Advertisement
E-Paper

ছুটি নিয়ে চিন্তায় হরদয়ালের স্কুল, পরিবার

‘‘ওই ক্ষতিপূরণে আমাদের খানিকটা সুরাহা হবে। তবে সমস্যা তো পুরো মিটবে না। বাবা পুরোপুরি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত সবেতন ছুটি দরকার।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:৫৭
 বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে শিক্ষক হরদয়াল কর্মকার। নিজস্ব চিত্র

বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে শিক্ষক হরদয়াল কর্মকার। নিজস্ব চিত্র

২০১৮-র ১৪ মে, পঞ্চায়েত ভোট চলাকালীন প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্ব সামলানো জামুড়িয়ার বোগড়া বিবেকানন্দ মিশনের সহকারী প্রধান শিক্ষক হরদয়াল কর্মকারের ‘সেরিব্রাল অ্যাটাক’ হয়। সম্প্রতি তাঁকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা জানিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কিন্তু, আপাতত পরিবার ও স্কুলের শিক্ষক, সকলেরই প্রার্থনা, দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন হরদয়ালবাবু। তবে সেই সঙ্গে চিন্তা, তাঁর ছুটি প্রায় শেষ হয়ে যাওয়ায়।

কী ঘটেছিল সে দিন? নিউ সাতগ্রাম এলাকায় বাড়িতে বসে বছর ৪৭-র হরদয়ালবাবু জানান, নির্বাচনের দিন দুপুর ২টো নাগাদ তিনি ভোটগ্রহণকেন্দ্রে খাওয়াদাওয়া সেরে দেখেন ডান হাতে কিছু ধরতে পারছেন না। সঙ্গে সঙ্গে ভোটকর্মীরা তাঁকে কেন্দ্রের বাইরে নিয়ে গিয়ে একটি বেঞ্চে বসিয়ে দেন তাঁকে। বুঝতে পারেন, তিনি বসতেও পারছেন না। এর পরে ভোটকর্মীরাই আসানসোল জেলা হাসপাতালে ভর্তি করান হরদয়ালবাবুকে। পাশেই থাকা স্ত্রী শশীপ্রভাদেবী জানান, জেলা হাসপাতালে এমআরআই করানোর পরে চিকিৎসকেরা জানান, স্বামীর ডান দিক পঙ্গু হয়ে গিয়েছে। ওই দিনই হরদয়ালবাবুকে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

হরদয়ালবাবু বলেন, ‘‘এখন ডান হাত অর্ধেকটা তুলতে পারছি। তবে ডান পায়ে কোনও সাড় নেই।’’ পরিবার সূত্রে জানা যায়, তাঁর নিয়মিত ফিজিওথেরাপি করাতে হচ্ছে। সপ্তাহে তিন দিনের বেশি স্কুলে যেতে পারছেন না। দৈনন্দিন কাজকর্মেও দরকার হচ্ছে সাহায্যের। বেসরকারি হাসপাতালে ছ’লক্ষ টাকারও বেশি খরচ হয়েছে, জানান শশীপ্রভাদেবী। তার পরে খরচ হয়েছে আরও চার লক্ষ টাকা। এই মুহূর্তে হরদয়ালবাবুর জন্য মাসে প্রায় তিরিশ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে বলে পরিবারের সদস্যেরা জানান।

এই পরিস্থিতিতে কমিশনের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে পরিবার। হরদয়ালবাবুর মেয়ে, আসানসোল বিবি কলেজের তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া দীপা বলেন, ‘‘ওই ক্ষতিপূরণে আমাদের খানিকটা সুরাহা হবে। তবে সমস্যা তো পুরো মিটবে না। বাবা পুরোপুরি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত সবেতন ছুটি দরকার।’’ হরদয়ালবাবুর বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ছেলে রবিকান্ত দশম শ্রেণিতে পড়ে।

ছুটি নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন হরদয়ালবাবুর সহকর্মীরাও। স্কুলের প্রধান শিক্ষক মন্ময় কাঞ্জিলাল বলেন, ‘‘উনি খুব ভাল শিক্ষকের পাশাপাশি দক্ষ প্রশাসকও। তাঁর ছুটি এই ফেব্রুয়ারিতে শেষ হয়ে যাবে। তার পরে কী হবে, ভাবতেই পারছি না।’’ স্কুলের শিক্ষক, পড়ুয়া সকলেরই এখন এই মুহূর্তে প্রার্থনা, দ্রুত যেন বাংলার শিক্ষক হরদয়ালবাবু সুস্থ হয়ে যান। একই কথা বলেছেন তাঁর পড়শি তথা ওই স্কুলেরই সহ-শিক্ষক উদয়চাঁদ দলুইও। তাঁর কথায়, ‘‘হরদয়ালবাবুর পাশে আমরা সকলেই রয়েছি। তাঁর ছুটির ব্যবস্থা হলে সবথেকে ভাল হয়।’’ তবে সেই সঙ্গে, শিক্ষকদের আরও দাবি, প্রয়োজনে পরিবারের এক জনকে চাকরিতে নিয়োগও করা যেতে পারে।জেলা স্কুল পরিদর্শক অজয় পাল অবশ্য বলেন, ‘‘আমি বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর রাখছি। অবস্থা বুঝে আমরা মানবিকতার সঙ্গে পরবর্তী পদক্ষেপ করব।’’

Panchayat Election Vote Education Health
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy