Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
West Bengal Panchayat Election 2023

ভরাডুবির ভোটে হাতে এল তিন

গ্রামসভার সার্বিক আসনপ্রাপ্তির নিরিখে গেরুয়া শিবিরের থেকে অবশ্য অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে বাম-কংগ্রেস। রাতের খবর, জোট পেয়েছে কম-বেশি ২১০টি আসন।

জয়ের পরে। আউশগ্রামের যাদবগঞ্জে। ছবি: প্রদীপ মুখোপাধ্যায়

জয়ের পরে। আউশগ্রামের যাদবগঞ্জে। ছবি: প্রদীপ মুখোপাধ্যায়

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা, বর্ধমান শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৩ ০৬:৫৭
Share: Save:

গ্রামের ভোটে জেলার প্রায় সর্বত্রই উড়েছে ঘাসফুল পতাকা। ব্যতিক্রম শুধু পূর্বস্থলী ২ ব্লকের পাটুলি, ঝাউডাঙা, কালেখাঁতলা ১ এবং রায়না ১ ব্লকের পলাশন পঞ্চায়েত।

বিজেপির মুখরক্ষা করেছে পাটুলি, ঝাউডাঙা এবং কালেখাঁতলা পঞ্চায়েত। পাটুলি এবং কালেখাঁতলায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে বিজেপি। ঝাউডাঙা পঞ্চায়েতের ছ’টির মধ্যে তিনটি আসন দখল করেছে তারা। অন্য দিকে, দিনভর টানাপড়েনের পরে, পলাশন পঞ্চায়েতের দখল নিয়েছে সিপিএম।

গ্রামসভার সার্বিক আসনপ্রাপ্তির নিরিখে গেরুয়া শিবিরের থেকে অবশ্য অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে বাম-কংগ্রেস। রাতের খবর, জোট পেয়েছে কম-বেশি ২১০টি আসন। বিজেপি পেয়েছে ১২০টির মতো আসন।

ভোটের দিন জেলার বেশ কিছু জায়গায় তৃণমূলের সঙ্গে বিরোধীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। বিরোধী শিবিরের দাবি ছিল, বহু জায়গায় মানুষ তৃণমূলের ‘সন্ত্রাস’ রুখে ভোট দিয়েছেন। তার প্রতিফলন ঘটবে ভোটবাক্সে। বাস্তবে অবশ্য তা হয়নি।

তেরো আসনের পাটুলি পঞ্চায়েতে বিজেপি পেয়েছে ন’টি আসন। বাকিগুলি পেয়েছে তৃণমূল। কালেখাঁতলা ১ পঞ্চায়েতের ৩০টির মধ্যে বিজেপি পেয়েছে ১৬টি আসন। তৃণমূল ও সিপিএম পেয়েছে যথাক্রমে দশটি এবং চারটি আসন। ওই দু’টি পঞ্চায়েতে বিজেপির বোর্ডগঠন কার্যত নিশ্চিত। সিপিএমের সমর্থন পেলে ঝাউডাঙা পঞ্চায়েতেও বোর্ডগঠন করতে পারে বিজেপি। সে সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়েও দেয়নি সিপিএম। দলের এক নেতা বলেন, ‘‘নীতিগত ভাবে আমরা বিজেপিকে সমর্থন করতে পারি না। তবে ঝাউডাঙা পঞ্চায়েতে কী হবে, তা নিয়ে স্থানীয় স্তরে আলোচনা হবে।’’

পূর্বস্থলী ছাড়া জেলার আর কোথাও তেমন দাগ কাটতে পারেনি বিজেপি। বিজেপির কাটোয়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘গণনায় কারচুপি করে আমাদের অনেক জেতা আসন ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। না হলে আমাদের ফল অনেক ভাল হত।’’ একই অভিযোগ করেছে সিপিএমও। তৃণমূল নেতা দেবু টুডু অবশ্য দাবি করেন, ‘‘হেরে গিয়ে অপবাদ দিচ্ছে বিরোধীরা।’’

পলাশন পঞ্চায়েত শেষ পর্যন্ত কাদের দখলে থাকবে, তা নিয়ে দিনভর টানাপড়েন চলে সিপিএম এবং তৃণমূলের মধ্যে। দু’টি আসনে পুনরায় গণনা হয়। শেষ পর্যন্ত দেখা যায়, সিপিএমের ঝুলিতে গিয়েছে ১০টি আসন। আটটি পেয়েছে তৃণমূল। তৃণমূলের একাংশের দাবি, দলেরই একাংশ ‘অন্তর্ঘাত’ করায় হাতছাড়া হয়েছে পঞ্চায়েত। রায়না ১ ব্লকে তৃণমূলের ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ সুবিদিত। ‘কোন্দলের’ জেরে প্রায় ৮৯ লক্ষ টাকা খরচ করতে পারেনি বিদায়ী বোর্ড। প্রায় দু’বছর ধরে কার্যত থমকে ছিল উন্নয়নের কাজ। এর ফলে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছিল। এ বার পলাশন পঞ্চায়েতের প্রায় সব টিকিটই পেয়েছিল তৃণমূলের একটি গোষ্ঠী। তাতে অসন্তুষ্ট হন অন্য পক্ষের নেতা-কর্মীরা। তার প্রতিফলন পড়েছে ভোটবাক্সে, দাবি তৃণমূলের একাংশের।

পরাজয়ের নেপথ্যে যে দলের গোষ্ঠী-কোন্দল রয়েছে, তা কার্যত স্বীকার করে নেন পঞ্চায়েতের বিদায়ী উপপ্রধান, তৃণমূলের সামসুল মণ্ডল। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘দলের মধ্যে থেকেই কেউ যদি বেইমানি করে, তবে কী আর করা যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE