Advertisement
E-Paper

রিপোর্ট আসার আগেই দেহ পরিজনদের হাতে

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রণব রায় বলেন, ‘‘ওই নার্সিংহোম কোনও নিয়ম মানেনি। আমাদের কাছে একটি অভিযোগ জমা পড়েছে। ওই নার্সিংহোমকে শো-কজ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২০ ০১:০১
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

করোনা রিপোর্ট আসার আগেই ‘নেগেটিভ’ বলে ছোট নীলপুরের এক বৃদ্ধার দেহ পরিজনদের হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বর্ধমানের খোসবাগানের এক নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে। ৭০ বছরের বৃদ্ধার শেষকৃত্যে শ্মশানে ৪০ জন মতো হাজির হন। পরে জানা যায়, তিনি করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। করোনা-বিধি উপেক্ষা করায় ওই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। বর্ধমান থানাও করোনা-বিধিকে অবহেলা করে সংক্রমণ ছড়ানোর চেষ্টা করার মামলা রুজু করেছে।

মঙ্গলবার দুপুরে ওই নার্সিংহোমের অন্যতম কর্ণধার জিতেন্দ্রনাথ মণ্ডলের অবশ্য দাবি, ‘‘গাফিলতি বা অবহেলা হয়নি। সংরক্ষণ করার জায়গা ছিল না বলে দেহ তুলে দেওয়া হয়েছিল।’’ ওই নার্সিংহোমের চিকিৎসক আশিসকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই বৃদ্ধা কিডনি সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগছিলেন। নিয়ম মেনে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়। রবিবার সকালে তিনি মারা যান। তার ১২ ঘণ্টা পরে, করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট আসে। ততক্ষণে দেহ পরিজনদের দিয়ে দেওয়া হয়।’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রণব রায় বলেন, ‘‘ওই নার্সিংহোম কোনও নিয়ম মানেনি। আমাদের কাছে একটি অভিযোগ জমা পড়েছে। ওই নার্সিংহোমকে শো-কজ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, এ ধরনের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের সুস্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে। প্রতিটি নার্সিংহোমকে সেই নির্দেশের প্রতিলিপিও পাঠানো আছে। ওই নির্দেশিকা অনুযায়ী, রিপোর্ট আসার আগে কোনও রোগী মারা গেলে তাঁর দেহ সংরক্ষিত করে রাখতে হবে। রিপোর্ট আসার পরে, নিয়ম মেনে দেহের শেষকৃত্য করতে হবে। সংরক্ষণের অসুবিধা থাকলে মৃতকে করোনা-পজ়িটিভ ধরে শেষকৃত্য করতে হবে। পুরো বিষয়টি হবে স্বাস্থ্য দফতর ও পুলিশের তত্ত্বাবধানে। ওই নার্সিংহোম থেকে জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও বর্ধমান থানা একেবারে কাছে। অথচ, সরকারি দু’পক্ষেরই দাবি, তারা অন্ধকারে ছিল।

মৃতার ছেলে, মুম্বইয়ের একটি সংবাদসংস্থার কর্মী। তিনিও ওই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে কোভিড-বিধি উপেক্ষা করে সংক্রমণ ছড়ানোর চেষ্টার অভিযোগ করেছেন বর্ধমান থানায়। এ দিন দুপুরে তিনি বলেন, ‘‘ওই নার্সিংহোম মাকে কোভিড-নেগেটিভ বলে ছেড়ে দেয়। শেষকৃত্যে ৪০ জনের মতো হাজির হয়েছিলেন। পরদিন, সোমবার সকালে বর্ধমানের বাড়িতে বসে আছি, তখন নভি মুম্বই কর্পোরেশন থেকে ফোন আসে। বলা হয়, মা কোভিড-পজ়িটিভ। আমি বলি, মায়ের রিপোর্ট নেগেটিভ, তিনি মারা গিয়েছেন। তখন ওঁরা জানায়, আইসিএমআর পোর্টাল অনুযায়ী, মায়ের রিপোর্ট পজ়িটিভ। বর্ধমান থানাকে জানালে তারা নার্সিংহোমের কাছ থেকে পজ়িটিভ রিপোর্ট জোগাড় করে দেয়।’’

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওই অভিযোগের ভিত্তিতে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতি ও অবহেলার ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরকে চিঠি দিয়ে অতিমারি আইন প্রয়োগ করা যাবে কি না তা জানতে চাওয়া হচ্ছে।

Coronavirus in west Benga Bardhaman
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy