ঘটনার পরে বাড়িতে। নিজস্ব চিত্র
নিকটাত্মীয়ের শ্রাদ্ধের কাজ শেষে পুকুরে স্নান করতে নেমেছিলেন বাবা, ছেলে। কিছুক্ষণের মধ্যেই দু’জনের তলিয়ে গিয়ে মৃত্যু হল। রবিবার সকালে মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে আসানসোল উত্তর থানার উত্তর ধাদকায়। মৃতদের নাম, দীপক পাল (৪৫) ও দিব্যেন্দু পাল (১৭)।
পুলিশ জানায়, এ দিন দীপকবাবুর কাকার শ্রাদ্ধানুষ্ঠান ছিল। সকাল ১০টা নাগাদ কাজ শেষ হয়। এর পরেই পরিবারের অন্যদের সঙ্গে দিব্যেন্দুকে নিয়ে পাড়ারই ওই পুকুরে স্নান করতে যান পেশায় রেলকর্মী দীপকবাবু। প্রথমে পুকুরে নামে ছেলে দিব্যেন্দু। পরিবারের সদস্যরা জানান, বৃষ্টির জেরে পাড়ের মাটি আলগা থাকায় দিব্যেন্দু জলে পড়ে যান। ছেলেকে তলিয়ে যেতে দেখে জলে ঝাঁপ দেন দীপকবাবু। দীপকবাবু সাঁতার জানলেও দিব্যেন্দু তা জানত না।
কিন্তু সাঁতার জেনেও নিজেকে এবং ছেলেকে রক্ষা করতে পারেননি দীপকবাবু। কারণ, প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দিব্যেন্দু ভয় পেয়ে বাবাকে এমন ভাবে জাপটে ধরে যে দীপকবাবু সাঁতারে ছেলেকে নিয়ে পাড়ে উঠতে পারেননি। দু’জনকেই হাবুডুবু খেতে দেখে পরিবারের অন্য সদস্যরাও জলে ঝাঁপ দেন। কিন্তু ততক্ষণে দু’জনেই তলিয়ে গিয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় আসে আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ। খবর দেওয়া হয় উদ্ধারকারী দলকে। দলটি ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর আগেই স্থানীয়েরা দেহ দু’টি জল থেকে তুলে আনেন।
রবিবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, ঘরভর্তি আত্মীয়স্বজন। সকলেই শোকস্তব্ধ। পরিবারের সদস্য সন্দীপ পাল বলেন, ‘‘মাত্র এগারো দিন আগে পরিবারের এক সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। ফের এত বড় বিপর্যয়।’’ পরিবারের বাকিরা কেউই কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না। তাঁরা সকলেই দীপকবাবুর স্ত্রী ও বড় ছেলেকে সামলাতে ব্যস্ত ছিলেন। দেহ দু’টির ময়না-তদন্ত করানো হয়েছে আসানসোল জেলা হাসপাতালে।
বাসিন্দারা জানান, পারিবারিক যে কোনও অনুষ্ঠানে এই পুকুরটি ব্যবহার করেন। বছর দুয়েক আগে পুকুর সংস্কার হয়েছিল, কিন্তু পা়ড় বাঁধানো হয়নি। এলাকার কাউন্সিলর তথা আসানসোল পুরসভার মেয়র পারিষদ শ্যাম সোরেন বলেন, ‘‘আমি মেয়রকে আগেই পুকুরটির পাড় বাঁধিয়ে দেওয়ার জন্য মৌখিক আবেদন করেছি। সোমবারের বোর্ড বৈঠকে মেয়রকে লিখিত আবেদন জানাব।’’ রবিবার দুর্ঘটনার পরেই এলাকায় যান শ্যামবাবু। তিনি বাসিন্দাদের সতর্ক হয়ে পুকুর ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy