Advertisement
E-Paper

Para-Swimmer: বাধা জয় করে পদক এনেছে অনামিকা

তাঁরা আঁধারে আলো। করোনা-কালে দুর্গা আবাহনের পর্বে স্বপ্রভায় দীপ্ত মৃন্ময়ীদের সঙ্গে পরিচয়।

সুব্রত সীট

শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২১ ০৮:৪৩
সাঁতারু অনামিকা গড়াই। ছবি: বিকাশ মশান

সাঁতারু অনামিকা গড়াই। ছবি: বিকাশ মশান

আদৌ উঠে বসতে পারবে কি না, তা নিয়েই সংশয় ছিল। সেই প্রতিকূলতার সঙ্গে ছিল পরিবারের আর্থিক প্রতিবন্ধকতাও। সব বাধা জয় করে দুর্গাপুরের একশো শতাংশ প্রতিবন্ধী কিশোরী অনামিকা গড়াই জাতীয় তো বটেই, সাঁতারে আন্তর্জাতিক পদকও নিয়ে আসছে।

মাঝে করোনায় আক্রান্ত হয়ে, কিছু দিন প্রশিক্ষণ পুরোপুরি বন্ধ ছিল। তবে করোনা জয় করার পরে, ফের শুরু হয়েছে টুকটাক প্রশিক্ষণ। বাহারিনে অনুষ্ঠিত হতে চলা ‘অনূর্ধ্ব ২০ এশিয়ান প্যারা গেমস ২০১২১’-র প্রস্তুতিতে এখন ব্যস্ত অনামিকা। তাতে ১৩ জনের তালিকায় অনামিকার নাম এসেছে। বাবা কিংশুক জানান, লকডাউনে সুইমিং পুল বন্ধ থাকায় বাড়িতেই ‘ফ্রি হ্যান্ড’ শরীরচর্চা করেছে অনামিকা। নিজেকে যতটা সম্ভব ‘ফিট’ রাখার চেষ্টা করেছে। সবে সুইমিং পুল খুলেছে। দু’একদিন প্রশিক্ষণও করেছে। তবে পুজোর পর থেকে নিয়মিত প্রশিক্ষণে যাবে সে।

কিংশুক বর্তমানে একটি আবাসনে সিকিউরিটি সুপারভাইজ়ার এবং স্ত্রী দোলা একটি বেসরকারি হাসপাতালের হস্টেলে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করেন। কিংশুক বলেন, “সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতা না পেলে, মেয়েকে কখনওই দেশে-বিদেশে প্রতিযোগিতায় পাঠানো সম্ভব ছিল না।”

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, অনামিকার আড়াই বছর বয়সে, তার ‘হেরিডিটরি মোটর সেনসরি নিউরোপ্যাথি’ রোগ ধরা পড়ে। জটিল জিনগত রোগ। এই রোগের সাধারণত কোনও চিকিৎসা নেই। ফিজ়িওথেরাপি করে কিছুটা উন্নতি হতে পারে। আর উন্নতি হতে পারে সাঁতার কাটতে পারলে। মা দোলা তাকে নিয়ে যান দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি সংস্থার সুইমিং পুলে। পরিবারের আর্থিক দূরবস্থা সত্ত্বেও, মেয়েকে তিনি ভর্তি করে দেন সেখানে। প্রশিক্ষক ত্রিদিব ভট্টাচার্য মেয়েকে সাহায্য করার জন্য মাকেও সুইমিং পুলে নামার পরামর্শ দেন। দোলাও নেমে পড়েন মেয়ের সঙ্গে। ধীরে ধীরে শারীরিক পরিস্থিতির উন্নতি হতে থাকে অনামিকার।

২০১৪-তে রাজ্য প্রতিবন্ধী সাঁতার প্রতিযোগিতায় ৫০ মিটারে সোনা, ইনদওর-এ জাতীয় প্রতিযোগিতায় তিনটি রুপোর পদক পায় অনামিকা। ২০১৫-তে রাজ্যে সোনা, জাতীয় প্রতিযোগিতায় দু’টি সোনা, দু’টি রূপোর পদক পায় সে। ২০১৬-তে দুবাইয়ে ইউথ এশিয়ান প্যারা গেমসেও সোনা পায় সে। ২০১৭-তে রাজস্থানের জয়পুরে ১৬তম জাতীয় প্রতিবন্ধী সাঁতার প্রতিযোগিতায় চারটি সোনা, ২০১৮-তে জার্মানির বার্লিনে ওয়ার্ল্ড প্যারা সুইমিং চ্যাম্পিয়নশিপে যোগ দিয়ে একটি সোনা, তিনটি রুপো ও দু’টি ব্রোঞ্জ পদক পায়। তবে সে বছরেই ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় অনুষ্ঠিত প্যারা এশিয়ান গেমসে গিয়েও মেডিক্যালের কাগজপত্রে সামান্য ত্রুটির জন্য যোগ নিতে না পারায় হতাশ হয়ে পড়ে অনামিকা, জানান কিংশুক।

কিন্তু সে সব এখন অতীত। বছর সতেরোর অনামিকার প্রতিক্রিয়া, “এখন আমার একমাত্র লক্ষ্য, অনূর্ধ্ব ২০ এশিয়ান প্যারা গেমস।”

Bengal Swimmer Durgapur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy