Advertisement
০৫ মে ২০২৪

পুরপ্রধান নিয়ে জল্পনার মাঝে শপথ বয়কট সিপিএমের

পুরবোর্ড গঠনের দিন সাতেক আগেই অনুষ্ঠান বয়কটের ডাক দিল সিপিএম। আগামী ২১ মে জেলার চার পুরসভায় নিবার্চিত কাউন্সিলরদের শপথ নেওয়ার কথা। নতুন পুরপ্রধান, উপ-পুরপ্রধান কে হবেন— তা নিয়ে শহর জোড়া কৌতুহলের মধ্যেই এই সিদ্ধান্ত জানায় সিপিএম। দলের নির্বাচিত ছয় কাউন্সিলর পরে শপথ নেবেন বলেও জানিয়েছেন তাঁরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৫ ০১:০৯
Share: Save:

পুরবোর্ড গঠনের দিন সাতেক আগেই অনুষ্ঠান বয়কটের ডাক দিল সিপিএম। আগামী ২১ মে জেলার চার পুরসভায় নিবার্চিত কাউন্সিলরদের শপথ নেওয়ার কথা। নতুন পুরপ্রধান, উপ-পুরপ্রধান কে হবেন— তা নিয়ে শহর জোড়া কৌতুহলের মধ্যেই এই সিদ্ধান্ত জানায় সিপিএম। দলের নির্বাচিত ছয় কাউন্সিলর পরে শপথ নেবেন বলেও জানিয়েছেন তাঁরা। শাসকদলও দলের ভাবমূর্তি পরিচ্ছন্ন রাখতে জয়ী কাউন্সিলরদের সতর্ক করে দিয়েছে। রীতিমতো বৈঠক করে বলে দেওয়া হয়েছে, পুকুর বোঝানো, জমি সংক্রান্ত কোনও দুর্নীতির অভিযোগ পেলেই কড়া সিদ্ধান্ত নেবে দল।

২৫ এপ্রিল ফল বেরোনোর পর থেকেই কালনা শহরের রাস্তাঘাট, হাটেবাজারে কোন কাউন্সিলর কোন পদ পাবেন, কে পুরপ্রধান হবেন তা নিয়ে ফিসফাস শুরু হয়ে গিয়েছে। পুরপ্রধানের পরেই উপ-পুরপ্রধান এবং পূর্ত দফতর কে পাবেন তা নিয়ে আলোচনা চলঠছে শাসকদলের কর্মীদের মধ্যে। এ ছাড়াও জঞ্জাল, আলো, জল এবং অর্থ বিভাগের দায়িত্ব কারা পাবেন, তা নিয়েও নানা রকম কথা চলছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, নিবার্চিত কাউন্সিলরদের বেশির ভাগই বিভিন্ন পদে বসতে মরিয়া। অনেকে জেলার উচ্চ স্তরের নেতা ও রাজ্য নেতাদের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন বলে খবর। যদিও তৃণমূলের একাংশ বলছেন, কে, কোন পদে বসবেন তা ইতিমধ্যেই স্থির হয়ে গিয়েছে। কিছু মুখ্য পদের জন্য দেবপ্রসাদ বাগ, রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, বিনয় দত্ত, রাজু রায়, গোকুলচন্দ্র বাইন, সঞ্জয় বিশ্বাস, সুকন্যা পণ্ডিতদের মতো নির্বাচিত কাউন্সিলরদের নাম উঠে এসেছে। এদের মধ্যে পুরপ্রধান হিসাবে এগিয়ে রয়েছেন একই ওয়ার্ড থেকে পরপর তিন বার জয়ী এক কাউন্সিলর। পূর্ত দফতর, উপপুরপ্রধান হিসেবেও শোনা যাচ্ছে এমন কাউন্সিলরদের কথা যাঁদের বিরুদ্ধে কোনও রকমের অভিযোগ নেই। যদিও শাসকদলের আরেক অংশের দাবি, ২১ তারিখের আগে পর্যন্ত সমস্ত নাম নিয়েই বারবার কাটাছেঁড়া চলবে। নতুন নাম উঠে আসারও সম্ভাবনা রয়েছে। জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘‘২১ মে পুরপ্রধান নির্বাচিত হবেন। বাকি পদগুলি পরে ঠিক করা হবে। পুরো বিষয়টি রাজ্য নেতৃত্ব দেখছেন।’’

এই পরিস্থিতিতে নিবার্চিত ১২ কাউন্সিলর-সহ কয়েকজন নেতাদের নিয়ে একটি বৈঠকও করেছেন তৃণমূল নেতারা। দলীয় সূত্রে খবর, সেখানে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে পুকুর বোজানো, জমির দালালি, সালিশি সভা বসানো বা টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ পেলে দল কঠোর সিদ্ধান্ত নেবে। ইতিমধ্যে তিন নেতাকে এ ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। কাউন্সিলরদের সতর্ক করার কথা স্বীকার করেছেন জেলা সভাপতি নিজেও। তিনি বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষ কাউন্সিলরদের কাছ থেকে নিজেদের ওয়ার্ডের উন্নয়ন চান। তাঁদের সমস্যার কথা জানতে নতুন পুরপ্রধান-সহ কাউন্সিলাররা শপথের পরই বিভিন্ন এলাকায় ঘুরবেন। তবে পুকুর ভরাট, দালালির মতো অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়লে কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হবে।’’ মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ এক নেতার কথায়, ‘‘এক দিকে গোষ্ঠীকোন্দল, আর এক দিকে শহরে বেশ কিছু নেতাদের অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ায় দলের ভাবমূর্তি অনেকটাই নষ্ট হয়েছে। সাধারণ মানুষের বিশ্বাস ফেরাতে জনমুখী পরিকল্পনা এবং দলীয় শৃঙ্খলা ফেরানোই এখন মূল লক্ষ্য।’’

এর মধ্যেই কাউন্সিলরদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিএম। ইতিমধ্যেই শহরে বিভিন্ন পোস্টার সাঁটিয়ে সে কথা জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। সিপিএমের কালনা জোনাল কমিটির সদস্য স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সন্ত্রাস আর ব্যাপক ভোট লুঠের মাধ্যমে তৃণমূল পুরভোটকে প্রহসনে পরিণত করেছে। ফলে শহরের মানুষ সঠিক ভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি। যদি মানুষ ঠিকঠাক ভোট দিতে পারতেন তাহলে ফল অন্য হতো। তাই নৈতিক ভাবে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান বয়কটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’ দলের ছয় কাউন্সিলর পরে শপথ নেবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE