া-খাওয়া ভুলেছেন উদ্যোক্তারা। সবারই পাখির চোখ, নিজের পুজো আরও আকর্ষণীয় করে তোলা।

এডিসন পঞ্চম পল্লির মণ্ডপ।   নিজস্ব চিত্র।

এডিসন পঞ্চম পল্লির মণ্ডপ। নিজস্ব চিত্র।

সুব্রত সীট
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:৩১
Share: Save:

কারও লড়াই সেরার খেতাব ধরে রাখার। কারও চোখে দর্শকের ভিড়টাই খেতাব। দু’সপ্তাহ বাকি থাকতেই নাওয়া-খাওয়া ভুলেছেন উদ্যোক্তারা। সবারই পাখির চোখ, নিজের পুজো আরও আকর্ষণীয় করে তোলা।

ইস্পাতনগরীর সি জোন এলাকায় ‘বুদ্ধবিহার সর্বজনীন পুজো কমিটি’র পুজো এ বার ২৬-এ পা দিয়েছে। গত বার ২৫ বছর উপলক্ষে তাঁদের জোর বেশি ছিল মণ্ডপে। থিম ছিল ‘দেবীবরণ’। মেদিনীপুরের গ্রামীণ এলাকার দুই হাতে এবং মাথায় প্রদীপ নেওয়া প্রায় সাড়ে চারশো লক্ষ্মী প্রদীপে সাজানো হয়েছিল মণ্ডপ। সঙ্গে কয়েক’শো বিভিন্ন আকৃতির কাঠের পুতুল, চাষিদের মাথার ছাতি ছিল বাড়তি আকর্ষণ। প্রবেশ পথের দু’ধারেও প্রদীপ নিয়ে ৭০ লক্ষ্মীর মূর্তি চোখ টেনেছিল বেশ। ফলও মেলে হাতেনাতে। বিভিন্ন সংস্থার বিচারে ‘সেরা’ খেতাব পান তাঁরা। এ বারে তাই চিন্তাটা একটু বেশিই। উদ্যোক্তাদের দাবি, শিল্পী সোমনাথ অধিকারীকেই ভার দেওয়া হয়েছে। থিম ‘সোনার বাংলা স্বর্ণময়ী’। শিল্পীর দাবি, বাঁকুড়ার পাঁচমুড়ার পোড়ামাটির ঘোড়া, পুরুলিয়ার ছৌয়ের মুখোশ, মেদিনীপুরের পটশিল্প, বিষ্ণুপুরের দশাবতার তাস, বালুচরি, লন্ঠন, কেঞ্জেকুড়ার গামছা, খাগড়ার কাঁসার বাসন, বোলপুরের ডোকরা ছাড়াও পাখা, কুলো, ডালা দিয়ে মণ্ডপ গড়ার কাজ চলছে। সুজলা-সুফলা-শস্য শ্যামলা বাংলার রূপ তুলে ধরতে মণ্ডপ গড়া হচ্ছে তিনটি বড় ধানের গোলার অনুকরণে। পুরনো দিনের কথা মনে করিয়ে দিতে প্রবেশদ্বারে থাকছে সিংহদুয়ার আর ভিতরে পদ্মফুলে ভরা পুকুর। এ ছাড়া ভিতরে সাঁওতালি চিত্র ও পূর্বস্থলীর নতুনগ্রামের কাষ্ঠশিল্প শোভা পাবে বলে জানান উদ্যোক্তারা। আর দেবীমূর্তি সাজবে মুর্শিদাবাদের খাগড়ার কাঁসা ও পিতলে।

এ-জোনের এডিসন পঞ্চম পল্লির পুজোর এ বার ৫০ বর্ষ। ফলে অন্যবারের থেকে উদ্যোম আরও বেশি। এডিসন রোডের ২১ ও ২৩ নম্বর স্ট্রিটের মাঝে একটি ক্লাবের পাশের মাঠে রাজস্থানের হাওয়ামহলের অনুকরণে মাথা তুলছে মণ্ডপ। মণ্ডপ সাজের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে গড়া হচ্ছে রাজস্থানি শৈলীর প্রতিমা। থাকছে পাঁচশোটি কাঠের সিংহাসন। শিল্পীর হাতের ছোঁয়ায় তাতে পুরনো দিনের মেজাজ ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। এ ছাড়াও পাঁচশো পুতুল, পাঁচশো কুলো ব্যবহার করা হচ্ছে মণ্ডপে। মণ্ডপ গড়া হচ্ছে পাটকাঠি, বাদামের খোসা দিয়ে। শিল্পী হুগলির গুপ্তিপাড়ার রঞ্জিত ভর। মাসখানেক ধরে নাওয়া-খাওয়া ভুলে দুর্গাপুরেই আছেন তিনি। শিল্পীর দাবি, বারবার বৃষ্টিতে গতি কমছে। তবে ঠিক সময়েই হয়ে যাবে। উদ্যোক্তারা জানান, পুজোর চার দিন সন্ধ্যায় অনুষ্ঠানের আসর রয়েছে। নবমীতে পাড়ার সবাই মিলে পাত পেড়ে ভোজে পুজোর আনন্দ দ্বিগুণ হয়ে যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Competition durgapuja
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE