E-Paper

লোহা চোরদের ‘স্বর্গরাজ্য’ জেশপ, নালিশ

রাজ্য সরকার কারখানাটি চালু করতে উদ্যোগী হয়। ২০০৩-এ ১৮ কোটি টাকার বিনিময়ে প্লান্ট-সহ কারখানার ১১৭ একর জমি কিনে নেয় রুইয়া গোষ্ঠী।

সুব্রত সীট

শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০২৫ ০৮:৪৯
দুর্গাপুরে বন্ধ পড়ে জেশপ কারখানা।

দুর্গাপুরে বন্ধ পড়ে জেশপ কারখানা। নিজস্ব চিত্র ।

দুই দশক পেরিয়ে গেলেও চালু হয়নি কারখানা। তা এখন কার্যত লোহা চোরদের 'স্বর্গরাজ্য'! দুর্গাপুরের বন্ধ জেশপ কারখানা নিয়ে এমনই অভিযোগ এলাকাবাসীর।

দুর্গাপুরের সব থেকে পুরনো কারখানাগুলির অন্যতম হল জেশপ। ১৯৫৮-এ সেটি চালু হয়। মূলত রেলের বগি, রোলার, ফাউন্ড্রি, ক্রেন, জাহাজ ও ডকের সরঞ্জাম তৈরি হত এই কারখানায়। সুদিনে প্রায় সাড়ে চার হাজার কর্মী কাজ করতেন। কেন্দ্রীয় সরকারের ভারী শিল্প মন্ত্রক ১৯৭১-এ কারখানাটি অধিগ্রহণ করে। নয়ের দশকের শুরুর দিক থেকে নানা কারণে কারখানাটি রুগ্‌ণ হতে শুরু করে। ১৯৯৯-এ বন্ধ হয়ে যায় সেটি।

রাজ্য সরকার কারখানাটি চালু করতে উদ্যোগী হয়। ২০০৩-এ ১৮ কোটি টাকার বিনিময়ে প্লান্ট-সহ কারখানার ১১৭ একর জমি কিনে নেয় রুইয়া গোষ্ঠী। দ্রুত সেখানে রেলের বগি এবং কাপলিং তৈরি হবে বলে ঘোষণাও হয়। কিন্তু তা হয়নি। ২০০৮-এ রুইয়া গোষ্ঠী কারখানার জমির একাংশে আবাসন প্রকল্প ও বাকি জায়গায় তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক গড়ার পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করে। আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের (এডিডিএ) কাছে জমির চরিত্র বদলের আর্জিও জানায় তারা। এডিডিএ তা খারিজ করে জানিয়ে দেয়, শিল্পের জন্য নেওয়া জমিতে আবাসন বা অন্য কিছু গড়া যাবে না। শিল্পই গড়তে হবে।

দীর্ঘ দিন ধরে বিদ্যুৎ ও জলের বিল বাকি থাকায় এক সময়ে সংযোগ ছিন্ন করে দেয় ডিপিএল। শুরু হয় রাতের অন্ধকারে করখানার যন্ত্রাংশ চুরি। দুষ্কৃতীরা পাঁচিল কেটে রাস্তা তৈরি করে নেয়। ২০১৭-এ দমদমের জেশপ কারখানায় আগুন লাগার পরে মালপত্র চুরি, নথি নষ্ট ও তছরূপের মামলায় রুইয়া গোষ্ঠীর কর্তা পবন রুইয়াকে গ্রেফতার করেছিল সিআইডি। দুর্গাপুরের কারখানাটিতেও কর্তৃপক্ষের তরফে চুরি বন্ধে কিছুই করা হয়নি বলে অভিযোগ। বাসিন্দাদের একাংশ জানিয়েছেন, এখন মাঝেমধ্যে পুলিশ দু'য়েজনকে গ্রেফতার করলেও লোহা চুরির বিরাম নেই। কারখানার ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা।

বাম আমলে কারখানাটি রুইয়া গোষ্ঠীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় সে কথা উল্লেখ করে বলেন, “তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ২০০৪ সালে ঢাক ঢোল পিটিয়ে নতুন রূপে এই কারখানার উদ্বোধন করেছিলেন। এক দিনের জন্যও চালু হয়নি। এখন লোহা চোরদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে।”

দুর্গাপুরের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক তথা দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বিপ্রেন্দু চক্রবর্তী জানান, তিনি ২০০৮-এ জেশপ কারখানা অবিলম্বে খোলার দাবিতে কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছিলেন। সেই বছরের শেষের দিকে কারখানা খোলা হবে বলে কর্তৃপক্ষ আশ্বাসও দিয়েছিলেন। কিন্তু কিছু হয়নি।

কারখানায় কাউকে না মেলায় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Durgapur

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy