Advertisement
E-Paper

স্বনির্ভরতায় পথ দেখাচ্ছে তসর চাষ

কিছু দিন আগে অন্ডালের খাসকাজোড়ায় প্রথম শুরু হয়েছিল উদ্যোগ। তার পরে পাশের ব্লক দুর্গাপুর-ফরিদপুরেও তসর চাষের মাধ্যমে মহিলাদের স্বনির্ভর করতে উদ্যোগী হয়েছে ব্লক প্রশাসন। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ইতিমধ্যেই প্রায় ন’হাজার গুটি হাতে এসেছে।

অর্পিতা মজুমদার

শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৪৪
ব্যস্ত: গুটি সংগ্রহের পরে তা শুকোতে দেওয়া হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র

ব্যস্ত: গুটি সংগ্রহের পরে তা শুকোতে দেওয়া হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র

কিছু দিন আগে অন্ডালের খাসকাজোড়ায় প্রথম শুরু হয়েছিল উদ্যোগ। তার পরে পাশের ব্লক দুর্গাপুর-ফরিদপুরেও তসর চাষের মাধ্যমে মহিলাদের স্বনির্ভর করতে উদ্যোগী হয়েছে ব্লক প্রশাসন। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ইতিমধ্যেই প্রায় ন’হাজার গুটি হাতে এসেছে।

ধবনী গ্রামের ‘আস্থা স্বনির্ভর গোষ্ঠী’ ও কাঁটাবেরিয়ার আদিবাসী পাড়ার ‘সাঁওতালপাড়া স্বনির্ভর গোষ্ঠী’র কুড়ি জন সদস্যা যৌথ ভাবে ‘একশো দিনের কাজ’ প্রকল্পে তসর গুটির চাষ শুরু করেছেন। সহযোগিতা করছে ব্লক সেরিকালচার দফতর।

দুর্গাপুর শহরের বাইরে ধবনী গ্রাম পেরিয়ে কিছুটা এগোলেই ‘আদারির জঙ্গল’। সেই জঙ্গলের ধার দিয়ে যাওয়া রাস্তার দু’ধারে বন দফতর বছর খানেক আগে কয়েকশো অর্জুন গাছ লাগিয়েছিল। সেখানেই শুরু হয়েছে তসর চাষ।

ওই কুড়ি জন মহিলা জানান, এক জন প্রশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে ডিম ফোটানো থেকে গুটি সংগ্রহ, সব কাজ তাঁরাই করছেন। অক্টোবরে সেরিকালচার দফতর তাঁদের পাঁচ প্যাকেট ডিম তুলে দেয়। গাছ থেকে সবুজ অর্জুন পাতা সংগ্রহ করে বাড়িতে এনে ডিমগুলিকে তার মধ্যে রেখে দেওয়া হয়। দিন দু’য়েকের মধ্যেই ডিম ফুটে লার্ভা বেরোয়। তার পরে মইয়ের সাহায্যে গাছ পিছু ১৫-২০টি লার্ভা পাতায় ছেড়ে দেওয়া হয়। কাক-সহ নানা পাখিদের হাত থেকে এই লার্ভাগুলিকে বাঁচাতে দিনভর পালা করে কখনও টিন পিটিয়ে, কখনও বা গুলতি হাতে পাহারার কাজও করছেন মহিলারাই।

অক্টোবরের অকাল বৃষ্টিতে চাষে বেশ ক্ষতি হয় বলে জানান মিনতি মুখোপাধ্যায়, চায়না প্রামাণিক, পার্বতী সরেন’রা। গাছ থেকে মাটিতে পড়ে যাওয়া লার্ভা ফের গাছে তুলে দিলেও বহু লার্ভা বাঁচানো যায়নি বলে জানান তাঁরা। তবে এ সব প্রতিকূলতা পেরিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত ধাপে ধাপে প্রায় ন’হাজার গুটি হাতে এসেছে বলে জানা গিয়েছে। আরও কয়েক হাজার গুটি মিলতে পারে বলে জানান
ওই মহিলারা।

চাষে নেমে একশো দিনের প্রকল্প থেকে ওই দিনগুলিতে মহিলাদের মজুরি মিলেছে। সেরিকালচার দফতর অনুদান দিচ্ছে মাসে বারোশো টাকা। এবার গুটি বিক্রি করে যে অর্থ আসবে, তা-ও জমবে গোষ্ঠীর সদস্যাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। জানা গিয়েছে, গুটি বিক্রির দায়িত্বে রয়েছে সেরিকালচার দফতর।

এই পরিস্থিতিতে লাভ ভালই হবে বলে আশা করুণা তন্তুবায়, সুমিত্রা হেমব্রম, লক্ষ্মী কিস্কু, সোনালি হেমব্রমদের। বিডিও (দুর্গাপুর-ফরিদপুর) শুভ সিংহরায় বলেন, ‘‘এই প্রথমবার মেয়েরা তসর গুটির চাষ করছেন। আশাজনক ফল মিলেছে। অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতে আরও সাফল্য আসবে।’’

অন্ডালের খাসকাজোড়ায় বছর পাঁচেক ধরে তসর চাষ করছেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর দশ জন মহিলা। পশ্চিম বর্ধমানের ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) শঙ্খ সাঁতরা জানান, এবার গুটি বিক্রি করে ওই গোষ্ঠীর আয় হয়েছে প্রায় ৮০ হাজার টাকা। কাঁকসা ব্লকেও জায়গা বাছা হয়েছে। সেখানেও তসরগুটি চাষ দ্রুত শুরু করা হবে। তিনি বলেন, ‘‘একশো দিনের প্রকল্পের এমন উদ্যোগ প্রশংসা পেয়েছে বাইরের রাজ্য থেকে আসা প্রতিনিধিদলের কাছেও।’’

Cultivation Self Help Group
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy