Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Jmauria

জামুড়িয়ায় সরকারি হাসপাতাল তৈরির আবেদন

কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে প্রথমে বিধি মেনে ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা করানোর পরে জেলা হাসপাতালে স্থানান্তর করতে হয়। এর ফলে, অনেক দেরি হয়ে যাওয়ায় অনেক সময়েই জখমের মৃত্যুও হয় বলে অভিযোগ।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জামুড়িয়া শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২০ ০১:২১
Share: Save:

বিস্তীর্ণ এলাকা নিয়ে তৈরি জামুড়িয়া বিধানসভার নানা প্রান্তে রয়েছে বেশ কয়েকটি প্রাথমিক ও উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র। কিন্তু সেগুলির পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দাদের একাংশ। এই পরিস্থিতিতে জামুড়িয়ায় একটি সরকারি হাসপাতাল তৈরির চাহিদা দীর্ঘদিনের।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জামুড়িয়া বিধানসভা এলাকায় আখলপুর পুর-এলাকায় এবং বাহাদুর গ্রামীণ এলাকায় ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। আখলপুরের অধীনে শিরিষডাঙা ও চুরুলিয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং ২২টি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র আছে। এ দিকে, বাহাদুরপুরের অধীনে চিচুড়িয়া ও বীরকুলটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং ১৪টি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র আছে। কিন্তু এলাকাবাসীর দাবি, কোথাও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। এমনকি, আখলপুর ও বাহাদুরপুরের ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রসব ও ডায়েরিয়ার রোগীরা ছাড়া অন্য কোনও রোগীকে ভর্তির পরিকাঠামোও নেই। প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি দুপুর ২টো পর্যন্ত খোলা থাকে। চুরুলিয়ায় প্রমীলা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বছরখানেক চিকিৎসক নেই। স্বাস্থ্যকর্মীরা চিকিৎসা করেন।

জামুড়িয়ার বিভিন্ন প্রান্তের বাসিন্দারা জানান, সর্দি, জ্বরের মতো সাধারণ রোগ ছাড়া অন্য যে কোনও রোগ হলে বেশির ভাগ সময়েই যেতে হয় আসানসোল জেলা হাসপাতাল। কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে প্রথমে বিধি মেনে ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা করানোর পরে জেলা হাসপাতালে স্থানান্তর করতে হয়। এর ফলে, অনেক দেরি হয়ে যাওয়ায় অনেক সময়েই জখমের মৃত্যুও হয় বলে অভিযোগ।

বিজয়নগরের বাসিন্দা বিপদ মণ্ডল জানান, তাঁর ছেলে ছোটন যকৃতের রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাঁকে আখলপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে স্থানান্তর করানো হলে হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয়। বিপদবাবুর দাবি, ‘‘কাছাকাছি কোনও হাসপাতাল থাকলে হয়তো আমার ছেলেটা বেঁচে যেত।’’

জামুড়িয়া বণিক সংগঠনের সম্পাদক অজয় খেতান বলেন, “জামুড়িয়ার বাসিন্দাদের হাসপাতালের জন্য ১৪ কিলোমিটার দূরে রানিগঞ্জ, ১৭ কিলোমিটার দূরে আসানসোল, ৪৫ কিলোমিটার দূরে দুর্গাপুর যেতে হয়। শহরের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নয়ন না হওয়ায় বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়।”

সিপিএম নেতা মনোজ দত্ত, বিজেপি নেতা সন্তোষ সিংহ, কংগ্রেস নেতা বিশ্বনাথ যাদবদের অভিযোগ, ‘‘সন্ধ্যা ৭টার পরে জামুড়িয়া থেকে আসানসোল-সহ অন্য সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে নিম্নবিত্ত পরিবারের বাসিন্দারা বিপাকে পড়ে যান। গাড়ি ভাড়া করে আসানসোল যেতে না পারলে রোগী-মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে।’’ প্রতিটি দলই জানিয়েছে, তারা বিধানসভা ভোটে পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালের দাবিতে সরব হবে। জামুড়িয়ার সিপিএম বিধায়ক জাহানারা খানের অভিযোগ, ‘‘বিধানসভায় বারবার আমি জামুড়িয়ার আখলপুরে সাধারণ হাসপাতাল তৈরির লিখিত দাবি জানিয়েছি।”

তবে, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) অশ্বিনী মাজি বলেন, ‘‘জামুড়িয়ায় এখনই কোনও সরকারি হাসপাতাল তৈরির পরিকল্পনা নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jmauria government hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE