E-Paper

বনাঞ্চল তৈরিতে সমস্যা জমি নিয়েই

ঘটনা হল, চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি পূর্ব বর্ধমানে আয়োজিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠকে পশ্চিম বর্ধমানে বনাঞ্চল তৈরির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল।

সুশান্ত বণিক

শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৩ ০৭:৪০
বায়ো-ডাইভার্সিটি পার্ক। নিজস্ব চিত্র

বায়ো-ডাইভার্সিটি পার্ক। নিজস্ব চিত্র

দূষণ থেকে বাঁচতে এবং পরিবেশ রক্ষায় পশ্চিম বর্ধমানে বনাঞ্চল তৈরির প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পারছেন সংশ্লিষ্ট সব পক্ষই। তা নিয়ে নানা পরিকল্পনা ও তোড়জোড় করছে প্রশাসন। কিন্তু সে সঙ্গে, প্রশাসনের কর্তারা স্বীকার করছেন এই জেলায় বনাঞ্চল তৈরির জন্য মূল সমস্যা হল জমি।

ঘটনা হল, চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি পূর্ব বর্ধমানে আয়োজিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠকে পশ্চিম বর্ধমানে বনাঞ্চল তৈরির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্যদের আসানসোলের ইঞ্জিনিয়ার সুদীপ ভট্টাচার্যও বলেন, “শিল্পাঞ্চলে গাছের সংখ্যা ক্রমশ কমে যাচ্ছে। নিয়মিত বনসৃজনেও প্রয়োজন মিটছে না। তাই এত উষ্ণায়ন ও দূষণ।”

ডিএফও (দুর্গাপুর) বুদ্ধদেব মণ্ডল জানাচ্ছেন, গত প্রায় দু’বছর ধরেই বনাঞ্চল তৈরির বিষয়ে প্রক্রিয়া চলছে। দুর্গাপুর মহকুমার পারুলিয়ায় ২৫ হেক্টর জমিতে হাওড়ার বটানিক্যাল গার্ডেনের আদলে একটি ‘নগর বন’ তৈরি হচ্ছে। সেখানে রয়েছে বিভিন্ন ওষধি, ফল ও ঘন ছায়া দিতে পারে, এমন গাছ।

পাশাপাশি, জেলা পরিষদের সঙ্গে যৌথ ভাবে বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় ‘বায়ো-ডাইভার্সিটি পার্ক’ তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সালানপুরের উত্তররামপুর-জিৎপুরে প্রায় তিন একর জমিতে এবং জামুড়িয়ায় এমন বনাঞ্চল তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সে সঙ্গে, খনি এলাকায় জল ভর্তি নানা পরিত্যক্ত খাদানের আশপাশের অব্যহৃত জমিতে বনাঞ্চল তৈরির জন্য ইসিএলের কাছে আবেদন জানিয়েছে বন দফতর।

কিন্তু জেলায় বনাঞ্চল তৈরির ক্ষেত্রে সমস্যাও দেখা দিচ্ছে। বুদ্ধদেবের বক্তব্য, “আসানসোল মহকুমায় পর্যাপ্ত জমি নেই। তাই দুর্গাপুরের আদলে ‘নগর বন’ তৈরি করা যাচ্ছে না।” এই পরিস্থিতিতে ছোট আকারে বনাঞ্চল তৈরির বিষয়ে জোর দেওয়ার কথা জানান বুদ্ধদেব। বন দফতর জানায়, এ জন্য দীর্ঘদিন বন্ধ পড়ে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার জমিতে বনাঞ্চল তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সে জন্য রূপনারায়ণপুরের হিন্দুস্তান কেবল্‌স, বার্নপুরের বার্ন স্ট্যান্ডার্ড, দুর্গাপুরের এমএএমসি, রানিগঞ্জের জেকে নগর ইত্যাদি সংস্থাকে বাছাই করা হচ্ছে। তবে জেলায় সামগ্রিক ভাবে বনাঞ্চল তৈরি ও রক্ষায় নাগরিক সচেতনতার উপরে ভরসা করছে বন দফতর।

পাশাপাশি, আসানসোলের মেয়র বিধান উপাধ্যায় জানান, বন দফতরের পরামর্শ মেনে শহরের বহুতল নির্মাতাদের মোট জমির ২৫ শতাংশ অংশে গাছ লাগানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সে সঙ্গে, ইসিএলের মুখ্য জন-সংযোগ আধিকারিক পুণ্যদীপ ভট্টাচার্য জানান, এ বছর সংস্থার তরফে ১৪০ হেক্টর জমিতে প্রায় তিন লক্ষ চারা রোপণ করা হবে। গত বছর ১১৯ হেক্টর জমিতে আড়াই লক্ষের কিছু বেশি গাছ লাগানো হয়েছিল।

তবে, বন দফতরের এ সব উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েও কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পরিবেশবিদ মানস পরামানিক এবং উদ্ভিদ বিশেষজ্ঞ সপ্তর্ষি মুখোপাধ্যায়দের পরামর্শ, “এই বনাঞ্চলগুলি যাতে নিয়মিত রক্ষা করা হয়, সে দিকে নজর দেওয়া দরকার।” (শেষ)

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Asansol Afforestation Land Dispute

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy