সদ্যোজাতের সঙ্গে মা। আসানসোলে। নিজস্ব চিত্র
দিনমজুরের কাজ করতেন স্বামী। ‘লকডাউন’-এর ফলে কাজ নেই। এই পরিস্থিতিতে স্বামী, পাঁচ বছরের ছেলের সঙ্গে প্রায় একশো কিলোমিটার হেঁটে বর্ধমান থেকে আসানসোলে পৌঁছন অন্তঃসত্ত্বা মহিলা। পরিবারটি একটি আশ্রয় শিবিরে ওঠে। সেখানে শনিবার এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন সরমিতা সোরেন নামে ওই মহিলা। ওই দম্পতি মেয়ের নাম রেখেছেন, ‘করোনা’।
একটি সামাজিক সংগঠন জানায়, এপ্রিলে আসানসোলের কালীপাহাড়ি লাগোয়া ঘাগরবুড়ি মন্দিরের অতিথিশালায় আশ্রয় শিবির খোলা হয়েছে। সেখানে আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া বাসিন্দা এবং পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সামাজিক সংগঠনটি জানিয়েছে, দিন পনেরো আগে ওই শিবিরে এসে আশ্রয় নেন ঝাড়খণ্ডের জামতাড়ার পরিযায়ী শ্রমিক হেমলাল মুর্মু, তাঁর স্ত্রী সরমিতা ও তাঁদের পাঁচ বছরের ছেলে।
হেমলাল জানান, তিনি বর্ধমানে দিনমজুরের কাজ করতেন। ‘লকডাউন’-এর জেরে স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে হেঁটেই বর্ধমান থেকে ঝাড়খণ্ডে বাড়ির ফিরছিলেন তাঁরা। কিন্তু পথে স্ত্রী ও ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর পরে, তাঁরা ওই শিবিরে আশ্রয় নেন। সেখানেই শনিবার সকাল ১০টা নাগাদ ওই মহিলা কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। খবর পেয়ে শুশ্রূষার ব্যবস্থা করে সংগঠনটি। হেমলাল বলেন, ‘‘করোনা-সঙ্কটের জন্য আমাদের আশ্রয় শিবিরে থাকতে হচ্ছে। মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে মনে হচ্ছে সঙ্কট কেটে যাবে। কিন্তু সময়টাকে মনে রাখতেই মেয়ের নাম রেখেছি করোনা।’’
এ দিকে, সংগঠনের থেকে খবর পেয়ে আসানসোল জেলা হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে স্বাস্থ্য-দল ওই আশ্রয় শিবিরে পৌঁছয়। হাসপাতালের সুপার নিখিলচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘নবজাতক-সহ পরিবারের সবাইকে হাসপাতালের ‘আইসোলেশন ওয়ার্ড’-এ রাখা হয়েছে। মা ও শিশু, দু’জনেই সুস্থ। পরিবারের বাকিরাও সুস্থ। ভাল ভাবে পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে তাঁদের। প্রয়োজনে তাঁদের লালারস সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্যও পাঠানো হবে।’’
ঘটনাচক্রে, দিনকয়েক আগে মা হয়েছেন আরামবাগের তৃণমূল সাংসদ অপরূপা পোদ্দার। তিনি ও তাঁর স্বামী শাকির আলি সদ্যোজাতের ডাকনাম রেখেছিলেন ‘করোনা।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy