E-Paper

বেঁধে হেনস্থায় বিজেপি নেতা অধরাই

বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরে একটি গরু বোঝাই পিক-আপ ভ্যান আটকে, সেটির আরোহীদের বেঁধে রাখা, মারধর, ওঠবস করানোর অভিযোগ ওঠে বিজেপির যুব মোর্চার রাজ্য কমিটির সদস্য পারিজাত ও তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২৫ ০৮:২৭
পারিজাত গঙ্গোপাধ্যায়।

পারিজাত গঙ্গোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

ঘটনার পরে তিন দিন পার। দুর্গাপুরে গরু পাচারকারী সন্দেহে একটি ভ্যানের কয়েক জন আরোহীকে বেঁধে রেখে হেনস্থার ঘটনায় অভিযুক্ত বিজেপির যুব নেতাকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। পারিজাত গঙ্গোপাধ্যায় নামে ওই নেতা পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাঁকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি তুলেছে নানা পক্ষ। এক সপ্তাহের মধ্যে গ্রেফতারের সময়সীমা দিয়েছেন আইএসএফ বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকী। আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার সুনীল চৌধুরী বলেন, ‘‘ইতিমধ্যে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পারিজাত-সহ বাকিদের খোঁজ চলছে।’’

বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরে একটি গরু বোঝাই পিক-আপ ভ্যান আটকে, সেটির আরোহীদের বেঁধে রাখা, মারধর, ওঠবস করানোর অভিযোগ ওঠে বিজেপির যুব মোর্চার রাজ্য কমিটির সদস্য পারিজাত ও তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। তাঁদের দাবি ছিল, ওই ভ্যানের লোকজন গরু নিয়ে যাওয়ার নথিপত্র দেখাতে পারেননি। সে দিনই এই ঘটনা নিয়ে পুলিশে অভিযোগ করেন পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। পরের দিন সিপিএমের তরফেও অভিযোগ করা হয়।

এখনও মূল অভিযুক্ত পারিজাত কেন অধরা, সে প্রশ্ন উঠেছে। শনিবার দুর্গাপুরের জেমুয়া গ্রামে আক্রান্তদের সঙ্গে দেখা করতে এসে আইএসএফ বিধায়ক নওসাদ দাবি করেন, ‘‘বিজেপি বিভেদ তৈরির ফাঁদ পেতেছে। গ্রামবাসীকে বলছি, এই ফাঁদে কেউ পা দেবেন না। তবে আমি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সন্দিহান। ঘটনাস্থল থেকে সামান্য দূরে থানা। তবু এই ঘটনা ঘটল কী করে?’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথের বক্তব্য, ‘‘যাঁর নেতৃত্বে এমন নিন্দনীয় ঘটনা ঘটেছে, তাঁকে যত দ্রুত সম্ভব গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।’’ রবিবার কংগ্রেসের তরফে পারিজাতকে গ্রেফতারের দাবিতে পুলিশের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

পুলিশ সূত্রের দাবি, ঘটনার পরেই পারিজাত দুর্গাপুর ছেড়েছেন। নিজের তিনটি ফোন নম্বরের কোনওটিই সঙ্গে নিয়ে যাননি। এখনও পর্যন্ত পরিবার বা ঘনিষ্ঠদের কারও সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ করার তথ্য মেলেনি। পুলিশ জানায়, তাঁর ঘনিষ্ঠদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ভিন্‌ রাজ্যে পালিয়েছেন কি না, নজর রাখা হচ্ছে। পুলিশের অনুমান, সম্ভবত অন্য কোনও নম্বর থেকে কারও সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন পারিজাত। তাঁর ঘনিষ্ঠ সকলের উপরে নজর রাখা হচ্ছে বলে দাবি তদন্তকারীদের।

এরই মধ্যে, এ বিষয়ে তৃণমূলের জেলা যুব সভাপতি পার্থ দেওয়াসির একটি বক্তব্যের ভিডিয়ো (আনন্দবাজার সেটির সত্যতা যাচাই করেনি) ঘিরে বিতর্ক বেধেছে। ওই ভিডিয়োয় তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘বিজেপি আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার ফের এমন চেষ্টা করলে, আইনভঙ্গকারীদের হাত-পা ভেঙে দেওয়া হবে।’ দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের বক্তব্য, ‘‘বয়স্ক মানুষের গায়ে হাত তোলার নিন্দা করছি। পুলিশ তার কাজ করছে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল যে ভাবে রাজনীতি করছে, হুমকি দিচ্ছে, তা বরদাস্ত করা হবে না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Cow Smuggling Case harassment Durgapur BJP Leader

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy