Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Lok Sabha Election 2024

আলুর ফলন কম, বিমা নিয়ে চিন্তা ভোটের মুখে

জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা যায়, গত বছর ৭৮ হাজার চাষি আলুর জন্য বিমা করেছিলেন। এ বার এখনও পর্যন্ত ৬৩ হাজার চাষি বিমা করিয়েছেন।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:০৭
Share: Save:

নিম্নচাপের জেরে এ বছর আলু চাষ তুলনামূলক কম হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ফলনও গড়ে ন’টন কমেছে। ক্রেতা-বিক্রেতা থেকে সংরক্ষণকারীদের আশঙ্কা, গুণমান ভাল না হলেও আলুর দাম এ বছরে ঊর্ধ্বমুখীই থাকবে। আবার, হিমঘর মালিকদের দাবি, এ বছর হিমঘর ভর্তি হওয়ার সম্ভাবনা কম। এই পরিস্থিতিতে চাষিরা বিমার দাবিতে বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলন শুরু করেছেন। কিন্তু ভোটের মরসুমে বিমা মিলবে কি না, চিন্তায় চাষিদের একাংশ।

জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা যায়, গত বছর ৭৮ হাজার চাষি আলুর জন্য বিমা করেছিলেন। এ বার এখনও পর্যন্ত ৬৩ হাজার চাষি বিমা করিয়েছেন। জামালপুরের মশাগ্রামের শেখ মইদুল ইসলামের দাবি, “বিঘাতে গড়ে ৯০-১০০ বস্তা (৫০ কেজির বস্তা) আলু হয়। সেখানে গড়ে ২৫-৩০ বস্তা আলু হচ্ছে। তাও মান ভাল নয়। আলু কেউ কিনতে চাইছেন না। বিমা না পেলে অনেক চাষিই আর্থিক ক্ষতির চাপ সামলাতে পারবেন না।” মেমারির রাধাকান্তপুরে রাজ্য সড়ক অবরোধ করেছিলেন চাষিরা। বর্ধমানের কার্জন গেটের সামনে বিমার দাবিতে বিক্ষোভ হয়। চাষিদের দাবি, নিম্নচাপের জন্য দু’বার আলু চাষ করতে হয়েছে। দ্বিতীয়বার চাষ করে ফলন পাওয়া যাচ্ছে না। ধসা রোগেও মাঠের পর মাঠ আলু গাছ নষ্ট হয়েছে।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

কৃষি দফতরের দাবি, চাষিরা যাতে বিমা পান তার জন্য সমীক্ষা শুরু হয়েছে। প্রথম ধাপে গড় ফলন নির্ধারণ হয়ে গিয়েছে। এর পরে বিমা সংস্থা উপগ্রহ চিত্র দেখে সমীক্ষা করবে। তারপরে গত বছরের ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখে ও চলতি মরসুমে উৎপাদনের নিরিখে ফসলের ক্ষতি ঠিক করা হবে। দফতরের এক কর্তার দাবি, “ভোটের সময় তো আর বিমার ক্ষতিপূরণ পাবেন না চাষিরা। ভোট মিটলেই যাতে ক্ষতিপূরণ পান, তার জন্য সব সমীক্ষা, প্রক্রিয়া করে রাখা হচ্ছে। ক্ষতির মুখে প্রকৃত চাষিরা নিশ্চিত ভাবেই ক্ষতিপূরণ পাবেন।” কৃষি দফতরের দাবি, গত বছর জেলায় ৬৭ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছিল। ফলন হয়েছিল ১৯,০৩,৬৬৮ টন (গড়ে ২৮ টন)। আর এ বার চাষ হয়েছে ৬৩ হাজার হেক্টরে। উৎপাদন হয়েছে ১১,৯৭,৮৪৮ টন (গড় ১৯ টন)। অর্থাৎ গত বছরের চেয়ে ৭,০৬,৬৬৮ টন আলু কম উৎপাদন হয়েছে।

দফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী, জেলায় ‘আলু এলাকা’ বলে পরিচিত জামালপুর (৬৫.৮১ টন), কালনা ১ (৪৭.২২), কালনা ২ (৬১.৭১), মেমারি ১ (৫৬.৩৮), মেমারি ২ (৬৮.৩৮) ব্লকে হেক্টর প্রতি গড় উৎপাদন অনেকটাই কমেছে। তবে কাটোয়া ২, রায়না ১, মঙ্গলকোট, ভাতার, আউশগ্রাম ১ ও ২ ব্লকে উৎপাদন ভাল হয়েছে। দফতরের রিপোর্ট জানাচ্ছে, জেলায় ৬৩ হাজার আলু চাষের মধ্যে ‘আলু এলাকা’ বলে পরিচিত ব্লকগুলিতেই প্রায় ৪৫-৫০ হাজার হেক্টর চাষ হয়। ফলনের প্রভাব হিমঘর-ব্যবসাতেও পড়ছে। হিমঘর ব্যবসায়ী সমিতির দাবি, জেলার হিমঘরগুলিতে ৩ কোটি ১৫ লক্ষ বস্তা (৫০ কেজির) আলু রাখার ক্ষমতা রয়েছে। হিমঘর বন্ধ হওয়ার মুখে ১ কোটি ৬০ লক্ষ বস্তা আলু হিমঘরে ঢুকেছে। ওই সমিতির রাজ্যের কার্যকরী কমিটির সদস্য কৌশিক কুণ্ডুর দাবি, “ওই আলুর মধ্যে ১৫ শতাংশ জেলার বাইরে থেকে এসেছে। মেমারি, জামালপুর, বর্ধমান, আউশগ্রামের একাংশে ও গলসির হিমঘরগুলির অবস্থা খুব খারাপ। বেশ কয়েকটি হিমঘর চালানোর মতো অবস্থায় নেই।”

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 Bardhaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE