বাড়ির দরজা ভেঙে মিলল এক প্রৌঢ়া ও তাঁর মেয়ের পচা-গলা দেহ। বর্ধমানের লক্ষ্মীপুর মাঠ এলাকায় বুধবার রাতে শিখা ভট্টাচার্য (৫৬) ও তৃষা ভট্টাচার্যের (৩২) দেহ মেলে। স্থানীয় সূত্রের খবর, গত বছর ২৮ অগস্ট মৃত্যু হয়েছিল শিখার স্বামী স্বপন ভট্টাচার্যের। পুলিশের অনুমান, দিন সাতেক আগে, স্বপনের মৃত্যুর এক বছরের মাথায় অবসাদে বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন মা-মেয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হুগলির একটি কলেজে শিক্ষকতা করতেন স্বপন। বছর কুড়ি আগে বর্ধমানে বাড়ি করেন। পড়শিদের একাংশের দাবি, স্বপনের মৃত্যুর পরে মা-মেয়েএলাকায় তেমন বেরোতেন না। পাশের বাড়ির পড়শি পূর্ণিমা চক্রবর্তী বলেন, “পাড়ার কারও সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না ওঁদের।” বুধবার রাতে একপড়শি একটি অনুষ্ঠানের জন্য তাঁদের নিমন্ত্রণ করতে গিয়ে, ডেকেও সাড়া পাননি। স্থানীয় বাসিন্দা বাপ্পা দত্তের দাবি, “কয়েক মাস আগেও ওঁরা ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। তাই পুলিশে খবর দেওয়া হয়।” পুলিশ দরজা ভেঙে ঢুকে দেখে, ঘরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র, পাখা চলছে। খাটে শুয়ে মা-মেয়ে। একটি বাটিতে নুডলস ও কীটনাশকের শিশি পড়ে রয়েছে।
মৃতদের আত্মীয়েরা জানান, বছর দেড়েক আগে তৃষার বিয়ে হয়। কিন্তু কয়েক মাস তিনি মায়ের কাছে থাকছিলেন। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গবেষণার প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন। মনোবিদ সপ্তর্ষি অধিকারী বলেন, “কোনও এক জন হয়তো বিষণ্ণ ছিলেন। দীর্ঘ সময় কেউ বিষণ্ণ থাকলে, পাশের জনকেও বিষণ্ণ করে তোলে। ফলে, সামাজিক দূরত্ব, শূন্যতাতৈরি হয়।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)