কপিল মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র
প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলরের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র ও কয়েক লক্ষ টাকা উদ্ধার করল সিবিআই। আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তির অভিযোগে বুধবার সিবিআইয়ের একটি দল পশ্চিম বর্ধমানের কুলটিতে কপিল মণ্ডল নামে ওই ব্যক্তির বাড়িতে যায়। অভিযান শেষে কপিলবাবুকে কুলটি থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়।
কপিলবাবু ইস্কোর রামনগর কোলিয়ারির নিরাপত্তা বিভাগের কর্মী। সিবিআই আধিকারিকেরা জানান, কোলিয়ারি সূত্রেই তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ মিলেছিল। ২০০৯ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে প্রায় ১.৩৮ কোটি টাকার সম্পত্তি জমানোর অভিযোগ দায়ের হয়েছে কপিলবাবু, তাঁর স্ত্রী ও ছেলের বিরুদ্ধে। তবে কে বা কারা তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিল, তা নির্দিষ্ট ভাবে জানাতে চাননি সিবিআই আধিকারিকেরা।
২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত তৎকালীন কুলটি পুরসভার ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন কপিলবাবু। নির্দল প্রার্থী হিসেবে জেতার পরে তৃণমূলে যোগ দেন তিনি। তবে তার পরে আর তাঁকে প্রার্থী করেনি দল। এ দিন কল্যাণেশ্বরী এলাকায় কপিলবাবুর একটি হোটেলেও যায় সিবিআইয়ের দলটি। রাত পর্যন্ত তাঁকে আটক করে রাখা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ সিবিআই অফিসারেরা কপিলবাবুর রামনগরের বাড়িতে পৌঁছন। বিকেল ৩টে পর্যন্ত অভিযান চলে। তার পরে ডিএসপি পদমর্যাদার এক অফিসার জানান, অভিযুক্তের বাড়ি থেকে একটি দেশি ৯ এমএম পিস্তল, ছ’রাউন্ড তাজা কার্তুজ, প্রায় দশ লক্ষ টাকা ও বেশ কিছু নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র মেলায় তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। কপিলবাবু অবশ্য দাবি করেন, ‘‘আমার বাড়িতে কোনও অভিযানের কথা জানা নেই। আগ্নেয়াস্ত্রের বিষয়েও কিছু জানি না।’’
শাসক দলের প্রাক্তন কাউন্সিলরের বাড়িতে সিবিআই অভিযানের পরে সরব হয়েছে বিরোধী দলগুলি। আসানসোলের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রী মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ের বক্তব্য, ‘‘এ আর নতুন কী! ওই ব্যক্তি নিজেই তৃণমূলের সদস্য বলে স্বীকার করেছেন। এর পরে ওঁদের নেতারা তাঁর সঙ্গে দলের সঙ্গে যুক্ত থাকার কথা অস্বীকার করবেন।’’ সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য তথা প্রাক্তন সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরীর অভিযোগ, ‘‘সিবিআই মন দিয়ে খুঁজলে তৃণমূলের এই রকম আরও অনেককে ধরতে পারবে, যাঁরা ২০১১ সালের পরে নানা বেআইনি পথে রোজগার করেছেন।’’ তৃণমূল যদিও কপিলবাবুর সঙ্গে এখন দলের কোনও যোগ নেই বলে দাবি করেছে। দলের কুলটি ব্লক সভাপতি মহেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘তাঁর সঙ্গে দলের যোগ অনেক দিন আগেই ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। তিনি কোনও পদেও নেই।’’
সংস্থার কর্মীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে রামনগর কোলিয়ারির জেনারেল ম্যানেজার কে এল শ্রীনিবাস রাওয়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমি এলাকায় নেই। তবে বিষয়টি শুনেছি। ফেরার পরে খোঁজ নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করব।’’ এডিসিপি (পশ্চিম) অনমিত্র দাস বলেন, ‘‘বিষয়টি এখন সিবিআই-এর হাতে আছে। তা এ নিয়ে এখনই কোনও মন্তব্য করা যাবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy