E-Paper

জয়দীপ জড়িত, মানতে নারাজ তাঁর পরিবার

কান্দরা ব্লক অফিস লাগোয়া রেলগেটের কাছে পিচ রাস্তার ধারে জয়দীপদের দোতলা বাড়ি। স্টেশনপাড়ায় বাড়ির সামনেই রয়েছে তাঁদের পারিবারিক মিষ্টির দোকান।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০২৩ ০৮:১৭
যাদবপুর কাণ্ডে ধৃত জয়দীপের কেতুগ্রামের বাড়ি।

যাদবপুর কাণ্ডে ধৃত জয়দীপের কেতুগ্রামের বাড়ি। —নিজস্ব চিত্র।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে ছাত্র-মৃত্যুর ঘটনায় শনিবার রাতে গ্রেফতার হয়েছেন কেতুগ্রামের বাসিন্দা জয়দীপ ঘোষ। কলকাতার বিক্রমগড়ে ভাড়াবাড়িতে থাকতেন যাদবপুরের এই প্রাক্তনী। তাঁর গ্রেফতারের খবর আসার পরেই বিষয়টি নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে কেতুগ্রামের কান্দরায় জয়দীপের বাড়ির এলাকায়। জয়দীপের স্কুলের শিক্ষক থেকে প্রতিবেশীদের অনেকেই জানাচ্ছেন, ভাল ছেলে হিসেবেই এলাকায় পরিচিত তিনি। কারও কারও মতে, তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে। আবার কেউ কেউ দাবি করছেন, যদি দোষ প্রমাণ হয়, তবে শাস্তি হোক।

কান্দরা ব্লক অফিস লাগোয়া রেলগেটের কাছে পিচ রাস্তার ধারে জয়দীপদের দোতলা বাড়ি। স্টেশনপাড়ায় বাড়ির সামনেই রয়েছে তাঁদের পারিবারিক মিষ্টির দোকান। বাবা বংশীলাল ঘোষ সেই দোকান চালান। পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জয়দীপ পড়াশোনার ফাঁকে বাবাকে দোকানে সাহায্য করতেন। রবিবার সকালে ওই দোকানের সামনে লোকজনের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছিল।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর তেইশের জয়দীপ কান্দরা জেএম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক, বোলপুর থেকে উচ্চ মাধ্যামিক পাশ করার পরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখানে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয় নিয়ে স্নাতক হয়। যাদবপুরে হস্টেলে থেকেই পড়াশোনা করতেন। পড়া শেষে বছরখানেক বিক্রমগড়ে ভাড়াবাড়িতে থাকছিলেন। তবে হস্টেলে নিয়মিত যাতায়াত ছিল বলে পরিজনদের সূত্রের খবর। টিউশন দেওয়ার পাশাপাশি চাকরির প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন জয়দীপ, জানায় পরিবার।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, যাদবপুরে ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনার কয়েক দিন পরে বাড়ি আসেন জয়দীপ। বাবার সঙ্গে দোকানেও তাঁকে বসতে দেখা গিয়েছে। ১৭ অগস্ট বিক্রমগড়ে ফিরে যান। পর দিন যাদবপুর থানা থেকে একটি নোটিস আসে বাড়িতে। তাতে জয়দীপকে ১৯ অগস্ট যাদবপুর থানায় দেখা করতে বলা হয়। সে রাতেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

জয়দীপের বাবা বংশীলাল রবিবার বলেন, ‘‘একটি ছেলে মারা গিয়েছে, এটা খুবই দুঃখজনক। তবে আমার ছেলে হস্টেলে থাকত না। ভাড়াবাড়িতে থেকে টিউশন দিত। চাকরির চেষ্টা করছিল। দু’দিন আগে বাড়ি থেকে ফিরে যায়। রবিবার রাতে জানতে পারি, পুলিশ ওকে আটক করেছে।’’ এলাকায় জয়দীপের বন্ধু শুভ্রনীল দত্ত বলেন, ‘‘এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না যে জয়দীপ ওই ঘটনার সঙ্গে কোনও ভাবে যুক্ত থাকতে পারে। পুলিশ উপযুক্ত তদন্ত করুক!’’ জয়দীপের পিসি চন্দনা মাহাত দাবি করেন, ‘‘আমার ভাইপো ছাত্রের মৃত্যুর সঙ্গে কোনও ভাবেই যুক্ত নয়। ওকে ফাঁসানো হচ্ছে।’’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কান্দরা জেএম উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, ‘‘জয়দীপ স্কুলে মেধাবী ছিল। যাদবপুরে ভর্তির কথা জেনে ভাল লেগেছিল। কিন্তু এ ভাবে গ্রেফতার হয়েছে, ভাবতে অবাক লাগছে।’’ পড়শিদের একাংশের কথায়, ‘‘দোষ প্রমাণ হলে শাস্তি হোক। কিন্তু ফাঁসানো যেন না হয়, সেটাই আমাদের আর্জি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

ketugram

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy