Advertisement
E-Paper

আক্রান্তদের সঙ্গে ‘অবাধে’ আড্ডা, দুশ্চিন্তা

হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীরা ঢুকতে বাধা দিলে অবাধে ওয়ার্ডের জানালা দিয়ে চলছে গল্পগুজব, দাবি কর্মীদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২১ ০৬:০৪
ওয়ার্ডের জানলা দিয়ে চলছে কথোপকথন।

ওয়ার্ডের জানলা দিয়ে চলছে কথোপকথন। নিজস্ব চিত্র।

কোভিড-ওয়ার্ড নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। এর আগে, কোভিড-ওয়ার্ডে রোগীর পরিজনেদের অবাধ যাতায়াত, এমনকি, চিকিৎসকদের একাংশের বিরুদ্ধে পিপিই কিট না পরার অভিযোগ উঠেছে। এখন হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীরা ঢুকতে বাধা দিলে অবাধে ওয়ার্ডের জানালা দিয়ে চলছে গল্পগুজব, দাবি কর্মীদের। চিকিৎসকদের আশঙ্কা, এ ভাবে করোনা আক্রান্তদের সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ চললে সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা বাড়বে।

রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রের দাবি, হঠাৎ করে পূর্ব বর্ধমানে পরপর দু’দিন ন’শোর কাছাকাছি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। রাজ্যের তরফে কী কারণ জানতে চাওয়া হয়। সেখানেও জানানো হয়েছে, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের এই ভয়াবহ চিত্রের কথা। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছে।

বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রাধারানি ওয়ার্ডে কোভিড চিকিৎসা চলছে। নিউ বিল্ডিংয়েও রোগীদের রাখা হয়েছে। ১৬০টি কোভিড এবং ১৬০টি নন কোভিড সারি বেডে চলছে চিকিৎসা। হাসপাতালের কর্মীদের একাংশের দাবি, নিউ বিল্ডিংয়ে রোগীর পরিজনেরা এখনও ওয়ার্ডের ভিতরে যখন-তখন ঢুকে পড়ছেন। রাধারানি ওয়ার্ডে নিরাপত্তার কড়াকড়ি থাকলেও রোগীর পরিজনেরা ওয়ার্ডের জানালা দিয়ে ঘণ্টার পরে ঘণ্টা কথা বলছেন বলে অভিযোগ। এ ছাড়া, রাধারানি ওয়ার্ডের বিভিন্ন ব্লকের মাঝের অংশ এবং সুপারের অফিসের দিকের জানালা দিয়ে রোগীকে খাবার দেওয়া হচ্ছে, দাবি কর্মীদের। এই প্রবণতা অত্যন্ত ভয়ঙ্কর বলেই মনে করছেন চিকিৎসকেরা।

ওই হাসপাতালের চিকিৎসক অমিত সরকারের দাবি, ‘‘আক্রান্ত রোগীর সঙ্গে দেখা করলে বা কথা বললে নিজের আক্রান্ত হওয়ার এবং অন্যদের সংক্রমিত করার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। তাই এই প্রবণতা ত্যাগ করতে হবে। আমাদের সকলকে এই রোগের ভয়াবহতা বুঝতে হবে।’’ যদিও হাসপাতালের রক্ষীরা জানাচ্ছেন, প্রতিদিনই ওয়ার্ডে ঢোকা নিয়ে তাঁদের সঙ্গে রোগীর পরিজনেদের বাকবিতণ্ডা হচ্ছে। অশান্তিও বাধছে।

চিকিৎসকদের একাংশের দাবি, প্রথম দিকে পিপিই কিট কয়েকজন না পরলেও এখন সমস্ত ডাক্তারেরাই পিপিই কিট পরছেন। কিন্তু সারি ওয়ার্ডে অবাধ যাতায়াত চললে পিপিই কিট পরেও লাভ নেই, দাবি তাঁদের। কারণ, যিনি রোগীর সঙ্গে থাকছেন, তিনি ওষুধ দিচ্ছেন, খাওয়াচ্ছেন আবার ওই পোশাকেই বাইরেও ঘোরাফেরা করছেন।

কলকাতার এক চিকিৎসক অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমার এক রোগী বর্ধমান হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। ওখানে গিয়ে হাসপাতালের অবস্থা দেখে চমকে গিয়েছি। রোগীদের একেবারেই আলাদা করে রাখার কথা যেখানে, সেখানে বাড়ির লোক পাশে বসে আছেন! সংক্রমণ বাড়বে এতে।’’ জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা আগেই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। তার পরেও পরিস্থিতি বদলায়নি। রাজ্যের কোভিড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের সদস্য সমরেন্দ্র বসু বলেন, ‘‘কোভিডের প্রথম পর্বেও বর্ধমান মেডিক্যালে একই ছবি দেখা দিয়েছে। বিস্তারিত রিপোর্ট রাজ্যের কাছে পাঠানোর পরে তা নিয়ন্ত্রণে আসে। বারবার কেন এ ধরনের পরিস্থিতি, তা সবাইকে দেখতে হবে।’’

বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডেপুটি সুপার কুণালকান্তি দে-র দাবি, ‘‘ওয়ার্ডে রোগী পরিজনদের অবাধ যাতায়াত অনেকটাই বন্ধ করা গিয়েছে। অনেকে লুকিয়ে ঢুকে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বা অন্য ভাবে আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসছেন, বলে অভিযোগ পাচ্ছি। তাঁদের বারবার সতর্ক করা হচ্ছে।’’

COVID-19 coronavirus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy