প্রতীকী ছবি
ঘূর্ণিঝড় ‘আমপান’-এর তাণ্ডবে পশ্চিম বর্ধমানে যত গাছ উপড়ে গিয়েছে, তার তুলনায় দশ গুণ বৃক্ষরোপণ করা হবে। ‘শহরাঞ্চলে বৃক্ষরোপণ প্রকল্প’-এ এই গাছগুলি পোঁতা হবে। এমনটাই জানিয়েছে বন দফতর।
ডিএফও (দুর্গাপুর) মিলনকান্তি মণ্ডল বলেন, ‘‘আসানসোল ও দুর্গাপুর—দুই মহকুমায় প্রায় চারশোটি গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সে জন্য অন্তত চার হাজার গাছের চারা পোঁতার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’’ বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘আমপান’-এ ক্ষতিগ্রস্ত গাছের হিসেব কষে দেখা গিয়েছে, দুর্গাপুরের তুলনায় আসানসোল মহকুমায় গাছের কম ক্ষতি হয়েছে। দুর্গাপুরের ৩৫৭টি ও আসানসোলের ৮০টি গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ক্ষতি পূরণের লক্ষ্যেই বৃক্ষ রোপণের পরিকল্পনা।
কিন্তু ঝড়ের জেরে দুর্গাপুর মহকুমায় গাছ কেন বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে? বন দফতরের ব্যাখ্যা, এখানকার পুরনো গাছগুলির অধিকাংশেরই শিকড় মাটির গভীরে যায় না। ফলে, ঝড়ের তীব্রতা বেশি হলেই গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এক দিকে, পরিবেশের ক্ষতি হয়। অন্য দিকে, গাছ বিদ্যুতের তারে পড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। রাস্তায় যানবাহন চলাচলে সমস্যা হয়। সমস্যার সমাধানে এখন থেকে যে সব গাছের শিকড় মাটির গভীরে যায়, তেমন গাছ পোঁতার বিষয়েই জোর দেওয়া হচ্ছে। ফলে, ঝড়ে গাছ কম ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই, বেশি করে বসন্তসুন্দরী, করচ, রুদ্রপলাশ, শাল, পিয়াল প্রভৃতি গাছ লাগানো হবে। এ ধরনের গাছের শিকড় মাটির অনেক গভীরে যায়। ডিএফও বলেন, ‘‘স্থায়ী ভাবে সবুজ তৈরি করাই আমাদের উদ্দেশ্য। সে জন্য দীর্ঘজীবী ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় সামাল দিতে পারে এমন গাছ লাগানোর কথাই ভাবা হচ্ছে।’’
প্রতি বছর ১৪ জুলাই থেকে এক সপ্তাহ জুড়ে ‘অরণ্য সপ্তাহ’ পালন করা হয়। সরকারি ভাবে এই অনুষ্ঠান ‘বনমহোৎসব’ হিসেবে পরিচিত। এই সময়ে এক সপ্তাহ ধরে বৃক্ষরোপণ, চারা গাছ বিতরণ, পরিবেশ সচেতনতা বিষয়ে পদযাত্রা-সহ নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়। আসানসোল ও দুর্গাপুর মূলত শিল্পাঞ্চল হওয়ায় দূষণের মাত্রাও বেশি। সে জন্য এই এলাকায় বৃক্ষরোপণের উপরে বিশেষ জোর দেওয়ার কথা জানায় বন দফতর। বছরভর বিভিন্ন সংস্থার তরফে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালিত হয়। তবে অরণ্য সপ্তাহে সংখ্যায় অনেক বেশি পরিমাণে গাছ পোঁতা হয়।
বন দফতরের দুর্গাপুরের বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বছর ২৪৩ হেক্টর জমি বৃক্ষরোপণের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। সে জমিতে অরণ্য সপ্তাহে প্রায় ছ’লক্ষ চারাগাছ লাগানোর লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, ওই সময়ে প্রায় দু’লক্ষ চারাগাছ বিতরণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy